এবারের আনন্দ শোভাযাত্রার কোনো রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি নেই: সংস্কৃতি উপদেষ্টা
Published: 14th, April 2025 GMT
এবারের বাংলা নববর্ষকে বরণের শোভাযাত্রা রাজনৈতিক নয় বলে জানিয়েছেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
তিনি বলেন, “ফ্যাসিস্ট কোনো রাজনীতির অংশ নয়, ফ্যাসিস্ট সবচেয়ে বড় অশুভশক্তি। তাই আমরা শুধু ফ্যাসিস্টের মুখাবয়ব ব্যবহার করেছি। কিন্তু একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক গ্রুপ এটিকে তাদের প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করেছে।”
সোমবার (১৪ এপ্রিল) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বর্ষবরণের আনন্দ শোভাযাত্রায় অংশ নিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, “পহেলা বৈশাখ শুধু বাঙালিরই নয়, বাংলাদেশে বাস করা অন্যান্য জাতিগোষ্ঠী চাকমা, মারমা, গারোসহ সবার উৎসব। এবার থেকে আমরা এ উৎসবকে জাতীয়ভাবে পালন করা শুরু করলাম। পহেলা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐক্য ও মেলবন্ধনের বড় একটি ধাপ।”
তিনি বলেন, “দেশের সব জনগোষ্ঠী, সব ঐতিহ্য- সেই আকবর আমলের ঐতিহ্য, সুলতানি আমলের ঐতিহ্য সব কিছুর মিশ্রণ এখানে দেখবেন। তবে এখানে টিপিক্যাল রাজনীতির কিছু নেই।”
এবারের শোভাযাত্রা নাম পরিবর্তন নিয়ে চারুকলার একদল শিক্ষার্থীর প্রশ্নের বিষয়ে সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, “চাপিয়ে দেওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। আগে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। নাম ছিল বর্ষবরণ শোভাযাত্রা যশোরে। সেখান থেকে ঢাকায় আসার পর নাম হয় আনন্দ শোভাযাত্রা। এরপর চাপানো হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা নামে। এখন চারুকলা সিদ্ধান্ত নিয়েছে চারুকলায় যে নামে চালু হয়েছিল সেই নামে শুরু হবে।”
“অনেকদিন ধরে এটাকে আমরা বাঙালির প্রাণের উৎসব বানিয়ে রেখেছি। কিন্তু এটা বাংলাদেশের প্রাণের উৎসব। কারণ বাঙালি, চাকমা, মারমা, গারোসহ সব জাতিগোষ্ঠী বর্ষবরণ পালন করে।”
তিনি আরও বলেন, “নববর্ষ বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐক্যের বড় উপলক্ষ। এটা বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐক্য এবং সম্মিলনের একটি বড় ধাপ। আমরা হয়ত ২০ থেকে ৩০ বছর পর থাকবো না। কিন্তু আজকের বছরটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে। কারণ এরপর থেকে বাংলাদেশ এভাবেই চলবে।”
১৯৮৯ সাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ পহেলা বৈশাখে শোভাযাত্রা করে আসছে। শুরুতে এর নাম ছিল 'আনন্দ শোভাযাত্রা'।
নব্বইয়ে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের পটভূমিতে অমঙ্গলকে দূর করে মঙ্গলের আহ্বান জানিয়ে শোভাযাত্রার নামকরণ হয় 'মঙ্গল শোভাযাত্রা'।
প্রত্যেক বছর পহেলা বৈশাখে রমনার বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে এই শোভাযাত্রা বের হয়। এবার নাম বদলে হয়েছে 'বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা'। তবে নাম পরিবর্তন কারণে ভাটা পরেনি এই শোভাযাত্রার আমেজে।
ঢাকা/মামুন/ইভা
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আনন দ শ ভ য ত র র জন ত ক উপদ ষ ট চ র কল
এছাড়াও পড়ুন:
জবি ছাত্রীর আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় আটক তরুণ
রাজধানীর লক্ষ্মীবাজারে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সংগীত বিভাগের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীর বাবা প্রণব মজুমদার (৫৯) বাদী হয়ে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে সূত্রাপুর থানা মামলা করেন। মামলায় ইয়াছিন মজুমদার (২৩) নামের এক তরুণকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে।
আজ বুধবার সূত্রাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। নিহত শিক্ষার্থী হলেন প্রত্যাশা মজুমদার অথৈ।
মামলায় বাদী অভিযোগ করেন, ‘ইয়াছিন মজুমদার দীর্ঘদিন ধরে অথৈকে উত্যক্ত করছিল। স্কুলজীবনে তাদের মধ্যে পরিচয় ছিল। আমার মেয়ে ঢাকা চলে এলে ইয়াছিন তাকে অনুসরণ করে ঢাকায় আসে এবং লালবাগ থানা এলাকায় জমিদারী ভোজ নামক রেস্টুরেন্টে ওয়েটারের চাকরি নেয়। সে আগের মতো আমার মেয়েকে উত্যক্ত করতে থাকে। পরবর্তীতে ইয়াছিন কৌশলে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে। একপর্যায়ে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে মানসিকভাবে নির্যাতন করতে থাকে। গতকাল সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত উৎসবের অনুশীলন শেষে মেসে ফেরার পথে ইয়াসিন অথৈকে গালমন্দ করে ও উৎসবে অংশ না নিতে চাপ দেয়। পরে তার (অথৈ) রুমের দরজা ভেঙে তাকে অবস্থায় ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার। মেসের মালিকের স্ত্রী মোসা. জ্যোৎস্না বেগম প্রথম ঘটনাটি জানতে পারেন। এরপর ইয়াছিন মজুমদারসহ কয়েকজন অথৈকে উদ্ধার করে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
এজাহারে নিহতের বাবা প্রণব মজুমদার বলেন, ‘আমার ধারণা, বিকেল ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে সে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। মেয়ের সহপাঠীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে আমি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় ছুটে আসি।’
এ বিষয়ে সূত্রাপুর থানার ওসি বলেন, ‘আমরা অভিযুক্ত আসামিকে গ্রেপ্তার করেছি। কোর্টে চালান দিয়েছে। আইনানুগ প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজাম্মুল হক বলেন, ‘মেয়ের বাবার মামলায় আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রশাসনকে বলেছি, আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নিতে।’