কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ইউনিটে পাস ৩৪.০৫, সি–তে ৬৯.৭৫, ফল প্রকাশ রাত ১২টার পর
Published: 22nd, April 2025 GMT
গুচ্ছপদ্ধতি থেকে বের হয়ে চার বছর পর নিজস্ব পদ্ধতিতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৪–২৫ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির এ ও সি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। গত শনিবার (১৯ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত হওয়া এই দুই ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল এরই মধ্যে চূড়ান্ত হয়েছে। এ ইউনিটে পাসের হার ৩৪ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। এখানে জিপিএ ছাড়া পরীক্ষার্থী সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছেন ৭৭। আর সি ইউনিটে পাসের হার ৬৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এখানে জিপিএ ছাড়া পরীক্ষার্থী সর্বোচ্চ নম্বর ৮৮। পূর্ণাঙ্গ ফল আজ মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১২টার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে।
আজ সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (চলতি দায়িত্ব) ও কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের পর এরই মধ্যে আমাদের এ ও সি ইউনিটের ফল প্রকাশের প্রক্রিয়ার কার্যক্রম শেষ হয়েছে। কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ দিবাগত রাত ১২টার পর অর্থাৎ ২৩ এপ্রিলের প্রথম প্রহরে ফল প্রকাশিত হবে। পরীক্ষার্থীরা নিজ প্রোফাইলে লগইন করে ফল দেখতে পারবেন।’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, শনিবার (১৯ এপ্রিল) সি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা সকাল ১০টায় শুরু হয়ে বেলা ১১টায় এবং এ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা বেলা ৩টায় শুরু হয়ে বিকেল ৪টায় শেষ হয়। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়সহ মোট ৯টি কেন্দ্রে সি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা এবং ২৬টি কেন্দ্রে এ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ হাজার ৩০টি আসনের বিপরীতে এবার এ, বি ও সি—তিনটি ইউনিটে মোট আবেদন জমা পড়েছে ৬৬ হাজার ৪০২। সে হিসাবে এবার প্রতি আসনের বিপরীতে আবেদনকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৬৪।
আরও পড়ুন৬০০ বৃত্তির সুযোগ গ্র্যাজুয়েট রিসার্চ স্কলারশিপে, জেনে নিন বিস্তারিত২১ এপ্রিল ২০২৫শনিবার এ ইউনিটে (বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদ) ৩২ হাজার ৬৫৭ জন আবেদনকারীর মধ্যে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন ২১ হাজার ৯৯৪ জন। শতাংশ হিসাবে উপস্থিতির হার ৬৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ। এই ইউনিটে মোট আসন রয়েছে ৩৫০। আর সি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ৯ হাজার ৯৫২ জন আবেদনকারীর মধ্যে ৭ হাজার ৬৪৬ জন পরীক্ষা দিয়েছেন, যা শতাংশ হিসাবে উপস্থিতির হার ৭৬ দশমিক ৮৩ শতাংশ। সি ইউনিটে মোট ২৪০ আসন রয়েছে। ২৫ এপ্রিল বিকেল চারটায় অনুষ্ঠিত হবে সর্বশেষ বি ইউনিটের (কলা, মানবিক, সামাজিক বিজ্ঞান ও আইন অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষা। এই ইউনিটে ৪৪০ আসনের বিপরীতে আবেদন করেছেন ২৩ হাজার ৭৯২ জন। এতে প্রতিটি আসনের জন্য লড়বেন ৫৪ জন।
প্রসঙ্গত, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ২ ফেব্রুয়ারি ভর্তির আবেদন শুরু হয়। প্রথমে ২২ ফেব্রুয়ারি আবেদনের সময়সীমা থাকলেও পরবর্তী সময়ে বর্ধিত সময়সীমা অনুযায়ী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত (দিন–রাত যেকোনো সময়, এমনকি বন্ধের দিনেও) আবেদন করতে পেরেছেন ভর্তি–ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা। ১০ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এ বছর কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় জিপিএর ওপর ৩০ নম্বর কমিয়ে ১২০ নম্বরের ভিত্তিতে পরীক্ষার্থীদের মেধাতালিকা তৈরি করা হবে। এ ক্ষেত্রে পরীক্ষা হবে ১০০ নম্বরের এবং বাকি ২০ নম্বর থাকবে এসএসসি ও এইচএসসির জিপিএর ওপর।
আরও পড়ুনএসএসসি ২০২৫–এ পরীক্ষার্থী অনুপস্থিতির কারণ অনুসন্ধানের নির্দেশ৫ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ক ষ র থ এ ইউন ট আসন র দশম ক প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে গোসল করাতে গিয়ে পাওয়া গেল সাড়ে ৩ লক্ষাধিক টাকা
নীলফামারীর সৈয়দপুরে মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তিকে গোসল করাতে গিয়ে পাওয়া গেছে সাড়ে তিন লক্ষাধিক টাকা। পরে সৈয়দপুর থানা-পুলিশের মাধ্যমে সেই টাকা গত শনিবার উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রশিদুল ইসলামের কাছে আমানত হিসেবে রাখা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মানসিকভাবে অসুস্থ ওই ব্যক্তির নাম গণি মিয়া। তিনি প্রায় ৪০ বছর থেকে সৈয়দপুর জিআরপি স্টেশন এলাকায় ভবঘুরে হিসেবে জীবন যাপন করে আসছিলেন। বাহারি পোশাকে গায়ে বিভিন্ন গাঁটরি নিয়ে তিনি ঘুরে বেড়াতেন। স্থানীয় লোকজন তাঁকে ভালোবাসতেন।
মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিদের নিয়ে কাজ করা হিউম্যানিটি বাংলাদেশ নামে একটি সংগঠনের সদস্যরা গত শনিবার বিকেলে গণি মিয়াকে গোসল করাতে গিয়ে দেখেন তাঁর কাপড়ের ব্যাগে ও পরনে পোশাকের বিভিন্ন স্থানে বিপুল পরিমাণ টাকা। পরে থানা-পুলিশ ও উপজেলা সমাজসেবা দপ্তরের কর্মকর্তার উপস্থিতিতে টাকা গণনা করা হয়। এতে দেখা যায়, ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৫২ টাকা। এ ছাড়া অনেক টাকা ছেঁড়া-ফাটা থাকায় সেগুলো হিসাবের বাইরে থাকে।
জিআরপি এলাকার ব্যবসায়ী নান্নাহ বলেন, ‘তাঁকে আমরা সৈয়দপুরবাসী সবাই চিনি। ঝড়, বৃষ্টি, শীত গরম যা–ই হোক না কেন, তাঁর পরনে থাকত মোটা কাপড় ও কাপড়ের ব্যাগ। প্রায় ৩০ কেজি ওজনের গাঁটরি নিয়ে তিনি এদিক-সেদিক ঘুরে বেড়াতেন। আমরাও তাঁকে খাবার দিতাম, অনেকেই টাকা দিত। সেই টাকা তিনি তাঁর গাঁটরি ও শরীরে বিভিন্ন জায়গায় জমা রাখতেন।’
স্থানীয় সংবাদকর্মী সাবের আহমেদ বলেন, অনেক বছর থেকে দেখে আসছেন, গণি মিয়ে জিআরপি চত্বর এলাকায় পড়ে থাকতেন। মানুষজন তাঁকে সহযোগিতা করতেন। খুব ভালো মানুষ তিনি।
মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিদের নিয়ে কাজ করা হিউম্যানিটি বাংলাদেশ নামে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের এক কর্মী বলেন, ‘ওই দিন (শনিবার) সকালে আমরা সৈয়দপুরে এবং এই শহরের চারজন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে পরিষ্কার করে নতুনভাবে জামাকাপড় পরিয়ে দিই। পরে এই ব্যক্তির সন্ধান পাইলে আমরা তাঁকে পরিষ্কার করতে আসি সৈয়দপুর রেলওয়ে মাঠে। এসে দেখি ওনার গায়ে ময়লা ত্যালতালে যুক্ত পোশাক আর গায়ে ২৫-৩০ কেজি বিভিন্ন পোঁটলা-গাঁটরি। আমরা তাঁকে গোসল করাতে গিয়ে দেখি ওনার শরীরের বিভিন্ন জায়গা থেকে টাকা আর টাকা বের হচ্ছে। যার মধ্যে এক হাজার টাকার নোট পাওয়া যায় ১২৬টি, আর ৩৫০টি পাওয়া যায় ৫০০ টাকার নোট। এ ছাড়া আরও টাকা ছিল। পরে এত টাকা দেখে আমরা পুলিশের সহযোগিতা নিই।’
গণি মিয়া দাবি করেন, তিনি ১৯৬৬ সাল থেকে সৈয়দপুরে এভাবে আছেন। তাঁর বাবার নাম আইয়ুব। বাসা কোথায় জানতে চাইলে তিনি জানান, রংপুরের আলমনগর এলাকার রবার্টসনগঞ্জ মহল্লায়। তাঁর ভাষ্য, মানুষজন যা দিত, তা তিনি এভাবে জমা রাখতেন।
এ বিষয়ে সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফইম উদ্দীন বলেন, ওই লোক মূলত শহরের জিআরপি এলাকায় বেশির ভাগ সময় থাকেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নগদ টাকা ও সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকসহ অন্য ব্যক্তিদের সামনে থানায় সেই টাকা গণনা করে ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৫২ টাকা পাওয়া যায়। পরে সেই টাকা উপজেলা সমাজসেবার কর্মকর্তা রশিদুল ইসলামের কাছে আমানত হিসাবে রাখা হয়েছে।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রশিদুল ইসলাম বলেন, ‘টাকা আমাদের কাছে গচ্ছিত আমানত হিসাবে রাখা হয়েছে। ওনার টাকা ওনার কল্যাণে কীভাবে ব্যয় করা যায় কিংবা ওনার কাছে কীভাবে নিরাপদ রাখা যায়, সেটা আমরা দেখছি।’