গরমের আছে নিজস্ব কড়া ভাষা। আবহাওয়া দিয়েই বলে দিচ্ছে সকাল থেকে রাত কীভাবে যাপন করবেন। নিয়মের নড়নচড়ন হলেই পড়তে হচ্ছে অস্বস্তিতে। ঋতু অনুযায়ী পোশাক বেছে নেওয়াটা তাই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পোশাকের রং আর নকশাও এখানে জরুরি বিবেচ্য। এ সময় দিনের পোশাকের রং হবে এক রকম, রাতের আরেক। তবে কিছু রং আছে, যেগুলো যেকোনো সময়ই মানিয়ে যাবে। যেমন প্যাস্টেল ধাঁচের রংগুলো চোখের আরাম আর মনের প্রশান্তি—দুটোই দেবে।

এ বছর বিশ্ব ফ্যাশনে হালকা ও গাঢ় রঙের প্যালেট বেছে নেওয়া হয়েছে। আছে বাটার ইয়েলো, গোলাপির নানা হালকা শেড, আইসি ব্লু, মোকা মুজ, চেরি রেড, সোনালি, রুপালি ইত্যাদি রং। আমাদের দেশের পটভূমিতে চিন্তা করতে গেলেও হালকা রঙের নকশাই এখন ঘুরেফিরে দেখা যাবে। গাঢ় রঙের পোশাক পরলেও সেটার উপকরণ হতে হবে পাতলা বা হালকা। মসলিন, জামদানি, অরগানজা, সুতি বা খাদির পোশাকে দাওয়াতে বা সারা দিন থাকা যাবে ফুরফুরে মেজাজে, স্নিগ্ধতায়।

আপসাইক্লিং করা সুতির পোশাক.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

‘আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব’

ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ২টা ২০ মিনিট। মাথার ওপর প্রখর রোদের উত্তাপ। প্রচণ্ড গরমে ত্রাহি অবস্থায় একটু বিশ্রাম নিতে গাছের ছায়ার খোঁজে ক্লান্ত পথিক। এমন সময় ঘর্মাক্ত শরীরে একটি ভবন নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেল কয়েকজন শ্রমিককে। তাদের একজন তোঁতা মিয়া, অপরজন হাবিবুল।

হাবিবুল পাথর ভরেই যাচ্ছেন, তোঁতা মিয়া সেগুলো মাথায় করে একের পর এক টুড়ি ছাদ ঢালাইয়ের জন্য পৌঁছে দিচ্ছেন নির্দিষ্ট স্থানে। সেখানেও বালু-পাথরের মিশ্রণ করছেন আরও কয়েকজন। তাদের কর্মযজ্ঞের এক ফাঁকে কথা হয় তোঁতা মিয়ার সঙ্গে।

আলাপকালে তোঁতা মিয়া বলেন, ‘সারাদিন কাম (কাজ) কইরা ৫০০ ট্যাহা (টাকা) হাজিরা পাই। এইডি দিয়া কোনোমতে বউ-পুলাপান নিয়া দিন পার করতাছি। মে দিবস-টিবস কী কইতারতাম না। আমরার মতো গরিব মানুষ কাম না করলে পেডে ভাত জুটতো না এইডাই কইতারবাম।’

গতকাল বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ করার সময় এসব কথা বলেন তোঁতা মিয়া (৪৫)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া এলাকায়। এ সময় কথা হয় আরেক নির্মাণ শ্রমিক একাদুল মিয়ার সঙ্গে। একাদুলও জানেন না মে দিবস কী। তিনি বলেন, ‘এই কাম কইরা খাইয়া-না খাইয়া বউ-পুলাপান লইয়া কোনোরহমে দিন পার করতাছি। বর্তমান বাজারো জিনিসপাতির দাম বাড়লেও আমরার মজুরি বাড়ে না। পাঁচ বছর আগেও যা পাইতাম, অহনও তাই পাই।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক ট্যাহা সঞ্চয় করবাম এই বাও (উপায়) নাই। অসুখ অইয়া চার দিন ঘরে পইড়া থাকলে না খাইয়া থাহন লাগব। আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব?’

আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এই দিনটি সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বহির্বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয় নানা আয়োজনে। কিন্তু যাদের অধিকার আদায়ের জন্য এ দিনটি পালন করা হয়– তারাই জানেন না দিবসটি সম্পর্কে। তাদের আরেকজন দিনমজুর রাজন মিয়া। রাজন জানান, এসব দিবসে তাদের মতো গরিব মানুষের কোনো লাভ-লোকসান নেই। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ