রাজশাহীতে এক ব্যক্তির চোখে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে সাড়ে ১০ লাখ টাকা ছিনতাই করা হয়েছিল রিকশাচালকের যোগসাজশে। মো. মাসুম (৩০) নামের ওই রিকশাচালককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি ছিনতাইয়ে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।

মাসুমের বাড়ি নওগাঁর মান্দা উপজেলার ঠাকুরমান্দা গ্রামে। সোমবার রাতে গ্রামের বাড়ি থেকে মাসুমকে গ্রেপ্তার করে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) বোয়ালিয়া থানার একটি দল। 

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সকালে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

গত রবিবার (২০ এপ্রিল) বোয়ালিয়া থানা সংলগ্ন ঘোড়ামারা এলাকায় মাসুমের রিকশায় করে যাওয়ার সময় ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন দিলীপ কুমার প্রামাণিক নামের এক ব্যক্তি। তিনি রিলায়েন্স অটো নামের একটি অটোরিকশা যন্ত্রাংশ বিক্রির দোকানের ব্যবস্থাপক। 

আগের দিনের যন্ত্রাংশ বিক্রির ১৩ লাখ টাকা তিনি কুমারপাড়া চালপট্টি এলাকায় মহাজনের বাসায় রেখেছিলেন। রবিবার সকালে সেই টাকা নিয়ে শিরোইলে বাস টার্মিনালের দিকে যাচ্ছিলেন তিনি। রিকশাটি ঘোড়ামারা এলাকায় পৌঁছালে হঠাৎ করে পাশের একটি সরু গলির দিকে মোড় নেয়। তখনই মোটরসাইকেলে থাকা দুই ব্যক্তি এসে রিকশার সামনে ব্যারিকেড তৈরি করেন। এক জন দিলীপের চোখে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে দেন। এ সময় চিৎকার করার মধ্যেই ছিনতাইকারীরা দিলীপের পিঠে ঝুলে থাকা ব্যাগ ধরে টানতে শুরু করেন। প্রতিরোধ করতে গেলে ছুরি দিয়ে দিলীপের ডান কনুই ও বাম হাতের একটি আঙুল কেটে দেন তারা। ধস্তাধস্তির সময় ব্যাগ থেকে প্রায় আড়াই লাখ টাকা রাস্তায় পড়ে যায়। বাকি সাড়ে ১০ লাখ টাকাসহ ব্যাগ নিয়ে ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যায়।

ঘটনার পর রিকশাচালক কোনো ভাড়া না নিয়েই পালিয়ে যান। ফলে, তাঁর ভূমিকা নিয়েও সন্দেহ দেখা দেয়। তদন্তে নেমে পুলিশ ওই রিকশাচালককে শনাক্ত করে। পরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আরএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন জানিয়েছেন, ছিনতাইয়ের ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। সে মামলায় রিকশাচালক মাসুমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে মাসুম ছিনতাইয়ের সাথে সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি ঘটনার পরপরই আত্মগোপনে চলে গিয়েছিলেন। ছিনতাই হওয়া টাকা উদ্ধারসহ অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।

ঢাকা/কেয়া/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ র প ত র কর ছ নত ই র একট

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ