ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের অব্যাহত হামলা ও গণহত্যার বিরুদ্ধে ডাকা বিশ্বব্যাপী ধর্মঘটের সমর্থনে সোমবার বিকেলে পল্টন মোড়ে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল সম্পাদক ফয়জুল হাকিমের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সৌরভ রায়, সুমন মল্লিক ও বর্ষা বিশ্বাস।

বিক্ষোভ সমাবেশে ফয়জুল হাকিম বলেন, বিশ্বের দেশে দেশে বিবেকবান মানুষ বর্ণবাদী সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরায়েল কর্তৃক প্যালেস্টাইনে গণহত্যার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে। ধর্মের পরিচয়ে নয়, বিবেকবান মানুষ হিসেবে দেশে দেশে বিভিন্ন ধর্ম বর্ণ জাতির মানুষ এই গণহত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে রাস্তায় এসে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের মানুষও আজ ঢাকায় গাজাবাসীর ডাকে রাজপথে নেমেছে। 

তিনি বলেন, যারা মানবাধিকারের কথা বলে সেসব আন্তর্জাতিক সংস্থা, রাষ্ট্র আজকে কেন নীরব? নীরব সৌদি আরব, কুয়েত প্রভৃতি আরব দেশগুলো। এরা এই গণহত্যার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়নি, কেননা এরা সকলেই মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের দালাল। জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়েছে। 

ফয়জুল হাকিম বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলেও বাংলাদেশের মতো রাষ্ট্রে গণতন্ত্র ফিরে আসার একটা বড় শর্ত হচ্ছে বিশ্বব্যাপী সাম্রাজ্যবাদের নিয়ন্ত্রণ থেকে জনগণের মুক্তি। ফিলিস্তিনি জনগণের মুক্তি ও স্বাধীনতা ছাড়া বিশ্বের কোনো দেশেই প্রকৃত অর্থে জনগণের স্বাধীনতা বা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। সাম্রাজ্যবাদী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মদদপুষ্ট ইসরায়েলের ধ্বংস তাই আজ জরুরি হয়ে উঠেছে। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কার্যকর কূটনৈতিক উদ্যোগ নেওয়ার জন্য তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি দাবি জানান।
 
সৌরভ রায় বলেন, বাংলাদেশের জনগণ ফিলিস্তিনি জনগণের মুক্তি ও স্বাধীনতার পক্ষে আজ যে রাজপথে দাঁড়িয়েছে তা অভূতপূর্ব। সারা দুনিয়ার মানুষ জায়নবাদী ইসরায়েলের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছে। বিশ্বব্যাপী সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বব্যবস্থার বিরুদ্ধে এ এক নতুন লড়াইয়ের ইঙ্গিত।
 
সুমন মল্লিক ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী জনগণের বিক্ষোভকে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী সংগ্রাম হিসেবে জোরদার করার জন্য সচেতন উদ্যোগ নেওয়া আহ্বান জানান। 

বর্ষা বিশ্বাস বলেন, গাজার জনগণের ওপর সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরায়েলের এই গণহত্যায় বিশ্বের বিবেকবান মানুষ নীরব থাকতে পারে না। গত বছরের অক্টোবর হতে এ পর্যন্ত ইসরায়েল ৬০ হাজারের বশি নারী, শিশু ও নাগরিকদের বর্বরোচিতভাবে হত্যা করেছে। লাখ লাখ মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে। গাজা ও রাফা এলাকার বসতবাড়ির ওপর বোমা হামলা করে মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে। এই বর্বরোচিত হামলার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া এবং হামলার মদদদাতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে জোরদার আন্দোলন গড়ে তোলা আজকের দিনের কর্তব্য। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ইসর য় ল র ব র দ ধ গণহত য র ব র দ ধ জনগণ র

এছাড়াও পড়ুন:

এমন কিছু করবেন না যাতে গণতন্ত্র ব্যাহত হয়: মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “আজকে অনেক কথা হচ্ছে, রাজনৈতিক মতানুবাদ হচ্ছে। এটা হবেই, গণতন্ত্রে সেটা স্বাভাবিক। এমন কোনো কিছু করবেন না যাতে আবার গণতন্ত্র ব্যাহত হয়। রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে আমাদের এই আহ্বান থাকবে।” 

তিনি বলেন, “ছোট খাটো বিষয়গুলো নিয়ে এমন অবস্থা তৈরি করবেন না, যাতে আবার ফ্যাসিস্ট হাসিনা সুযোগ পায় দেশে ফিরে আসার। সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে আমরা অনুরোধ করব, আসুন যে সমস্যাগুলো আছে সেগুলো মিটিয়ে ফেলে আমরা একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যাই। নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমরা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত করি।” 

বুধবার (৩০ জুলাই) সাভারের আশুলিয়ার দারুল ইহসান মাদরাসা মাঠে ‘নারকীয় আশুলিয়া’ শীর্ষক এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। এই সমাবেশে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

আরো পড়ুন:

কিছু দল পিআর ছাড়া নির্বাচনে যাবে না বলে শপথ করেছে: ফখরুল

মানুষের প্রয়োজনে না এলে সেই সংস্কার কাজে আসবে না: ফখরুল

মির্জা ফখরুল বলেন, “একজন শহীদের পরিবার অভিযোগ করেছেন, তার স্বামীকে পুড়িয়ে মারার পরে তার কেউ খোঁজ নেয়নি। তাকে কেউ সহযোগিতা করে নাই। আমি ঢাকার ডিসিকে এখানে বসেই ফোন করেছিলাম, সরকার অঙ্গীকার করেছিলেন আহত এবং শহীদের পরিবারগুলোকে প্রাথমিকভাবে ১০ লাখ টাকা করে অনুদান দেবেন। যারা আহত হয়েছিলেন তাদের চিকিৎসার সমস্ত ব্যয়ভার বহন করবেন। আমি এখানে মাত্র দুইজনকে পেয়েছি যারা সেই টাকাটা পেয়েছেন।”

তিনি আরো বলেন, “এই সরকারকে আহ্বান জানাব, আপনাদের যে মেশিনারি আছে, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আছেন তারা তথ্য সংগ্রহ করে যেন শহীদ ও আহতদের সহায়তা করেন।”

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “একটা জাতীকে নিজের দেশকে রক্ষা করার জন্য সজাগ থাকতে হবে। দীর্ঘ ১৫ বছর ফ্যাসিস্ট সরকার দেশের মানুষের ওপর স্ট্রিম রোলার চালিয়েছে। বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে। অনেকে কারাগারে গেছেন। সাভার আশুলিয়ার অনেকের সঙ্গে দেখা হয়েছে কারাগারের মধ্যে।”

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য দেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হকসহ বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক সমাবেশে সভাপতিত্বে করেন। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন জেলার সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায়।

সমাবেশের শুরুতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সাভারে শহীদদের পরিবারের সদস্যরা বক্তব্য রাখেন। অনেকেই বক্তব্যে কান্নায় ভেঙে পড়েন। 

ঢাকা/সাব্বির/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যেভাবে সুষ্ঠু ভোটে বাধা হতে পারে
  • মিয়ানমারে ডিসেম্বরে নির্বাচনের ঘোষণা জান্তা সরকারের, জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার
  • বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী সরাসরি ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পক্ষে
  • ট্রাম্পের বিরুদ্ধে লুলার প্রতিবাদে অন্যরাও শামিল হোক
  • এমন কিছু করবেন না যাতে গণতন্ত্র ব্যাহত হয়: মির্জা ফখরুল
  • ফিলিস্তিনি জনগণকে গণহত্যা থেকে রক্ষায় পররাষ্ট্র উপদেষ্টার আহ্বান
  • ফিলিস্তিনি জনগণকে গণহত্যা থেকে রক্ষা করতে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার আহ্বান
  • গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৬০ হাজার ছাড়াল
  • গণহত্যার বিচারের পর পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দাবি রেজাউল করীমের
  • শেখ হাসিনা যে অপরাধ করেছে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীও তা করে নাই: আসিফ নজরুল