নির্ধারিত সময়ে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত না পেয়ে আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করতে ইশরাক হোসেনের গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে চতুর্থ কমিশন সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।

২৭ এপ্রিল ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে ইসি। পরদিন আইন উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচন কমিশন আমাদের মতামত চাইলেও মতামত দেওয়ার আগেই গেজেট প্রকাশ করেছে। গেজেট প্রকাশ করা যাবে নাকি আপিল করতে হবে সে বিষয় নিয়ে আমরা ভাবছিলাম। কেননা, মামলার ক্লেম পরিবর্তন করলে গেজেট প্রকাশ করা যায় না। তিনি (ইশরাক) তো ক্লেম পরিবর্তন করেছেন। 

বিষয়টি নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ইসি মো.

সানাউল্লাহ বলেন, ‘আমাদের ওপর বাধ্যবাধকতা ছিল ১০ দিনের মধ্যে এটা নিষ্পত্তি করার। আমরা নিষ্পত্তি করেছি। আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে মতামত চেয়েছিলাম। ২৫ এপ্রিল ছিল দশম দিন, ওইদিন ছিল শুক্রবার। আমরা দুই দিন সময় নিয়েছিলাম। রোববার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করেছি। যেহেতু রিপ্লাইটা পাই নাই, তাই আদালতের আদেশের যাতে ব্যত্যয় না হয়, সেজন্য আমরা সেটা বাস্তবায়ন করেছি।’

কেন আপিল করেননি- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা তো সংক্ষুব্ধ পার্টি নই। আদালতের রায়ে সংক্ষুব্ধ হলে আমরা আপিলে যেতাম। আদালত অন্য একটা ফলাফল বাতিল করে রায় দিয়েছেন। আমরা সেটা বাস্তবায়ন করেছি।’

২৭ মার্চ ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনের ফল বাতিল করে বিএনপি দলীয় মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেনকে বিজয়ী ঘোষণা করে রায় দেন ঢাকার আদালত। একইসঙ্গে ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপসকে মেয়র নির্বাচিত ঘোষণা করে সরকারের গেজেট বাতিল করা হয়। একই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনকে ১০ দিনের মধ্যে গেজেট প্রকাশ করার আদেশ দেন।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইশর ক হ স ন মত মত ইশর ক

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ