ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার রায়গ্রাম ইউনিয়নের একতারপুর গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সহযোগিতায় সরকারি গাছ কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাজন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, একতারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশ থেকে তিনটি পুরনো ও বড় আকৃতির গাছ কেটে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, রাজন বিশ্বাস বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সহযোগিতায় গাছগুলো কেটে নিয়ে গেছেন। গাছ গুলোর আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ২ লাখ টাকা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় ব্যক্তি জানান, তারা যখন এই স্কুলে পড়েন তখন এই গাছগুলো লাগিয়েছিলেন। গত শুক্রবার রাজন বিশ্বাস প্রধান শিক্ষকের সহায়তায় কয়েকজন মিলে গাছগুলো কেটে নিয়ে যান। তারা সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

এ বিষয়ে রাজন বিশ্বাস বলেন, “প্রধান শিক্ষক আমাকে গাছগুলো কাটতে বলেছেন। এই কারণেই আমি গাছগুলো কেটেছি।” 

গাছ বিক্রির টাকা প্রধান শিক্ষকের কাছে দিয়ে দিবেন বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে দিলু ব্যাপারী নামে স্থানীয় এক গাছ ব্যবসায়ী বলেন, “রাজন আমার কাছে এসেছিলেন গাছ কাটার জন্য শ্রমিক নেওয়ার বিষয়ে। আমি লোক পাঠিয়ে দিই, তারা গাছ কেটে চলে আসে। এরপর আমি আর কিছু জানি না।”

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুর ইসলাম বলেন, “বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) স্কুল ছুটি হওয়ার পর আমরা সবাই বাসায় চলে যাই। পরবর্তী দুই দিন স্কুল বন্ধ ছিল। রবিবার এসে দেখি স্কুলের পাশের গাছগুলো কে বা কারা কেটে নিয়ে গেছে। বিষয়টি আমার জানা ছিল না।”

রায়গ্রাম ইউনিয়নের ভূমি কর্মকর্তা আব্দুর রহমান বলেন, “গাছকাটার বিষয়টি আমি কিছুই জানিনা। কেউ আমাকে কিছু জানায়নি। আপনাদের মাধ্যমেই জানতে পারলাম।”

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেদারুল ইসলাম বলেন, “বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছি। সংশ্লিষ্ট বিভাগকে বিষয়টি জানিয়েছি।” 

ঢাকা/শাহরিয়ার/টিপু 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন ব শ ব স ব ষয়ট

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস

রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।

‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।

এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।

বর্ষার ফুলের উৎসব

বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!

রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।

এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ