বগুড়ায় ছিনতাইকারীদের হামলায় ২ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টার দিকে শহরের ধাওয়াপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

আহত দুই পুলিশ সদস্য হলেন- শহরের নারুলী পুলিশ ফাঁড়ির এটিএসআই ফিরোজ ও কনস্টেবল মাহবুব। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- নারুলী দক্ষিণপাড়ার জুয়েল মিয়া (২৫), ধাওয়াপাড়ার নুর আলম সুইট (৩৫) ও উত্তর ধাওয়াপাড়ার রাব্বি হোসেন (২০)।

নারুলি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (ইন্সপেক্টর) নাজমুল হক বলেন, ‘‘মঙ্গলবার দুপুরে সারিয়াকান্দি থেকে বালুভর্তি একটি ট্রাক বগুড়ার দিকে যাচ্ছিল। পথে ফুলবাড়ি ফাঁড়ি এলাকায় দ্বিতীয় বাইপাস সড়কে একদল দুর্বৃত্ত ট্রাকটি থামিয়ে চালককে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। পরে চালককে দিয়ে ট্রাকটি নারুলিতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে আবার ধাওয়াপাড়ায় একটি মাঠে এনে বালু আনলোড করে ট্রাকটি খালি অবস্থায় একটি স’মিলের পাশে রেখে দেয় তারা। এরপর চালককে সুইট নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে নিয়ে আটকে রেখে মালিকের কাছে ফোন দিয়ে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। খবর পেয়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ অভিযান চালিয়ে চালক ও ট্রাকটি উদ্ধার করে। এসময় সুইট পালিয়ে গেলেও প্রাচীরের ওপাশ থেকে ইটপাটকেল ছুড়ে পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয়। এসময় এটিএসআই ফিরোজ ও কনস্টেবল মাহবুব আহত হন। পরবর্তীতে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।’’

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে নিখোঁজ স্কুলছাত্রের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার

গোপালগঞ্জে ভুয়া পুলিশ সদস্য আটক

তিনি আরো বলেন, ‘‘ঘটনার পর থেকে জড়িতদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছিল। রাতভর অভিযান শেষে ভোর সাড়ে ৫টায় সোনাতলার একটি চর থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।’’

ঢাকা/এনাম/রাজীব

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আহত প ল শ সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীতে যুবদল–ছাত্রদলের চাঁদাবাজির মামলার এজাহার ফাঁস, এসআইকে বদলি

রাজশাহীতে যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা রুজুর আগে এজাহার ফাঁসের ঘটনায় এবার এক উপপরিদর্শককে (এসআই) বদলি করা হয়েছে। ওই পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে ছাত্রদলের এক নেতার ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে রাজশাহীতে তুমুল আলোচনা চলছে।

নগরের বোয়ালিয়া থানা থেকে বদলি হওয়া ওই পুলিশ কর্মকর্তার নাম এস এম রকিবুল ইসলাম। চাঁদাবাজির মামলার এজাহার থানায় রেকর্ড হওয়ার আগেই তিনি সেটি হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে দেন ছাত্রদল নেতা এমদাদুল হক ওরফে লিমনের কাছে। এমদাদুল হক রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজ ছাত্রদলের সদস্যসচিব। ২৩ জুলাই রাতে আবাসন ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমান তাঁর বিরুদ্ধে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে বোয়ালিয়া থানায় মামলা করেন। মামলায় এমদাদুল হকসহ ৩৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।

এজাহার ফাঁসের ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর গতকাল সোমবার এসআই রকিবুলকে থানার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে রাজশাহী পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়।

এসআই রকিবুলের সঙ্গে সেই রাতে হওয়া কথোপকথনের রেকর্ড ফাঁস করে দেন এমদাদুল হক নিজেই। হোয়াটসঅ্যাপের ওই কথোপকথন ভিডিও করে রেখেছিলেন তিনি। ভিডিওতে দেখা যায়, এমদাদুল হক সালাম দিয়ে কথা শুরু করেন। এসআই রকিবুল তাঁর উত্তর না দিয়ে বলেন, ‘মামলা রেকর্ড হচ্ছে, হচ্ছে...রেকর্ডটা করতে দে।’ এমদাদুল জানতে চান, ‘আচ্ছা, ওর (মোস্তাফিজুর রহমানের) মামলাডা হলো, কে কে ভাই বলেন তো একটু। বলা যাবে?’ এসআই বলেন, ‘তুই ফোন দিছিস তোর পরে আমি গেছি। যায়ে এজাহার নিসি, তোরে দিসি। আমি জানি? কমিশনার অফিস থেকে এজাহার লিখিসে।’ এমদাদুল প্রশ্ন করেন, ‘ওখানেই এজাহার লিখেছে? কমিশনার অফিসে?’ এসআই বলেন, ‘হ্যাঁ, ওখান থাইকা অফিসে থেকে এজাহার পাঠায়ে দিসে। অপারেটর তাই কলো যে স্যার, পেনড্রাইভে করে এজাহার পাঠায় দিসে ফোর্স দিয়ে।’

ভিডিওতে আরও দেখা যায়, এমদাদুল বলেন, ‘ও, কমিশনার নিজেই লিখেছে?’ এসআই বলেন, ‘তা জানি না। সে (পুলিশ কমিশনার) তো আর নিজে লেখে না। ওই অফিস (আরএমপি সদর দপ্তর) থেকে পাঠায়ছে। আমি কাজ করতেছি, ফ্রি হয়ে ফোন দিচ্ছি। রাখো।’

পরে মামলাটি প্রত্যাহারের দাবি ও বাদীকে গ্রেপ্তারের দাবিতে রাজশাহীতে মানববন্ধন করেন বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীরা। সেখানে মাইকে বাজিয়ে শোনানো হয় এসআই রকিবুল ও এমদাদুলের এই কল রেকর্ড।

এরপর বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে পুলিশ। বিষয়টি বোয়ালিয়া জোনের উপকমিশনারকে তদন্ত করতে বলা হয়। প্রাথমিক তদন্ত শেষে এসআই রকিবুল ইসলামকে থানার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে গতকাল পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম শাখার অতিরিক্ত উপকমিশনার গাজিউর রহমান বলেন, ‘রকিবুল ইসলামের গত তিন মাসের চাকরির পারফরম্যান্স খারাপ হওয়ায় তাকে থানা থেকে বদলি করা হয়েছে। এর সঙ্গে ওই কল রেকর্ডের কোনো সম্পর্ক নেই। আর কল রেকর্ডে সে যা বলেছে, তার ব্যাপারে অবশ্য ডিপার্টমেন্ট তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে।’

পুলিশ কমিশনার কার্যালয় থেকে কোনো মামলার এজাহার পাঠানোর প্রসঙ্গে গাজিউর রহমান বলেন, ‘এটা কখনো হয় না। মামলার বাদী থানায় এসে লিখিত এজাহার ওসির কাছে জমা দেন অথবা লিখতে না পারলে অন্য কাউকে দিয়ে লিখে তা বাদীকে পড়ে শোনানো হয়। তিনি তাতে সায় দিলে টিপসই নেওয়া হয়।’ কমিশনার কার্যালয় থেকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মামলা পাঠানো হতে পারে কি না, এমন প্রশ্নে গাজিউর রহমান বলেন, ‘এটা কখনোই সম্ভব নয়। রাতে কমিশনার অফিসে কেউ থাকে না। তা ছাড়া আমি রেকর্ডটি শুনেছি। বলেছে, কমিশনার অফিস থেকে। এখন কমিশনার তো আরও আছে। সেটা ঠিক নয়।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পেশাদারির সঙ্গে দায়িত্ব পালনে এসআইদের প্রতি ডিএমপি কমিশনারের আহ্বান
  • রাজশাহীতে যুবদল–ছাত্রদলের চাঁদাবাজির মামলার এজাহার ফাঁস, এসআইকে বদলি