দেশের বড় শহরগুলো দিন দিন সম্প্রসারিত হচ্ছে। জেলা–উপজেলা বা মফস্সল শহরগুলোতেও দ্রুত নগরায়ণ ঘটছে। ফলে সিটি করপোরেশান ও পৌরসভার সংখ্যাও বেড়েছে। কিন্তু সেই অর্থে টেকসই বা কার্যকর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে ওঠেনি। আইন ও নিয়ম থাকলেও অনেক কিছুই মানা হয় না। আগুনে পুড়িয়ে বর্জ্য ধ্বংসের প্রবণতাই এখানে কাজ করছে। ঢাকা শহরে তো ময়লার ভাগাড়ে ও রাস্তাঘাটে আগুন ধরিয়ে দেওয়া নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এভাবে বর্জ্য পোড়ানো বায়ুদূষণের মাত্রাকে চরমভাবে বাড়িয়ে তুলছে, যা খুবই উদ্বেগজনক।
সম্প্রতি প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক আমিনবাজারে গিয়ে সরেজমিনে দেখতে পান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ময়লার ভাগাড়ের অন্তত ২০টি জায়গায় আগুন জ্বলছে। ধোঁয়া উড়ে যাচ্ছে আকাশে। আমিনবাজারের ভাগাড়ের মতো মাতুয়াইলের ভাগাড়েও একই চিত্র দেখা গেছে। এই দুই ভাগাড় ছাড়াও ঢাকার কয়েকটি জায়গা, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কসহ বিভিন্ন সড়কের অনেক স্থানে ময়লা পোড়াতে দেখা গেছে। ভাগাড় ও সড়কে এভাবে ময়লা পোড়ানো নিত্যদিনের চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বর্জ্যে কারা কেন আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে? আমিনবাজারের ভাগাড়ে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক আনসার সদস্যের বক্তব্য, ‘ময়লার দায়িত্বে যারা আছে, তারাই আগুন ধরাইয়া দেয়। একেক দিন একেক দিকে আগুন লাগায়।’ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং ভাগাড়ে কাজ করা কর্মীরা বলছেন, ময়লা পোড়ানো হয় পরিমাণ কমাতে। প্লাস্টিক–জাতীয় আবর্জনা পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ফলে স্তূপ ছোট হয়। অন্যদিকে শহরের ভেতরের আর্বজনা সংগ্রহ করে দূরে নিয়ে ফেলার ঝামেলা এড়াতে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা তা পুড়িয়ে দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। অথচ বিধিমালা অনুযায়ী রাস্তা, সড়ক, মহাসড়কের পাশে কোনো অবস্থায় বর্জ্য পোড়ানোর সুযোগ নেই। এটি ভঙ্গ করলে দুই বছরের কারাদণ্ড বা দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে।
ময়লা বা বর্জ্য পোড়ার কারণে ঢাকার দূষিত বায়ু আরও দূষিত হচ্ছে। ২০২৪ সালের নভেম্বরে প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বায়ুদূষণে উন্মুক্ত স্থানে বর্জ্য পোড়ানোর অবদান ১১ শতাংশ। অথচ বছরের পর বছর ধরে এভাবে ময়লা পোড়ানো হলেও ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের তেমন কোনো উদ্যোগ নেই। গত শনিবার মাতুয়াইলের ভাগাড় পরিদর্শনে গিয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বর্জ্য না পোড়ানোর নির্দেশনা দেন। দুঃখজনক হচ্ছে, নির্দেশনার পরও পরিস্থিতি আগের মতোই রয়েছে।
আমরা আশা করব, দুই সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখবে। পরিবেশ অধিদপ্তর ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিয়ে সমন্বিতভাবে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক। ঢাকার বায়ুদূষণ কমাতে এভাবে ময়লা পোড়ানো বন্ধ করতেই হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বর জ য প ড় করপ র শ
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় ৩ পুলিশ নিহত
যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে বন্দুক হামলায় তিন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরো দুই পুলিশ।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় দুপুর ২টার কিছু পর এক পারিবারিক বিরোধের তদন্তে গিয়ে হামলার মুখে পড়ে পুলিশ। খবর বিবিসির।
আরো পড়ুন:
শেরপুরে পুলিশের উপর হামলা: থানায় মামলা, গ্রেপ্তার ৪
ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদ ও থানায় হামলা, ভাঙচুর-আগুন
পেনসিলভানিয়া স্টেট পুলিশের কমিশনার কর্নেল ক্রিস্টোফার প্যারিস জানান, অভিযুক্ত বন্দুকধারী পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছে।
গুলির ঘটনার পর ইয়র্ক কাউন্টির নর্থ কোডোরাস টাউনশিপের স্প্রিং গ্রোভ এলাকার একটি স্কুল জেলা সাময়িকভাবে ‘শেল্টার ইন প্লেস’ ঘোষণা করে। তবে পরে জানানো হয়, স্কুল কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জনসাধারণের জন্য বর্তমানে কোনো সক্রিয় হুমকি নেই। এ ঘটনা ঘটে ফিলাডেলফিয়া থেকে প্রায় ১০০ মাইল (১৬০ কিমি) পূর্বে অবস্থিত ইয়র্ক কাউন্টির এক গ্রামীণ এলাকায়।
তারা বলছে, আগের দিন শুরু হওয়া একটি তদন্তের অংশ হিসেবে কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছিলেন। তবে তদন্ত চলমান থাকায় বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করা হয়নি।
পেনসিলভানিয়ার গভর্নর জোশ শাপিরো বিকেলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি বলেন, “আমরা তিনজন মহামূল্যবান প্রাণ হারালাম, যারা এই দেশকে সেবা দিয়েছেন। এই ধরনের সহিংসতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সমাজ হিসেবে আমাদের আরো ভালো করতে হবে।”
নিহত তিন কর্মকর্তার সম্মানে গভর্নর শাপিরো রাজ্যের সব সরকারি ভবন ও স্থাপনায় পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দেন।
ঢাকা/ইভা