Prothomalo:
2025-08-01@21:59:50 GMT

বায়ুদূষণ কমাতে ব্যবস্থা নিন

Published: 12th, April 2025 GMT

দেশের বড় শহরগুলো দিন দিন সম্প্রসারিত হচ্ছে। জেলা–উপজেলা বা মফস্‌সল শহরগুলোতেও দ্রুত নগরায়ণ ঘটছে। ফলে সিটি করপোরেশান ও পৌরসভার সংখ্যাও বেড়েছে। কিন্তু সেই অর্থে টেকসই বা কার্যকর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে ওঠেনি। আইন ও নিয়ম থাকলেও অনেক কিছুই মানা হয় না। আগুনে পুড়িয়ে বর্জ্য ধ্বংসের প্রবণতাই এখানে কাজ করছে। ঢাকা শহরে তো ময়লার ভাগাড়ে ও রাস্তাঘাটে আগুন ধরিয়ে দেওয়া নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এভাবে বর্জ্য পোড়ানো বায়ুদূষণের মাত্রাকে চরমভাবে বাড়িয়ে তুলছে, যা খুবই উদ্বেগজনক।

সম্প্রতি প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক আমিনবাজারে গিয়ে সরেজমিনে দেখতে পান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ময়লার ভাগাড়ের অন্তত ২০টি জায়গায় আগুন জ্বলছে। ধোঁয়া উড়ে যাচ্ছে আকাশে। আমিনবাজারের ভাগাড়ের মতো মাতুয়াইলের ভাগাড়েও একই চিত্র দেখা গেছে। এই দুই ভাগাড় ছাড়াও ঢাকার কয়েকটি জায়গা, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কসহ বিভিন্ন সড়কের অনেক স্থানে ময়লা পোড়াতে দেখা গেছে। ভাগাড় ও সড়কে এভাবে ময়লা পোড়ানো নিত্যদিনের চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বর্জ্যে কারা কেন আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে? আমিনবাজারের ভাগাড়ে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক আনসার সদস্যের বক্তব্য, ‘ময়লার দায়িত্বে যারা আছে, তারাই আগুন ধরাইয়া দেয়। একেক দিন একেক দিকে আগুন লাগায়।’ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং ভাগাড়ে কাজ করা কর্মীরা বলছেন, ময়লা পোড়ানো হয় পরিমাণ কমাতে। প্লাস্টিক–জাতীয় আবর্জনা পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ফলে স্তূপ ছোট হয়। অন্যদিকে শহরের ভেতরের আর্বজনা সংগ্রহ করে দূরে নিয়ে ফেলার ঝামেলা এড়াতে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা তা পুড়িয়ে দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। অথচ বিধিমালা অনুযায়ী রাস্তা, সড়ক, মহাসড়কের পাশে কোনো অবস্থায় বর্জ্য পোড়ানোর সুযোগ নেই। এটি ভঙ্গ করলে দুই বছরের কারাদণ্ড বা দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে।

ময়লা বা বর্জ্য পোড়ার কারণে ঢাকার দূষিত বায়ু আরও দূষিত হচ্ছে। ২০২৪ সালের নভেম্বরে প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বায়ুদূষণে উন্মুক্ত স্থানে বর্জ্য পোড়ানোর অবদান ১১ শতাংশ। অথচ বছরের পর বছর ধরে এভাবে ময়লা পোড়ানো হলেও ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের তেমন কোনো উদ্যোগ নেই। গত শনিবার মাতুয়াইলের ভাগাড় পরিদর্শনে গিয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বর্জ্য না পোড়ানোর নির্দেশনা দেন। দুঃখজনক হচ্ছে, নির্দেশনার পরও পরিস্থিতি আগের মতোই রয়েছে।

আমরা আশা করব, দুই সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখবে। পরিবেশ অধিদপ্তর ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিয়ে সমন্বিতভাবে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক। ঢাকার বায়ুদূষণ কমাতে এভাবে ময়লা পোড়ানো বন্ধ করতেই হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বর জ য প ড় করপ র শ

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস

স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’

সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

অনাহারে মৃত্যু ১৫৪

গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।

গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।

বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।

গাজায় স্টিভ উইটকফ

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ