ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে স্থগিত হলো ‘স্বাধীনতা কনসার্ট’
Published: 8th, April 2025 GMT
ফিলিস্তিনের গাজা ও রাফায় নির্যাতিত জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও বগুড়ায় পূর্বনির্ধারিত ‘স্বাধীনতা কনসার্ট’ সাময়িক স্থগিত করেছে ‘সবার আগে বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন’। গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান আয়োজকরা।
জানা গেছে, মহান স্বাধীনতা দিবস (২৬ মার্চ) সার্বজনীনভাবে উদ্যাপনের জন্য বাংলাদেশি শিল্পীদের অংশগ্রহণে ‘সবার আগে বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন’ আয়োজিত ‘স্বাধীনতা কনসার্ট’ রাজধানী ঢাকার জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া এভিনিউয়ের পাশাপাশি একইদিনে চট্টগ্রাম, খুলনা ও বগুড়ায় আলাদা আলাদা ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু ‘সবার আগে বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন’র সভাপতি শহীদউদ্দীন চৌধুরী এ্যানি ও সাধারণ সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল রাতে এক বিবৃতিতে গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তারা বলেন, এমন ভয়ঙ্কর বর্বরতার নিন্দা ভাষায় প্রকাশ সম্ভব নয়। ইসরাইলের বর্বরতা সত্ত্বেও বিশ্ববাসীর নির্লিপ্ত আচরণ ততোধিক অমানবিক।
এরাই পরিপ্রেক্ষিতে ‘সবার আগে বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন’ গাজা ও রাফায় ইসরাইলের বর্বরোচিত গণহত্যার প্রতিবাদে আগামী শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাজধানী ঢাকাসহ চার বিভাগীয় শহরে পূর্বনির্ধারিত ‘স্বাধীনতা কনসার্ট’ একদিন পিছিয়ে পরদিন শনিবার (১২ এপ্রিল) সার্বজনীনভাবে উদ্যাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত রাতে পরিবর্তন করে ‘স্বাধীনতা কনসার্ট’ সাময়িক স্থগিত করেছে ‘সবার আগে বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন’। ইসরাইলের মানবতাবিরোধী আগ্রাসনের প্রতিবাদে দেশের আপামর জনগণকে সোচ্চার হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।
‘সবার আগে বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন’র বিবৃতিতে বলা হয়, ফিলিস্তিনের গাজা ও রাফায় দখলদার গণহত্যাকারী ইসরাইলি বাহিনীর নৃশংস হামলায় ইতোমধ্যেই হাজার হাজার নিরপরাধ মানুষ শাহাদাৎ বরণ করেছেন। শিশু, নারী ও বৃদ্ধদেরও নির্মমভাবে হত্যা করছে অবৈধ দখলদার ইসরাইলের সেনারা। গাজা উপত্যকা আজ মৃত্যু উপত্যকা। দখলদার ইসরাইল পৃথিবীর মানচিত্র থেকে গাজার চিহ্ন মুছে ফেলতে নারকীয় হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠেছে। পরিতাপের বিষয় এই, আন্তর্জাতিক বিশ্ব এখনও এখানে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে চলেছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কনস র ট স ব ধ নত কনস র ট
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরে মামলা মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ মির্জা ফখরুলের
গণঅভ্যুত্থানের মুখে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরে মামলা মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিকালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নে দলীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গণসংযোগের সময় দেওয়া বক্তব্যে এই আহ্বান রাখেন তিনি।
শেখ হাসিনার শাসন আমলে বিএনপি নেতাকর্মীদের নির্যাতনের শিকার হওয়ার কথা তুলে ধরেন মির্জা ফখরুল। গুম, খুন, ভিত্তিহীন মামলা, লুটপাট, টাকা পাচার, বাকস্বাধীনতা হরণ ও ভোট চুরিসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি।
আরো পড়ুন:
জুলাই গণহত্যা: শেখ হাসিনাসহ ৪০৮ জনের বিরুদ্ধে আরেক মামলা
হাসিনা-রেহানাসহ ২২ জনের গ্রেপ্তার-সংক্রান্ত প্রতিবেদন ১২ মে
শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমাদের নেতাকর্মীদের গুম করা হয়েছে। লাখ লাখ নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে, তাদের ঘরে থাকতে দেননি আপনি। আমরা তো কোথাও পালিয়ে যাইনি। আদালতে মিথ্যা মামলা আইনের মাধ্যমে ফেইস (মোকাবিলা) করেছি। উকিল ধরে জামিন নিয়েছি। আপনি (শেখ হাসিনা) পালিয়ে আছেন কেন? আপনিও মামলা লড়েন। আপনি দেশে এসে দাড়ান না দেখি।”
জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা অনেকে মনে করেন শেখ হাসিনা আবারো দেশে ফিরে আসবেন। তিনি তো ১৫ বছর দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তার বাবা শেখ মুজিবুর রহমান একজন বিখ্যাত মানুষ ছিলেন। তার তো দেশ থেকে পালানোর কথা ছিল না। তিনি পালালেন কেন? কারণ তিনি একজন ডাইনি ছিলেন। জনগণের ওপর এমন নির্যাতন করেছেন যে, তিনি পালাতে বাধ্য হয়েছেন। জনগণ যদি সেদিন তাকে পেত, তাহলে ছিঁড়ে খেত।”
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, “হাসিনা দেশে ফিরে রাজনীতি করলে আমাদের কিছু করতে হবে না, জনগণই তাকে দেখে নেবে।”
আওয়ামী লীগের শাসনামলের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “বিএনপির নেতাকর্মীরা যেন আওয়ামী লীগের মতো অন্যায় না করে; এতে মানুষ ভালোবাসবে না। দলের কোনো নেতাকর্মীরা অন্যায় করলে যেন জেলার নেতারা তাদের শক্ত হাতে দমন করেন; তারা যেন অন্যায়কারীদের পুলিশের হাতে তুলে দেন। তাই অপকর্ম বন্ধ করুন, না হলে আওয়ামী লীগের মতো অবস্থা হবে।”
ত্রোদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দৃষ্টি রেখে জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। মির্জা ফখরুলসহ দলটির শীর্ষ নেতারা সভা-সমাবেশ করছেন। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণের সুযোগ রাখা, না রাখা নিয়ে ব্যাপক মতপার্থক্য রয়েছে; সেই সঙ্গে আইনি ঝক্কিও সামনে আসছে।
গণহত্যার দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একাধিক মামলায় আসামি করা হয়েছে শেখ হাসিনাকে। এ ছাড়া কয়েক শত ফৌজদারি মামলায় তিনি আসামি। অনেক মামলায় তাকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। তবে ভারতের আশ্রয়ে থাকা শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর কোনো নিশ্চয়তা এখনো তৈরি হয়নি।
গণঅভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ছোট বোন রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। সেদেশে উচ্চনিরাপত্তা শৃঙ্খলে বসবাস করছেন বলে আন্তর্জাতিক সাংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়ে থাকে। সেখান থেকে দেশে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে অনলাইনে তার কথোপকথনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যা নিয়ে অস্বস্তির কথা ভারতকে জানিয়ে রেখে অন্তর্বর্তী সরকার।
ঢাকা/মঈনুদ্দীন/মাসুদ