ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় শ্বশুরের কবরের ওপর থেকে খায়রুন আক্তার (৩০) নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার সকালে উপজেলার সনগাঁও চৌধুরীপাড়া গ্রাম থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। স্বজনদের দাবি, তাকে হত্যা করেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। 

নিহত গৃহবধূ ওই গ্রামে তাজমুল হকের স্ত্রী। তিনি একই ইউনিয়নের জিয়াখোর গ্রামের সাদেকুল ইসলামের মেয়ে।

খায়রুনের চাচা শ্বশুর মানিক বলেন, ‘রোববার রাতে খাওয়াদাওয়া শেষে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে পড়ে খায়রুন। সকালে গোয়ালঘর থেকে গরু বের না করায় বাড়ির লোকজন তার খোঁজ করতে থাকেন। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে ভুট্টা ক্ষেতে তার জুতা দেখে সন্দেহ হয়। এ সময় খোঁজ করতে করতে শ্বশুরের কবরের ওপর হাত-পা বাঁধা অবস্থায় তার নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। তখন থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।’

খায়রুনের স্বজনরা জানান, সাত বছর আগে পারিবারিকভাবে খায়রুন আক্তারের বিয়ে হয় তাজমুল হকের সঙ্গে। সন্তান না হওয়ায় খায়রুনের ওপর নানা সময় মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালাত তার স্বামী তাজমুল হক, শাশুড়ি দরিফন বেগম ও চাচি শাশুড়ি দুলালি বেগম। তারা পরিকল্পিতভাবে খায়রুনকে হত্যা করেছেন। এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে খায়রুনের স্বামী কাজের সুবাদে ছয় দিন আগে কুমিল্লায় যান। তাদের সন্দেহ, রাতে এসে খায়রুনকে হত্যার পর তিনি লুকিয়ে আছেন বা কুমিল্লায় চলে গেছেন। 

কান্নাজড়িত কণ্ঠে খায়রুনের মা বলেন, ‘মেয়েটাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। যদি না রাখতে চাইত, ফিরিয়ে দিত। এভাবে হত্যা কেন করল? আমরা বিচার চাই, হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।’

অভিযোগ অস্বীকার করে খায়রুনের শাশুড়ি দরিফন বেগম বলেন, ‘সকালে মরিচ ক্ষেতে ছিলাম। কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তা জানি না। আগে তার সঙ্গে আমাদের ঝগড়া হতো। তবে গত দুই মাস কোনো ঝগড়া হয়নি।’

বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শওকত আলী সরকার বলেন, ‘লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত চলছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গ হবধ র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাম্পবিরোধী স্লোগান দিয়ে উড়োজাহাজে গ্রেপ্তার ভারতীয় বংশোদ্ভূত যুক্তরাজ্যের নাগরিক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পতন চেয়ে স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে যুক্তরাজ্যে ৪১ বছর বয়সী এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত রোববার লন্ডনের লুটন বিমানবন্দর থেকে গ্লাসগোগামী একটি ফ্লাইটে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই ব্যক্তির নাম অভয় নায়েক। তিনি লন্ডনের কাছে বেডফোর্ডশায়ারের লুটন শহরের বাসিন্দা।

অভয় নায়েক ইজিজেট ফ্লাইটে হামলা ও যাত্রীদের নিরাপত্তাঝুঁকিতে ফেলার মতো আচরণ করেছেন। তিনি উড়োজাহাজে বোমা ফাটানোর হুমকি দিয়েছিলেন। তিনি মাঝ আকাশে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় স্লোগান দিয়ে চিৎকার করেছিলেন, যা যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়।

ওই ঘটনার একটি ভিডিও এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা যায়, অভয় নায়েক স্লোগান দিচ্ছেন, ‘আমেরিকার পতন হোক’, ‘ট্রাম্পের পতন হোক’। এরপরই তিনি ‘আল্লাহু আকবর’ (যার অর্থ ‘আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ’) বলে স্লোগান দেন। পরে দুজন ব্যক্তি তাঁকে কাবু করে উড়োজাহাজের মেঝেতে ফেলে দেন।

ওই ব্যক্তির নাম অভয় নায়েক। তিনি কোন ধর্মের অনুসারী, সে ব্যাপারে তাৎক্ষিণক কিছু জানা যায়নি।

ওই ব্যক্তির এমন আচরণের পর পাইলটরা বাধ্য হয়ে গ্লাসগোতে জরুরি অবতরণ করেন। সেখানেই স্কটিশ পুলিশ এসে অভয় নায়েককে গ্রেপ্তার করে।

স্কটল্যান্ডের পুলিশ এক বিবৃতিতে জানায়, ‘গত রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ২০ মিনিটের দিকে গ্লাসগোতে পৌঁছানো ইজিজেটের একটি ফ্লাইটে এক ব্যক্তি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন এমন খবর পেয়ে আমরা সেখানে যাই।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা মনে করি, ঘটনাটি এককভাবে ওই ব্যক্তির, অন্য কেউ জড়িত নন। যেসব ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়েছে, সেগুলো সন্ত্রাসবিরোধী কর্মকর্তারা খতিয়ে দেখছেন।’

উড়োজাহাজ অবতরণের পরই অভয় নায়েককে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে আক্রমণ ও যাত্রীদের নিরাপত্তাঝুঁকিতে ফেলার অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের কোনো অভিযোগ আনা হয়নি।

ইজিজেট এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘বেপরোয়া আচরণের কারণে একজন যাত্রীকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আমরা কর্তৃপক্ষকে তদন্তে সহযোগিতা করছি।’

পাইসলি শেরিফ আদালতে হাজিরার সময় অভয় নায়েক কোনো বক্তব্য দেননি। তাঁকে বিচারিক হেফাজতে পাঠানো হয়েছে এবং আগামী সপ্তাহে তাঁকে আবার আদালতে হাজির করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ