গ্রীষ্মের ডাক পেলেই গাছটি সেজে ওঠে ফুলের রঙে
Published: 20th, April 2025 GMT
‘এখানে ঘুঘুর ডাকে অপরাহ্ণে শান্তি আসে মানুষের মনে/ এখানে সবুজ শাখা আঁকাবাঁকা হলুদ পাখিরে রাখে ঢেকে/ জামের আড়ালে সেই বউ কথাকওটিরে যদি ফেল দেখে/ একবার—একবার দু’পহর অপরাহ্ণে যদি এই ঘুঘুর গুঞ্জনে/ ধরা দাও—তাহলে অনন্তকাল থাকিতে যে হবে এই বনে।’ ইচ্ছে হলেও অনন্তকাল হয়তো এখানে থাকার সুযোগ নেই। স্থানটিও ঠিক বন নয়, তবে অনেকটা বনের মতো। চেনা-অচেনা গাছপালা, শটিবন, বাঁশঝাড়, আম-কাঁঠালের ছায়ায় নিবিড় এক সবুজ গ্রাম। গাছের আড়ালে বসে দু-একটি কোকিল, দু-একটি ঘুঘু পাখি যখন-তখন ডেকে ওঠে, গুঞ্জন তোলে।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের শহরশ্রী নামের সেই গ্রামের একটি বাড়িতে একটি দুর্লভ গাছ আছে। যে গাছটি প্রায় অর্ধশতক ধরে ফুলের ঐশ্বর্য নিয়ে বাড়িটিকে রঙিন করছে। প্রকৃতি গ্রীষ্মের ডাক পাঠালেই গাছটিতে ফুল ফুটে। সেই গাছটির শরীর ফেটে এখন উপচে পড়ছে ফুল, ঢেউ খেলে ফুলের বন্যা বইছে। সাপের ফণার মতো বাঁকানো উদ্যত অজস্র স্নিগ্ধ, উজ্জ্বল ফুল ফুটেছে গাছটিতে। ফুলে ফুলে ঢাকা পড়েছে গাছের শরীর, বাকল, শাখা-প্রশাখা। গাছটির চারপাশে হাওয়ায় ছড়িয়ে পড়ছে ফুলের মধুগন্ধ। দুর্লভ গাছটির নাম ‘নাগলিঙ্গম’।
শহরশ্রী খুব দূরে নয়, তবু শহর থেকে অনেকটা দূরেই। শহরশ্রীর অবস্থান শ্রীমঙ্গল উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নে। উঁচু-নিচু টিলায় সাজানো গ্রামটি। ওই বাড়ির মালিক অবসরপ্রাপ্ত নৌ কর্মকর্তা দেওয়ান গউছউদ্দিন আহমদ। স্থানীয় জাতেরসহ অনেক বিরল প্রজাতির গাছ আছে এই বাড়িতে। সেই বিরল প্রজাতিরই একটি হচ্ছে নাগলিঙ্গম। প্রায় ৬০ বছর আগে তাঁর বড় ভাই অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা দেওয়ান মহীউদ্দিন আহমদ নার্সারি থেকে একটি ফুলের চারা এনে বাড়িতে রোপণ করেছিলেন। তখনো এটা কী জাতের ফুলের গাছ, তা তাঁরা জানতেন না। ধীরে ধীরে গাছটি বড় হয়েছে, একসময় গাছে ফুল এসেছে। তারপর খোঁজখবর নিয়ে ফুলের জাত চেনা গেছে।
চৈত্রের শেষ থেকে ফুল ফুটতে শুরু করে, ভাদ্র মাস পর্যন্ত ফুল ফুটে। অজস্র ফুলে গাছটি রঙিন হয়ে ওঠে। সকালে এই ফুল থেকে মিষ্টি একটা গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে আশপাশে। পুরোনো গাছটির পাশে প্রাকৃতিকভাবে আরও দুটি গাছ উঠেছে। নাগলিঙ্গম গাছটিতে এখন ফুলের ঢল নেমেছে। গাছটির প্রায় পুরো শরীর ফুলে ঢেকে গেছে। ফুলের রঙে সেজে উঠেছে গাছ। সাপের ফণার মতো ফুটে আছে ফুল। কোনোটি ফোটার অপেক্ষায় গোল হয়ে আছে। অচিরেই কুঁড়িগুলো ঘোমটা খুলে ফুল হয়ে মাধুর্যের ফণা তুলবে। গাছটির একেবারে নিচ থেকে ওপরের শাখা-প্রশাখা পর্যন্ত ফুল ফুটেছে, একটুও ফাঁক নেই। পাতাই দেখা যায় না, এত ফুল! গাছ থেকে চোখ ফেরানোর উপায় নেই। ‘চোখ না ফেরালে.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গুলিস্তানে সুন্দরবন স্কয়ার মার্কেটের আগুন নিয়ন্ত্রণে
ঢাকার গুলিস্তানে সুন্দরবন স্কয়ার মার্কেটে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে ফায়ার সার্ভিস।
শনিবার (২ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে মার্কেটের পঞ্চম তলায় আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের স্টেশন অফিসার এবং মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম রাইজিংবিডিকে বলেন, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সোয়া এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে বেলা ১১টা ১২ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের ডিউটি অফিসার লিমা খানম জানিয়েছেন, “সকাল ১০টার দিকে আগুন লাগার খবর আসে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। সোয়া এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে তারা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।”
তাৎক্ষণিকভাবে আগুন লাগার কারণ এবং ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবরও পাওয়া যায়নি। তবে আগুন লাগার খবর পেয়ে ভিড় করে উৎসুক জনতা ও ব্যবসায়ীরা।
ঘটনাস্থলে এখনো কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
ঢাকা/রায়হান/ইভা