বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরবর্তী নির্বাচনে সভাপতি পদে লড়ার ঘোষণা দিয়েছেন বর্তমান সভাপতি ও সাবেক জাতীয় ক্রিকেটার ফারুক আহমেদ। ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের পর তিনি দায়িত্ব নেন বিসিবির। দায়িত্ব নেওয়ার আট মাস হতে চললেও ইতোমধ্যে নানা কারণে তোপের মুখে পড়তে হয়েছে এই সাবেক ক্রিকেটারকে। এরই মধ্যে নিজের অবস্থান সুদৃঢ় করতে নির্বাচনমুখী হলেন বর্তমান বিসিবি সভাপতি।

মঙ্গলবার রাতে প্রবাসী সাংবাদিক খালেদ মহিউদ্দিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ফারুক জানান, নানা বিতর্ক ও সমালোচনার মধ্যেও তিনি নির্বাচনে অংশ নেবেন। সাম্প্রতিক সময়ে বিসিবির অর্থ স্থানান্তর ও আর্থিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে সমালোচনাগুলো হচ্ছে, সেগুলোর পেছনে পরিকল্পিত উদ্দেশ্য আছে। নির্বাচনের আগে একটি পক্ষ বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে আমাকে বিতর্কিত করতে চাইছে।’

উল্লেখ্য, বিসিবির স্থায়ী আমানত (এফডিআর) একক সিদ্ধান্তে বিভিন্ন ব্যাংকে স্থানান্তর করার অভিযোগে ফারুককে ঘিরে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। তবে এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন দাবি করে তিনি বলেন, ‘এফডিআর স্থানান্তর নিয়ে করা দুটি খবরে তথ্যের ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে। আসল তথ্য গোপন করে একটি পক্ষ বিতর্ক তৈরির চেষ্টা করছে। অথচ এই স্থানান্তরের ফলে বোর্ড প্রতিমাসে কয়েক কোটি টাকা অতিরিক্ত মুনাফা পাবে।’

বিপিএল নিয়ে সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, ‘এবার বিপিএলে ১২ কোটি টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছে, যা আগের আট আসরের সম্মিলিত বিক্রির চেয়েও বেশি। আগে মোট ১০ কোটি টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছিল। এগুলো তো ইতিবাচক অর্জন, কিন্তু কেউ তা তুলে ধরছে না।’

বিসিবির আসন্ন নির্বাচন অক্টোবর মাসে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সেই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে ফারুক বলেন, ‘বোর্ডের একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। তারা এখনও সক্রিয় এবং আমাকে পদচ্যুত করার ষড়যন্ত্র করছে। তারা ভাবে, কিছু নেতিবাচক খবর এলেই আমি সরে দাঁড়াব। কিন্তু আমি লড়াই করব। যদি আমি না থাকি, তবে দুর্নীতির শেষ হবে না।’

নির্বাচনে অংশ নেওয়াকে তিনি নিজস্ব ‘দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান’-এর অংশ হিসেবেই ব্যাখ্যা করেন। যদিও তার নির্বাচনী পরিকল্পনা বা কৌশল নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি।

নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর তিনি সভাপতি পদে থাকতে পারবেন কি না, এমন প্রশ্নে সরাসরি উত্তর না দিয়ে তিনি বলেন, ‘এই প্রশ্নের উত্তর সময়ই দেবে। তবে যতদিন দায়িত্বে আছি, দুর্নীতিমুক্ত ক্রিকেট ব্যবস্থার জন্য লড়াই চালিয়ে যাব।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ফ র ক আহম দ

এছাড়াও পড়ুন:

নুরাল পাগলার দরবার থেকে চুরি হওয়া জেনারেটর উদ্ধার, যুবক গ্রেপ্তার

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরাল পাগলার দরবার থেকে চুরি হওয়া একটি জেনারেটর উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় মো. মিজানুর রহমান (২৪) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়।

গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে মিজানুরকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও গোয়ালন্দ ঘাট থানা-পুলিশ। মিজানুরের বাড়ি রাজবাড়ী সদর উপজেলার লক্ষ্মীকোল সোনাকান্দর গ্রামে।

আরও পড়ুননিহতের বাবার মামলায় গ্রেপ্তার আরও ২, দেড় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির দাবি১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এ নিয়ে দুই মামলায় মোট ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. শরীফ আল রাজীব।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ৫ সেপ্টেম্বর গোয়ালন্দের নুরাল পাগলার দরবারে বিক্ষুব্ধ জনতা হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এ সময় মিজানুর রহমান জেনারেটর চুরি করে নিয়ে যাচ্ছেন—এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে মিজানুরকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হয়। মিজানুরকে দরবারে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, লাশ পোড়ানো ও হত্যার ঘটনায় হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁকে রাজবাড়ীর আদালতে সোপর্দ করার প্রস্তুতি চলছে।

আরও পড়ুননুরাল পাগলার দরবারে হামলায় হত্যা মামলা, মসজিদের ইমামসহ চারজন গ্রেপ্তার০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ওই দিন পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় উপপরিদর্শক (এসআই) সেলিম মোল্লা বাদী হয়ে প্রায় তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করে ৬ সেপ্টেম্বর মামলা করেন। এই মামলায় মোট ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদিকে দরবারে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, হত্যা ও কবর থেকে লাশ তুলে মহাসড়কে পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় নিহত ভক্ত রাসেল মোল্লার বাবা আজাদ মোল্লা বাদী হয়ে ৮ সেপ্টেম্বর মামলা করেন। ওই মামলায় সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় এখন পর্যন্ত মিজানুরসহ নয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ