'ডা. জাফরুল্লাহ দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে আপস করতেন না'
Published: 18th, April 2025 GMT
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কখনোই আপস করতেন না- এমন মন্তব্য করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীর প্রতীক বলেছেন, 'মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কখনোই আপস করতেন না। সেটা যতবড় শক্তিই হোক না কেন। এ কারণেই তিনি বাংলাদেশের তরুণদের কাছে অক্ষয় ও অমর হয়ে থাকবে।'
শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের জুলাই বিপ্লব স্মৃতি হলে বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা.
চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের আহ্বায়ক শেখ মোজাফফর আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ।
উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম আরও বলেন, 'প্রধান উপদেষ্টা ড. মো. ইউনুস এবং ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মধ্যে অত্যন্ত নিবিড় সখ্যতা ছিল। এটি কোনো ব্যক্তি সখ্যতা না, এটি ছিল অন্তরের সখ্যতা।'
অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতেন জাফরুল্লাহ- এমন মন্তব্য তরে উপদেষ্টা বলেন, 'ড. মো. ইউনুস, ফজলে হাসান আবেদ এবং ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মিলে গণস্বাস্থ্যে ডায়ালাইসিস সেন্টার স্থাপন করেছিলেন। তিনি সবসময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে আমাদের অণুপ্রেরণা যোগাতেন। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার গণমানুষের বিরুদ্ধে একটি কাজও করছেনা।'
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেন, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর রাজনৈতিক ভূমিকা, সামাজিক ভূমিকা এবং নৈতিকতার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, 'ডা. জাফরুল্লাহ কখুব স্পষ্টভাষী ছিলেন। সময় এবং পরিবর্তনের সঙ্গে প্রতিটি সংগ্রামে ওনাকে আমরা কাছে পেয়েছি। এই গুণী ব্যক্তিকে যতটা আমাদের গুরুত্ব দেওয়ার কথা ছিল, ততটা আমরা দিতে পারিনি। যেখানে আমাদের অর্থনীতি মাল্টিন্যাশনালদের হাতে সে জায়গায় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ছিলেন আলাদা।'
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতালের ম্যানেজিং ট্রাস্টি অধ্যাপক ডা. রবিউল হোসেন, নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি শিরিন পারভিন হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, চট্টগ্রামের সিনিয়র সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি প্রমুখ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ড জ ফর ল ল হ চ ধ র উপদ ষ ট ফ র ক ই আজম জ ফর ল ল হ চ ধ র উপদ ষ ট ব ষয়ক
এছাড়াও পড়ুন:
আরপিওর বিধানের বৈধতার রায় রিভিউর জন্য হলফনামার অনুমতি
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসংবলিত স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নের সঙ্গে যুক্ত করাসংক্রান্ত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের বিধানের বৈধতা দিয়ে ১৪ বছর আগে রায় দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। এই রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদনের জন্য হলফনামার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছেন দুজন আইনজীবীসহ সাত ব্যক্তি। শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব আজ সোমবার হলফনামা করার অনুমতি দিয়েছেন।
আবেদনকারী সাত ব্যক্তি হলেন ব্যারিস্টার এম সারোয়ার হোসেন, মেজর (অব.) এস এম হারুনুর রশীদ, কাজী জাহেদুল ইসলাম, আইনজীবী এস এম আজমল হোসেন, মেজর (অব.) নিয়াজ আহমেদ জাবের, মেজর (অব.) মো. জিয়াউল আহসান ও সালাহ উদ্দিন।
আদালতে আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ওমর ফারুক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এ মামলায় আবেদনকারীরা পক্ষ ছিলেন না। যে কারণে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন দায়েরের জন্য হলফনামা করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন তাঁরা। চেম্বার আদালত হলফনামা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছেন। আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষে শিগগিরই রিভিউ আবেদন করা হবে।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) ১২(৩ক)(ক) বিধান অনুযায়ী নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসংবলিত স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নপত্রের সঙ্গে যুক্ত করে দিতে হবে। তবে শর্ত থাকে যে কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী ইতিপূর্বে জাতীয় সংসদের কোনো নির্বাচনে সদস্য নির্বাচিত হয়ে থাকলে ওই তালিকা প্রদানের প্রয়োজন হবে না।
আইনজীবীর তথ্য অনুসারে, ঢাকার একটি আসন থেকে ২০০৭ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাহবুব আহমেদ চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি মনোনয়নপত্র নেন। পরে নির্বাচনের ওই তারিখ পিছিয়ে যায়। অন্যদিকে ২০০৮ সালে আরপিও দফা ১২(৩ক)–তে সংশোধনী আনা হয়। এই বিধান সংবিধানের কয়েকটি অনুচ্ছেদ ও আরপিওর ১২(১) ধারার পরিপন্থী উল্লেখ করে মাহবুব আহমেদ চৌধুরী ২০১০ সালে হাইকোর্ট রিট করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট রুল ডিসচার্জ (খারিজ) করে রায় দেন। দফা (৩ক) সংবিধান পরিপন্থী নয় বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ২০১০ সালে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন রিট আবেদনকারী। শুনানি শেষে আপিল বিভাগ ২০১১ সালের ২৩ জানুয়ারি লিভ টু আপিল খারিজ করে রায় দেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসংবলিত স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নের সঙ্গে যুক্ত করাসংক্রান্ত আরপিওর ১২(৩ক)–তে বেআইনি কিছু পাননি বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।
ওই রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে দুই আইনজীবীসহ সাত ব্যক্তি আবেদন করতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তাঁদের আইনজীবী ওমর ফারুক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে ভোটারের গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে। ভোটার কোন প্রার্থীকে ভোট দেবেন বা দেবেন না, এটি একান্তই তাঁর চিন্তা ও মতপ্রকাশের অধিকার। সিক্রেট ব্যালটে হামলা হলে ভোট বাতিলও হয়। সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে প্রার্থীর যোগ্যতা নির্ধারণ করা আছে। রাজনৈতিক দল হলে ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থন লাগবে না, অথচ স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে গেলে লাগবে অর্থাৎ একই মনোনয়নপত্র ঘিরে দ্বৈত বিধান। ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থন থাকার ওই বিধানের মাধ্যমে স্বতন্ত্র প্রার্থীকে নির্বাচন থেকে বিরত রাখার সুযোগ তৈরি হয়েছে, যা সংবিধান সমর্থন করে না এবং ভোটারের গোপনীয়তারও লঙ্ঘন—এসব যুক্তি তুলে ধরে আবেদনটি করা হয়।