কিহাক সাং পেলেন রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি সম্মান সূচক নাগরিকত্ব
Published: 9th, April 2025 GMT
বাংলাদেশের শিল্প খাতের বিকাশ, বিপুল জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান এবং বৈদেশিক আয়ে অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপ কোরিয়ান রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (কেইপিজেডে) পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ইয়াংওয়ান করপোরেশনের চেয়ারম্যান কিহাক সাংকে দেওয়া হয়েছে সম্মান সূচক নাগরিকত্ব। চার দিনব্যাপী বিনিয়োগ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী দিনে বুধবার তাঁর হাতে এই স্বীকৃতি তুলে দেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এর মাধ্যমে একজন বিদেশি বিনিয়োগকারী হিসেবে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় বিশেষ ভূমিকা রাখার জন্য তিনি পেলেন এই দেশের নাগরিক না হয়েও ‘সম্মানিত নাগরিক’ মর্যাদা।
বুধবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলন-২০২৫ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে সিহাক সাংয়ের হাতে নাগরিকত্বের প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট তুলে দেওয়া হয়। বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেয়ে কিহাক সাং তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘সম্মানসূচক নাগরিকত্ব পেয়ে আমি সত্যিই গর্বিত।’
কিহাক সাং বাংলাদেশে সর্বোচ্চ বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অন্যতম। ১৯৮০ সাল থেকে তিনি বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। কিহাক সাংসহ মোট পাঁচজন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।
উদ্ভাবনে-ফ্যাব্রিক লাগবে লিমিটেড, বিদেশী বিনিয়োগে-বিকাশ, স্থানীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যালস এবং ওয়ালটনকে এক্সেলেন্স ইন ইনভেস্টমেন্ট অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা এসব প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের হাতে অ্যাওয়ার্ড তুলে দেন। যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশ বিষয়ক বাণিজ্য দূত ব্যারোনেস রোজি উইন্টারটন, ইন্ডিটেক্সের সিইও অস্কার গার্সিয়া মাসেইরাস এবং অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বিনিয়োগ বাংলাদেশে বিনিয়োগ প্রসঙ্গে তাদের মতামত তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশ নিয়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন একটি পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড.
কিহাক সাং বাংলাদেশের শিল্পের সঙ্গে যে তার যাত্রা শুরু করেছিলেন, এখন তা এক শিল্প সামাজ্যে রূপ নিয়েছে। শুধু তাই নয়, আশির দশকে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প উদ্যোক্তাদের মধ্যে তিনি ছিলেন প্রধম বিদেশি বিনিয়োগকারী। ইয়াংওয়ান ১৯৮০ সালের মে মাসে টেক্সটাইল ও অ্যাপারেল রপ্তানি খাতে প্রথম বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এবং এই শিল্পে নারী কর্মসংস্থানের পথিকৃৎ হিসেবে পরিচিত।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমল ৭৫ পয়সা
রাজশাহীতে হিমাগারে আলু সংরক্ষণে নতুন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ সোমবার আলুচাষি, ব্যবসায়ী ও হিমাগারমালিকদের উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হিমাগারে প্রতি কেজি আলু রাখার জন্য ভাড়া দিতে হবে ৫ টাকা ৫০ পয়সা। এর সঙ্গে যুক্ত হবে শ্রমিকের খরচ ৫০ পয়সা। সেই হিসাবে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমেছে ৭৫ পয়সা।
এর আগে গত মার্চে সরকার প্রতি কেজি আলু রাখার ভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এর পর থেকে এ নিয়ে রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা বাড়তি ভাড়ায় আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। এ নিয়ে কয়েক দফা তাঁরা রাজপথে আন্দোলনও করেছেন। অন্যদিকে হিমাগারমালিকদের দাবি ছিল, প্রতি কেজি আলুর ভাড়া ৮ টাকা করা হোক।
রাজশাহী কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন এবং রাজশাহী জেলা আলুচাষি ও আলু ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজশাহীতে হিমাগার থেকে বাড়তি ভাড়া না দিলে আলু ছাড়া হবে না। এর প্রতিবাদে ঈদের পর নতুন করে আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা আন্দোলন করে আসছেন। তাঁদের দাবি, আলু রাখার খরচ আগের বছরের মতো চার টাকা করতে হবে। এ নিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তাঁরা। হিমাগার মালিকপক্ষ এ নিয়ে আলোচনায় বসার তাগিদ দিয়ে আসছিল।
এরই মধ্যে আলুচাষিনেতারা ১৪ জুন সেনাবাহিনীর কাছে এ নিয়ে একটি অভিযোগ দেন। পরে বিষয়টি আমলে নিয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আজ দুপুরে সভা ডাকা হয়। সভায় সব পক্ষের সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয় যে এ বছর সরকার নির্ধারিত প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সার বদলে ৫ টাকা ৫০ পয়সা ও শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা রাখা হবে। আর পেইড বুকিংয়ের ক্ষেত্রে শুধু শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে আলু রাখা চাষি ও ব্যবসায়ীদের। পরে বিকেলে ক্যান্টনমেন্টে হওয়া এই সিদ্ধান্ত প্রশাসনিকভাবে পাস করার জন্য রাজশাহী জেলা প্রশাসকের দপ্তরে সভা হয়।
সভায় আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি, হিমাগার মালিক সমিতি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি, পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামীকাল মঙ্গলবার রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ থেকে নতুন ভাড়ার বিজ্ঞপ্তি সব হিমাগারে প্রচার করা হবে।
এ ব্যাপারে সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, এবার আলুর দাম কম। আবার এ নিয়ে দুই পক্ষের সংঘাতের আশঙ্কা ছিল। এ নিয়ে একটি অভিযোগ পান তাঁরা। পরে দুই পক্ষকে নিয়ে সভা হয়। সভায় সবার সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্ত বিকেলে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আরেকটি সভার মাধ্যমে পাস হয়েছে।
রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মিঠু আহমেদ বলেন, শুরু থেকেই তাঁরা বাড়তি ভাড়ার প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। কয়েক দিন ধরে তাঁরা হিমাগার থেকে আলু নিতে পারছিলেন না। হিমাগারগুলোয় বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছিল। এ নিয়ে আন্দোলনের পাশাপাশি সেনাবাহিনীকেও অবহিত করেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত একটি ভালো সিদ্ধান্ত হয়েছে।
রহমান সিডস স্টোরেজের ব্যবস্থাপক আবদুল হালিম বলেন, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি কেজি আলু রাখতে খরচ পড়বে ৫ টাকা ৫০ পয়সা আর শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা। এ ছাড়া যাঁরা আগে থেকেই টাকা দিয়ে অগ্রিম বুকিং দিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে আলুর কেজিপ্রতি শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে।
রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, নতুন সিদ্ধান্ত সব হিমাগারমালিকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানানো হবে।
আরও পড়ুনরাজশাহীতে হিমাগারে ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ-সমাবেশ১৫ জুন ২০২৫