জীবনে বহু কিছু করার পর ‘ধৈর্য-সহ্যে’ কপাল খুলছে গোলাম রসুলের
Published: 11th, April 2025 GMT
সবে সন্ধ্যা নেমেছে শহরের বুকে। খুলনা নগরের সেন্ট যোসেফ উচ্চবিদ্যালয়ের সামনের ফুটপাতে ছোট একটা দোকানের সামনে বেশ ভিড়। অর্ডার দিয়ে কেউ টুলে বসে আছেন, কেউ আবার প্রিয়জনকে সঙ্গে নিয়ে দাঁড়িয়ে গল্প করছেন। বিক্রেতা দুজনের চার হাত যেন চলছে সমানতালে। একজন ছোট ছোট ফুচকা বানাচ্ছেন, তো আরেকজন ভেলপুরির প্লেট সাজাচ্ছেন। আবার কখনো একজন পেঁয়াজ–শসা কুচি করে নিচ্ছেন আর আরেকজন বিল রাখা বা টিস্যু এগিয়ে দেওয়ায় ব্যস্ত।
নগরের আহসান আহমেদ রোডের সেন্ট যোসেফ উচ্চবিদ্যালয়ের সামনের একটি ছোট ফুচকা ও ভেলপুরির ভ্রাম্যমাণ দোকানের চিত্র এটি। দোকানের নামটাও বেশ অন্য রকম। ‘ধৈর্য-সহ্য ছোট ফুচকা ও ভেলপুরি স্টোর’। দোকানটি চালান গোলাম রসুল নামের একজন। বিকেল ৪টা থেকে রাত ৯টা-১০টা পর্যন্ত চলে এই ভ্রাম্যমাণ দোকান। এই দোকানের ছোট ফুচকা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
গোলাম রসুলের বাড়ি বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার কুলিয়া ইউনিয়নের পুরাতন ঘোষগাতী গ্রামে। সাত ভাই–বোনের সংসারে রসুলের বড় ভাই ভাজাপোড়া খাবারের ব্যবসা করতেন। বুঝতে শেখার পর থেকেই তাই এতেই হাতেখড়ি হয় রসুলের। তবে তাতে ঠিক পোষাচ্ছিল না। তাই বছর ৩০ আগে কিছু করার আশায় খুলনা শহরে আসেন গোলাম রসুল। তবে এই শহরে পুরোপুরি থিতু হতে পারেননি। নানা টানাপোড়েনে কখনো খুলনা, কখনো মোল্লাহাট, আবার কখনো ঢাকায় কেটেছে তাঁর সময়। ৪৮ বছরের এই জীবনে নানা রকম কাজ করেছেন। ব্যবসাও করেছেন অনেক কিছুর। তবে সেসব ব্যবসায় কেবল লোকসানই হয়েছে তাঁর। অবশেষে ‘ছোট ফুচকায়’ তাঁর কপাল খুলেছে।
কাজের ব্যস্ততার মধ্যেই কথা হয় গোলাম রসুলের সঙ্গে। রসুল বলেন, ‘আগে রিকশা চালাইছি। নানা রকম ব্যবসাও করছি। গ্রাম থেকে কিনে মাওয়া ফেরিঘাট আর ঢাকায় ডাব বেচছি। ওই ব্যবসায় অনেক মার খাইছি। মানুষ টাকা দেয় নাই। এখনো ৬০-৭০ হাজার টাকা পাব। ডাব ব্যবসায় মার খেয়ে দুই বছর আগে আবারও খুলনা শহরে আসি কিছু করা যায় কী না সেই জন্যি।’ খুলনা এসে আবারও রিকশার প্যাডেল ঘোরাতে থাকেন রসুল একই সঙ্গে মাথায় ঘুরতে থাকে চিন্তা। এরপর শীতের পিঠা বিক্রি শুরু করেন। শীত শেষ হতে আবারও অনিশ্চয়তা। এখন কী হবে!
গোলাম রসুল বলেন, ‘গরম চলে আসল, কী করব বুঝে পাচ্ছিলাম না। পরে খুলনার ৭ নম্বর ঘাট থেকে কিনে ভেলপুরি বেচছি। কিন্তু এতে হচ্ছিল না। এরপর চিন্তা করলাম আনকমন কিছু করা যায় কি না। গত বছরের কোরবানির ঈদের পর থেকে শুরু করি ছোট ফুচকা বিক্রি।’
দোকানটি চালান গোলাম রসুল নামের একজন। বিকেল ৪টা থেকে রাত ৯টা-১০টা পর্যন্ত চলে এই ভ্রাম্যমাণ দোকান.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ ল ম রস ল রস ল র ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
রাজনীতিতে না জাড়ানোর কারণ জানালেন প্রীতি জিনতা
বলিউড অভিনেত্রী প্রীতি জিনতা এখন অভিনয়ে অনিয়মিত। অভিনয়ে তাকে দেখা না গেলেও নিজের ক্রিকেট দলের হয়ে মাঠে তাকে প্রায়ই দেয়া যায়। মাঝে গুঞ্জন উঠেছিলে রাজনীতিতে যোগ দিচ্ছেন তিন। অবশ্য এবিষয়ে টুঁশব্দও করেননি এই অভিনেত্রী।
এদিকে মাস তিনেক আগে কংগ্রেসের পক্ষ অভিযোগ তোলা হয়েছিল, প্রীতি জিনতার ১৮ কোটি টাকার ঋণ নাকি মকুফ করে দিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। শুধু তাই নয়, প্রীতি নাকি তার সোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট বিজেপির হাতে সঁপে দিয়েছেন- এমন অভিযোগও ওঠে। এরপর বলিউড নায়িকার রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার জল্পনা শুরু হয়।
সম্প্রতি এক্স হ্যান্ডলে প্রীতি জিনতাকে একজন জিজ্ঞেস করেন, ‘আপনি কি ভবিষ্যতে বিজেপিতে যোগ দেবেন? আপনার গত কয়েক মাসের টুইট দেখে তো তেমনটাই মনে হচ্ছে। জবাবে অভিনেত্রী বলেন, ‘সোশাল মিডিয়ায় ব্যবহারকারীদের এটাই একটা সমস্যা। সবাই এত বিচার করতে বসে যান সবকিছু নিয়ে। আমি যেমনটা আগে বলেছি, মন্দিরে, মহাকুম্ভে যাওয়া কিংবা নিজের পরিচয় নিয়ে আমি গর্বিত। তার মানে এই নয় যে এসমস্ত কারণে আমি বিজেপিতে যোগ দেব।’
প্রীতি বলেন, ‘ভারতের বাইরে থাকার ফলে আমি দেশের প্রকৃত মূল্য উপলব্ধি করতে পেরেছি এবং আর পাঁচজন ভারতীয়র মতোই গর্ববোধ করি আমার দেশকে নিয়ে।’
রাজনীতিতে না আসার কারণ গত ফেব্রুয়ারি মাসেও জানিয়েছিলেন প্রীতি জিনতা। সেসময় তিনি বলেন, ‘রাজনীতি আমার দ্বারা হবে না। বিগত কয়েক বছরে একাধিক রাজনৈতিক দল আমাকে টিকিট দিতে চেয়েছে। এমনকি রাজ্যসভার আসনের প্রস্তাবও এসেছিল। তবে আমি বিনম্রভাবে প্রত্যাখ্যান করেছি। কারণ, আমার ইচ্ছে নেই। আর আমাকে ‘সৈনিক’ বললেও অতিরঞ্জিত হবে না। কারণ, আমি একজন আর্মি পরিবারের সন্তান। আমার বাবা সৈনিক এবং আমার দাদাও। আর্মি পরিবারের সন্তান হওয়ায় আমাদের মানসিকতা খানিক আলাদা।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা নিজেদের উত্তর ভারতীয়, দক্ষিণ ভারতীয় কিংবা হিমাচলী বা বাঙালি বলে ভাবি না, আমাদের পরিচয় শুধুমাত্র ভারতীয়। আর হ্যাঁ, দেশভক্তি আমাদের রক্তে।’ সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন।