চারঘাটে সরকারি গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে ভায়ালক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের বাঁকড়া বাজার এলাকায়।
সোমবার সকাল থেকে বাঁকড়া বাজার-রায়পুর সড়কের পাশে থাকা আটটি বিশাল মেহগনি গাছ কেটে নেন ওই ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আকবর আলী ও ইউনিয়ন বিএনপি নেতা সহকারী অধ্যাপক আবদুল্লাহ হিল কাফি। খবর পেয়ে সকাল ১০টার দিকে উপজেলা ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গিয়ে গাছ কাটতে নিষেধ করে আসেন। তাদের নিষেধ অমান্য করে আরও শ্রমিক লাগিয়ে ও মেশিন দিয়ে গাছ কাটা চলমান রাখেন তারা। 
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০০০ সালে সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির মাধ্যমে বাঁকড়া-রায়পুর গ্রামীণ সড়কের পাশে মেহগনি গাছগুলো রোপণ করা হয়। বর্তমানে গাছগুলোর বাজারমূল্য ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। গাছগুলো নিজেদের দাবি করে কাটা শুরু করেছেন বিএনপির দুই নেতা।
সুফলভোগীদের একজন হামিদুর রহমান বলেন, গাছগুলো রোপণ ও পরিচর্যা করলাম আমরা। সেই গাছ কাটা শুরু করেছেন আকবর আলী ও আবদুল্লাহ হিল কাফির লোকজন। তাদের দাবি, নিজেদের জমির গাছ কেটেছেন তারা। 
গাছ কাটার বিষয়ে বিএনপি নেতা আবদুল্লাহ হিল কাফি বলেন, শুধু গাছ নয়, পুরো সড়কটিই আমাদের জমিতে। গাছ না লাগালেও জমির মালিক আমরা। এ জন্য কেটে নিচ্ছি। গাছ কাটতে প্রশাসনের কেউ নিষেধও করেনি। 
ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আকবর আলী বলেন, গাছের জমির মালিক আমরা। ২০১৭ সালেই ভূমি অফিস এ-সংক্রান্ত রায় দিয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার থাকায় এতদিন গাছ কাটতে পারিনি। এখন উপযুক্ত সময়, তাই কাটছি।  
বন কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, গাছ কেটে নেওয়া হচ্ছে; কিন্তু আমরা কিছুই জানি না। সরকারি গাছ এভাবে কেটে নেওয়ার এখতিয়ার নেই কারও। ঘটনাস্থলে আমাদের লোকজন গেছে। এ কাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফ হোসেন বলেন, গাছ কাটা বন্ধ করা হয়েছে। গাছগুলো ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে কিনা– তা যাচাই করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ র

এছাড়াও পড়ুন:

আসামি না হয়েও স্বেচ্ছায় কারাগারে যাওয়া সেই যুবক প্রতারণা মামলায় গ্রেপ্তার

চট্টগ্রামে মাদকের একটি মামলায় আসামি সেজে আদালতে আত্মসমর্পণের পর কারাগারে যাওয়া এক যুবককে জালিয়াতি ও প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার (শ্যোন অ্যারেস্ট) দেখিয়েছেন আদালত। তাঁর নাম মো. রাকিব। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দিন মাহমুদ শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে প্রকৃত আসামি মো. সুমনের হয়ে আদালতে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেন রাকিব। আদালতের আদেশে ১ জুলাই থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, কারাগারে আটক রাকিবকে জালিয়াতি ও প্রতারণা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করে কোতোয়ালি থানা-পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত তা মঞ্জুর করেন। আসামিকে রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।

আদালত সূত্র জানায়, ২০২৪ সালের ৩১ আগস্ট নগরের আকবর শাহ থানার কৈবল্যধাম এলাকায় একটি পিকআপ ভ্যানে অভিযান চালিয়ে ৪০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করে র‌্যাব, যার মূল্য ৪ লাখ টাকা। ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার করা হয় গাড়িচালক রাহাত ইসলামকে। পালিয়ে যান চালকের সহকারী (হেলপার) মো. সুমন। এ ঘটনায় র‌্যাব কর্মকর্তা বাদী হয়ে আকবর শাহ থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন। তদন্ত শেষে চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। এতে রাহাত ইসলাম ও মো. সুমনকে আসামি করা হয়।

আদালত পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করে পলাতক আসামি সুমনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এরই মধ্যে সুমনের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার পূর্বধলা এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। বিষয়টি জানতে পেরে সুমন নিজেকে কারামুক্ত রাখতে তাঁর পরিবর্তে নোয়াখালীর রাকিবকে আদালতে আত্মসমর্পণ করায় ১ জুলাই। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোস্তফা শুনানি শেষে আসামির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। সুমনের হয়ে রাকিব আত্মসমর্পণের সময় তাঁর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ওয়াহিদ মুরাদ।

আদালতে একজনের পরিবর্তে আরেকজন আত্মসমর্পণের বিষয়টি ধরা না পড়লেও কারাগারে গিয়ে ধরা পড়ে। জাতীয় পরিচয়পত্রের ডেটাবেজে (তথ্যভান্ডার) ভোটারদের আঙুলের ছাপ সংরক্ষিত আছে। এ পদ্ধতিকে বলা হয় ফিঙ্গারপ্রিন্ট আইডেনটিফিকেশন অ্যান্ড ভেরিফিকেশন সিস্টেম। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ পদ্ধতি ব্যবহার শুরু করে চট্টগ্রাম কারা কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে আঙুলের ছাপে ধরা পড়েছে অনেক বন্দীর আসল পরিচয়। এসব ঘটনায় মামলাও হয়েছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি মাসের জুলাই পর্যন্ত আত্মসমর্পণ করে জালিয়াতির মাধ্যমে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে আসা ১৬ জনের আঙুলের ছাপে শনাক্ত করা হয়।

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ তত্ত্বাবধায়ক মো. ইকবাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আদালত থেকে কারাগারে আসা প্রত্যেক নতুন আসামির আঙুলের ছাপ নেওয়া হয়। সেখানে আসামির জাতীয় পরিচয়পত্রে থাকা আসল পরিচয় উঠে আসে। ইকবাল হোসেন আরও বলেন, ‘সুমনের হয়ে কারাগারে আসা রাকিব স্বীকার করেছেন তিনি মাদক মামলার প্রকৃত আসামি নন। ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে তিনি সুমন সেজেছেন। তাঁকে বলা হয়েছে, দ্রুত কারাগার থেকে ছাড়িয়ে নেওয়া হবে। তাই তিনি রাজি হয়েছেন। বিষয়টি চিঠি দিয়ে আদালতকে জানানো হয়েছে।’

আরও পড়ুনচট্টগ্রামে ‘আয়নাবাজি’, ধরা পড়েছে আঙুলের ছাপে০৮ নভেম্বর ২০২৩

কারাগার থেকে চিঠি পাওয়ার পর মামলা করার নির্দেশ দেন চট্টগ্রাম চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মিজানুর রহমান। একই সঙ্গে আসামিকে আত্মসমর্পণকারী আইনজীবী ওয়াহিদ মুরাদের কাছে কারণ ব্যাখ্যা চেয়েছেন আদালত। আদালতের প্রসিকিউশন শাখার আকবর শাহ থানার জিআরও সাইদুর রহমান বাদী হয়ে গত রোববার রাতে নগরের কোতোয়ালি থানায় প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় মো. রাকিব ও মো. সুমনকে আসামি করা হয়। সুমন এখনো পলাতক।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাউজানে উত্তেজনা থামেনি, পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি বিএনপির দুই পক্ষের
  • থমথমে পরিস্থিতিতে এক পক্ষের বিক্ষোভের ডাক
  • চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা
  • রাউজানে সংঘর্ষের পর চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত, গিয়াস কাদেরের পদ স্থগিত
  • রাউজানে বিএনপি নেতা গোলাম আকবরের গাড়িবহরে হামলা, আহত ২০
  • রাউজানে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ–গুলি, উত্তর জেলা আহ্বায়কসহ আহত ২০
  • আসামি না হয়েও স্বেচ্ছায় কারাগারে যাওয়া সেই যুবক প্রতারণা মামলায় গ্রেপ্তার