জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ছাত্র আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় ২৫৯ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ইতিহাস বিভাগের রয়েছে ১২ জন শিক্ষার্থী। বহিষ্কার তালিকায় প্রথম নাম হিসেবে গত সাত মাস আগে গণপিটুনিতে মারা যাওয়া ওই বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা শামীম মোল্লার নাম পাওয়া গেছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ বলছে, এটি প্রিন্টিং মিসটেক ও অসাবধানবশত ভুল। 

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ১৪ জুলাই, ১৫ জুলাই ও ১৭ জুলাই ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ ও বহিরাগত সন্ত্রাসী এবং পুলিশ হামলা চালায়। এতে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন প্রশাসন দায়িত্বে এসে সংঘটিত এসব হামলার তদন্তে একটি কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সভায় ২৫৯ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করে প্রশাসন। বহিষ্কৃতদের বিভাগভিত্তিক তালিকা তৈরি করে স্ব স্ব  বিভাগে চিঠি পাঠিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এরই ধারাবাহিকতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এবিএম আজিজুর রহমান স্বাক্ষরিত একটি বহিস্কারাদেশের চিঠি ইতিহাস বিভাগে পাঠানো হয়েছে। ওই তালিকায় বিভাগটির মোট ১২ জন শিক্ষার্থীর নাম পরিচয় উল্লেখ রয়েছে। 

এর মধ্যে প্রথম নামটি রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা মৃত শামীম মোল্লার নাম। যদিও ওই চিঠিতে শামীম মোল্লার নামের পাশে ব্রাকেটে মৃত লেখা রয়েছে। 

এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এবিএম আজিজুর রহমান বলেন, ‘সিন্ডিকেট থেকে প্রাপ্ত তালিকা শিক্ষা শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রস্তুত করে তার কাছে দিয়েছিলেন। ৩৭টি বিভাগে আলাদা আলাদা চিঠি স্বাক্ষর করতে গিয়ে অসাবধানতাবশত ভুল হয়েছে। চিঠিতে প্রিন্টিং মিসটেক হয়েছে। শামীম মোল্লার নামটি ভুলে এসেছে। তারা দ্রুত বিষয়টি ঠিক করে পুনরায় বিভাগে পাঠাবেন।’

প্রসঙ্গত, জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগে গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর একদল শিক্ষার্থী শামীম মোল্লাকে গণপিটুনি দেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে আশুলিয়া থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। হস্তান্তরের প্রায় দুই ঘণ্টা পর শামীম মোল্লা মৃত্যুবরণ করেন বলে জানা যায়। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছয় শিক্ষার্থীকে ছয় মাসের বহিষ্কার, ছয় মাসের জন্য দুইজনের সনদ স্থগিত এবং মামলা করে প্রশাসন। একই সঙ্গে অজ্ঞাত আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়। হত্যা মামলায় নাম উল্লেখ করা আটজন হলেন—মো.

আহসান লাবিব (৪৯তম ব্যাচ, বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং); রাজু আহমেদ (৪৫তম ব্যাচ, সরকার ও রাজনীতি); মো. মাহমুদুল হাসান রায়হান (৫০তম ব্যাচ, ইংরেজি); সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া (৫২তম ব্যাচ, ফার্মেসি); হামিদুল্লাহ সালমান (৪৯তম ব্যাচ, ইংরেজি); মো. আতিকুজ্জামান (৪৯তম ব্যাচ, ব্যবস্থাপনা); সোহাগ মিয়া (৪৭তম ব্যাচ, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং); মোহাম্মদ রাজন মিয়া (৪৬তম ব্যাচ, সরকার ও রাজনীতি)।

তাদের মধ্যে হামিদুল্লাহ সালমান ও মোহাম্মদ রাজন মিয়া ছাত্রদলের কর্মী, আর আহসান লাবিব ছিলেন বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী আন্দোলনের সমন্বয়ক, তবে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠার পর তাকে ওই পদ থেকে অপসারণ করা হয়। বাকি অভিযুক্তদের কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নেই।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জন শ ক ষ র থ

এছাড়াও পড়ুন:

শ্রমিকদের দাবির প্রেক্ষিতে খুলছে ৪ বন্ধ কারখানা

নয় দিন বন্ধ থাকার পর আগামীকাল মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) থেকে নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডের চারটি কারখানায় চালু হচ্ছে। 

বেতন, বোনাসসহ বিভিন্ন দাবি বাস্তবায়নে আন্দোলনের মুখে গত ২৫ অক্টোবর বিকেলে চারটি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।

আরো পড়ুন:

ঝিনাইদহে গাছ থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু 

বরিশালে অপসো ফার্মার ৫০০ শ্রমিক ছাঁটাইয়ের অভিযোগ

কারখানাগুলো হলো দেশবন্ধু টেক্সটাইল মিল লিমিটেড, সেকশন সেভেন ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, মেইগো বাংলাদেশ লিমিটেড ও ইপিএফ প্রিন্টিং লিমিটেড।

সেকশন সেভেন ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের পরিচালক আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘২৬ অক্টোবর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে শ্রমিকেরা কারখানা চালুর দাবি জানান। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে কারখানা চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমাদের কারখানায় সাড়ে ৩ হাজার শ্রমিক রয়েছে।’’ 

ইপিজেড সূত্র জানিয়েছে, বন্ধ চারটি কারখানায় সাড়ে ৬ হাজার শ্রমিক রয়েছে। 

উত্তরা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (ইপিজেড) নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল জব্বার জানান, শ্রমিকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) থেকে বন্ধ থাকা চার কারখানা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

এ দিন থেকে স্বাভাবিকভাবে কার্যক্রম শুরু হবে এবং শ্রমিকদের যথাসময়ে কারখানায় আসার আহ্বান জানানো হয়েছে।

উত্তরা ইপিজেডের ২৭টি কারখানায় ৩৫ হাজার শ্রমিক কর্মরত রয়েছে।

ঢাকা/সিথুন/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ