পহেলগামে সন্দেহভাজন ২ হামলাকারীর বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো
Published: 25th, April 2025 GMT
ভারতের জম্মু ও কাশ্মিরের পহেলগামে পর্যটকদের হামলার সঙ্গে সন্দেহভাজন দুজনের বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার এনডিটিভি অনলাইন এ তথ্য জানিয়েছে।
মঙ্গলবার ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। এদের অধিকাংশই ছিলেন পর্যটক। এ ঘটনার জন্য বুধবার ভারত কোনো প্রমাণ ছাড়াই পাকিস্তানকে দায়ী করেছে। প্রাথমিক হামলার সঙ্গে দুজন জড়িত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, কাশ্মিরের অনন্তনাগ জেলাতেই আসিফ ও শেখ আদিল হুসেন নামের দুই সন্দেহভাজনের বাড়ি। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে আদিলের বাড়িটি আইইডি বিস্ফোরণ ঘটিয়ে উড়িয়ে দেওয়া হয়। আর শুক্রবার আসিফের বাড়িটি বুলডোজ়ার দিয়ে ভেঙে ফেলা হয়।
সেনা সূত্রে বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে, দু’জনেই বাইরে থেকে আসা জঙ্গিদের স্থানীয় পথঘাট চিনিয়ে দিয়েছিল। আদিল ২০১৮ সালে আত্তারি-ওয়াঘা সীমান্ত হয়ে পাকিস্তানে গিয়েছিল প্রশিক্ষণ নিতে। গত বছরেই আবার জম্মু-কাশ্মিরে ফিরে আসে সে। পাকিস্তান থেকে ফিরে আসার পর তাকে বেশ কয়েক বার দক্ষিণ কাশ্মিরেও দেখা গিয়েছিল।
অনন্তনাগ পুলিশ আদিল হুসেনসহ তিন সন্দেহভাজকে ধরতে সাহায্যকারী তথ্যের জন্য ২০ লাখ রুপি টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে। এই তিনজনকেই ২২ এপ্রিল পাহেলগাম হামলার পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নের জন্য সন্দেহ করা হচ্ছে।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চুলার ধোঁয়া নিয়ে বাগ্বিতণ্ডা, স্বজনদের হামলায় যুবক নিহত
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় চুলার ধোঁয়া নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার জেরে ভাই-ভাবি-ভাতিজার হামলায় আহত হয়ে মনির হোসেন (৩৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার দুপুরে উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের উড়শিউড়ার নন্দ দিঘিরপাড় গ্রামে হামলার ঘটনা ঘটে। পরে সন্ধ্যা সাতটার দিকে জেলা শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
নিহত মনির হোসেন উড়শিউড়ার নন্দ দিঘিরপাড় গ্রামের মৃত খুরশিদ মিয়ার ছেলে। মনির পেশার দিনমজুর ছিলেন। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে তিনি চতুর্থ ছিলেন। তাঁর স্ত্রী এবং সাত ও দেড় বছর বয়সী দুটি ছেলে আছে।
নিহতের পরিবার ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল দুপুরে মনিরের বড় ভাই বাবুল মিয়ার (৫৫) স্ত্রী জুবায়দা বেগম (৪৫) একটি মাটির চুলা নিয়ে মনিরের বসতঘরের দরজার সামনে রান্না বসান। মাটির চুলার ধোঁয়া বসতঘরে প্রবেশ করলে মনির আপত্তি জানান। এতে বাবুলের স্ত্রী উচ্চস্বরে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলা শুরু করেন। মনির প্রতিবাদ করলে বাবুল মিয়ার ছেলে শাওন মিয়া (১৫) এগিয়ে এসে চাচা মনিরের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে শাওন দা নিয়ে মনিরকে মারতে এগিয়ে এলে তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এ সময় বড় ভাই বাবুল, সাচ্চু, সাচ্চুর স্ত্রী হালিমা বেগম (৪৩) ও ছেলে ইমন (২৬) এবং শাওন লাঠি ও কাঠ দিয়ে মনিরকে বেধড়ক মারধর করেন। একপর্যায়ে তাঁরা ইট দিয়ে মনিরের মাথায় আঘাত করেন। পরে স্থানীয় লোকজন মনিরকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাঁকে শহরের বেসরকারি সেন্ট্রাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা সাতটার দিকে মনিরের মৃত্যু হয়।
হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক মামুনুর রশিদ বলেন, ‘সাতটার দিকে ইসিজি পরীক্ষায় কোনো স্পন্দন না পাওয়ায় ওই রোগীকে মৃত ঘোষণা করি।’
নিহত ব্যক্তির স্ত্রী জুলেখা বেগম বলেন, ‘বসতঘরের সামনে মাটির চুলা এনে রান্না শুরু করেন বাবুল ভাইয়ের স্ত্রী। তিনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বকবক করছিলেন। আমার স্বামী পাল্টা কথা বলেন। এতে ভাতিজা শাওন দা নিয়ে স্বামীকে মারতে এগিয়ে আসে। স্বামীর বড় ভাই বাবুল ছেলেরে বলেছে, “ওরে ধর বেশি করে বাইরা।” তখন বাকিরা লাঠি, কাঠ ও ইট দিয়ে মারধর করে। শাওন আগেও স্বামীকে মারতে এসেছিল।’
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী প্রতিবেশী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মাটির চুলার ধোঁয়াকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে ঝগড়ার উৎপত্তি। নিরীহ ছেলেটাকে একা পেয়ে তারা সবাই মারধর করে মেরে ফেলেছে।’
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্যের জন্য বাবুল মিয়াসহ অন্যদের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও সেগুলো বন্ধ পাওয়া যায়।
খবর পেয়ে রাত ১১টার দিকে সদর থানা-পুলিশ ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) এম এম রকীব উর রাজা ওই বেসরকারি হাসপাতালে যান। সদর থানার কর্মকর্তা জিয়া উদ্দিন বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলার প্রক্রিয়া চলছে। জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।