সাড়ে ১০ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের মামলায় রিকশাচালক গ্রেপ্তার
Published: 22nd, April 2025 GMT
রাজশাহীতে এক ব্যক্তির চোখে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে সাড়ে ১০ লাখ টাকা ছিনতাই করা হয়েছিল রিকশাচালকের যোগসাজশে। মো. মাসুম (৩০) নামের ওই রিকশাচালককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি ছিনতাইয়ে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
মাসুমের বাড়ি নওগাঁর মান্দা উপজেলার ঠাকুরমান্দা গ্রামে। সোমবার রাতে গ্রামের বাড়ি থেকে মাসুমকে গ্রেপ্তার করে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) বোয়ালিয়া থানার একটি দল।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সকালে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
গত রবিবার (২০ এপ্রিল) বোয়ালিয়া থানা সংলগ্ন ঘোড়ামারা এলাকায় মাসুমের রিকশায় করে যাওয়ার সময় ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন দিলীপ কুমার প্রামাণিক নামের এক ব্যক্তি। তিনি রিলায়েন্স অটো নামের একটি অটোরিকশা যন্ত্রাংশ বিক্রির দোকানের ব্যবস্থাপক।
আগের দিনের যন্ত্রাংশ বিক্রির ১৩ লাখ টাকা তিনি কুমারপাড়া চালপট্টি এলাকায় মহাজনের বাসায় রেখেছিলেন। রবিবার সকালে সেই টাকা নিয়ে শিরোইলে বাস টার্মিনালের দিকে যাচ্ছিলেন তিনি। রিকশাটি ঘোড়ামারা এলাকায় পৌঁছালে হঠাৎ করে পাশের একটি সরু গলির দিকে মোড় নেয়। তখনই মোটরসাইকেলে থাকা দুই ব্যক্তি এসে রিকশার সামনে ব্যারিকেড তৈরি করেন। এক জন দিলীপের চোখে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে দেন। এ সময় চিৎকার করার মধ্যেই ছিনতাইকারীরা দিলীপের পিঠে ঝুলে থাকা ব্যাগ ধরে টানতে শুরু করেন। প্রতিরোধ করতে গেলে ছুরি দিয়ে দিলীপের ডান কনুই ও বাম হাতের একটি আঙুল কেটে দেন তারা। ধস্তাধস্তির সময় ব্যাগ থেকে প্রায় আড়াই লাখ টাকা রাস্তায় পড়ে যায়। বাকি সাড়ে ১০ লাখ টাকাসহ ব্যাগ নিয়ে ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যায়।
ঘটনার পর রিকশাচালক কোনো ভাড়া না নিয়েই পালিয়ে যান। ফলে, তাঁর ভূমিকা নিয়েও সন্দেহ দেখা দেয়। তদন্তে নেমে পুলিশ ওই রিকশাচালককে শনাক্ত করে। পরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আরএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন জানিয়েছেন, ছিনতাইয়ের ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। সে মামলায় রিকশাচালক মাসুমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে মাসুম ছিনতাইয়ের সাথে সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি ঘটনার পরপরই আত্মগোপনে চলে গিয়েছিলেন। ছিনতাই হওয়া টাকা উদ্ধারসহ অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।
ঢাকা/কেয়া/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ র প ত র কর ছ নত ই র একট
এছাড়াও পড়ুন:
কোনো দল নয়, পুলিশের আনুগত্য থাকবে আইন ও দেশের প্রতি
আসন্ন নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেছেন, ‘কোনো রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তির প্রতি আনুগত্য নয়, পুলিশের আনুগত্য থাকবে কেবল আইন ও দেশের প্রতি। নির্বাচনকালীন পুলিশের আচরণ হতে হবে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ, ন্যায়নিষ্ঠ ও পেশাদার।’
শনিবার সন্ধ্যায় রাজশাহী পুলিশ লাইনসের ড্রিলশেডে রাজশাহী মহানগর পুলিশ (আরএমপি) ও রাজশাহী রেঞ্জ পুলিশের যৌথ আয়োজনে এক বিশেষ মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইজিপি এসব কথা বলেন।
আইজিপি বলেন, নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের মূল দায়িত্বে থাকলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পেছনে পুলিশ সবচেয়ে বড় সহায়ক শক্তি। তিনি পুলিশ সদস্যদের সতর্ক করে বলেন, ‘যে সরকারই আসুক না কেন, পুলিশের দায়িত্ব হচ্ছে আইন অনুযায়ী কাজ করা। কেউ যেন আগাম ধারণা করে বা কাউকে খুশি করার জন্য দায়িত্ব থেকে বিচ্যুত না হয়। একজন পুলিশ সদস্য হয়তো কাউকে ফেভার করলে তা হয়তো প্রকাশ পাবে না, কিন্তু একদিন নিজের বিবেকের কাছেই তাঁকে জবাব দিতে হবে।’
পুলিশের সবচেয়ে বড় শক্তি হলো সততা ও পেশাগত দায়িত্ববোধ—এ কথা উল্লেখ করে বাহারুল আলম বলেন, পুলিশের কাজ কঠিন। আসামি ধরতে গেলে বাধা বা হুমকি আসে, এমনকি আক্রমণের মুখেও পড়তে হয়। তবু দায়িত্ব থেকে পিছু হটলে চলবে না।
পুলিশ বাহিনীর দেড় শ বছরের ঐতিহ্য ও ত্যাগের কথা স্মরণ করে আইজিপি বলেন, ‘এই পুলিশ বাহিনী একদিনে গড়ে ওঠেনি। ব্রিটিশ আমল থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত পুলিশ সদস্যরা জীবন বাজি রেখে দেশের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে আসছে।’ তিনি বলেন, ‘৫ আগস্টে পুলিশ কঠিন এক বাস্তবতার মধ্য দিয়ে গিয়েছিল। ধাপে ধাপে সেই পরিস্থিতি অতিক্রম করে আজকের অবস্থানে এসেছে। যদিও এখনো কিছু দুর্বলতা রয়ে গেছে, তবু একসময় সমালোচিত সেই পুলিশ বাহিনী আজ নতুনভাবে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।’
পুলিশের প্রতি সমাজের প্রত্যাশা ও সমালোচনার কথা তুলে ধরে আইজিপি বলেন, ‘এত কিছুর পরও পুলিশ দায়িত্ব থেকে সরে যায়নি, এটাই পুলিশের শক্তি।’
আগামী নির্বাচনকে পুলিশের জন্য একটি ‘বড় পরীক্ষা’ ও ‘সুযোগ’ হিসেবে অভিহিত করে আইজিপি অতীতের ভুল সংশোধন করে সততা ও পেশাদারির মাধ্যমে জনগণের আস্থা অর্জনের আহ্বান জানান।
এর আগে আইজিপি বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ সদস্যদের কর্মপরিবেশ ও বিভিন্ন সমস্যার কথা শোনেন এবং তা সমাধানের আশ্বাস দেন।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ানের স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে শুরু হওয়া এ সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান। রাজশাহী জেলার পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় রাজশাহী রেঞ্জ, আরএমপি এবং রাজশাহী বিভাগে অবস্থিত পুলিশের সব ইউনিটের বিভিন্ন পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।