রাজশাহীতে এক ব্যক্তির চোখে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে ১০ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় রিকশাচালক মো. মাসুমকে (৩০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, ওই ছিনতাইয়ের সঙ্গে রিকশাচালক জড়িত বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন।

গতকাল সোমবার রাতে বোয়ালিয়া থানা-পুলিশের একটি দল মাসুমকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। আজ মঙ্গলবার সকালে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। রিকশাচালক মাসুমের বাড়ি নওগাঁর মান্দা উপজেলার ঠাকুরমান্দা গ্রামে।

পুলিশ জানায়, গত রোববার সকালে বোয়ালিয়া থানা এলাকার ঘোড়ামারা মোড়ে ছিনতাইয়ের শিকার হন দিলীপ কুমার প্রামাণিক নামের এক ব্যক্তি। তিনি রিলায়েন্স অটো নামের একটি অটোরিকশার যন্ত্রাংশ বিক্রির দোকানের ব্যবস্থাপক।

পুলিশ ও দোকানের মালিকপক্ষ জানায়, আগের দিনের বিক্রির ১৩ লাখ টাকা নিয়ে দিলীপ কুমার রোববার সকালে শিরোইলে ঢাকা বাস টার্মিনালের দিকে যাচ্ছিলেন। পথে মাসুমের রিকশায় ঘোড়ামারা এলাকায় পৌঁছালে রিকশাটি হঠাৎ একটি সরু গলির দিকে মোড় নেয়। ঠিক তখনই একটি মোটরসাইকেলে আসা দুই ব্যক্তি রিকশার গতিরোধ করে। তাঁদের একজন দিলীপের চোখে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে দেন। এ সময় ছিনতাইকারীরা তাঁর পিঠে থাকা টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নিতে গেলে তিনি বাধা দেন। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে তাঁর ডান হাতের কনুই ও বাঁ হাতের আঙুল কেটে যায়। ব্যাগটি ছিনিয়ে নিয়ে পালানোর সময় প্রায় আড়াই লাখ টাকা রাস্তায় পড়ে যায়, তবে বাকি টাকা নিয়ে ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যায়।

আরও পড়ুনরাজশাহীতে চোখে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে ১০ লাখ টাকা ছিনতাই২০ এপ্রিল ২০২৫

ঘটনার পর রিকশাচালক কোনো ভাড়া না নিয়েই পালিয়ে যান। ফলে তাঁর ভূমিকা নিয়েও সন্দেহ দেখা দেয়। তদন্তে নেমে পুলিশ ওই রিকশাচালককে শনাক্ত করে। পরে তাঁকে গ্রেপ্তারও করা হয়।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে মাসুম ছিনতাইয়ে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি ঘটনার পরপরই আত্মগোপনে চলে গিয়েছিলেন। ছিনতাই হওয়া টাকা উদ্ধারে ও অন্য জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ছ নত ই

এছাড়াও পড়ুন:

৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।

‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’

গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।

বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’

গণজমায়েতে র‌্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ