Samakal:
2025-06-20@07:00:14 GMT

নাক চেপে ধরে ঢুকতে হয় শহরে

Published: 5th, May 2025 GMT

নাক চেপে ধরে ঢুকতে হয় শহরে

টাঙ্গাইল শহরের দুই প্রবেশপথ বাইপাস রাবনা ও কাগমারী। দুই এলাকায় এলেই কটু দুর্গন্ধ নাকে আসে। কারণ দুই জায়গায়ই রয়েছে ময়লার ভাগাড়। ফলে এ এলাকা দিয়ে শহরে ঢুকতে হলে নাকে রুমাল চেপে ধরতে হয়। দীর্ঘদিন ধরে এভাবে খোলা স্থানে শহরের ময়লা-আবর্জনা ফেলায় এলাকার পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য হুমকিতে রয়েছে। দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ স্থানীয় বাসিন্দা ও পথচারীরা।
১৮৮৭ সালের ১ জুলাই প্রতিষ্ঠিত হয় টাঙ্গাইল পৌরসভা। এর পর পার হয়েছে ১৩৮ বছর। আজও গড়ে তোলা হয়নি ময়লা-আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট স্থান। নেই আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনাও। ফলে মহাসড়কের পাশে যত্রতত্রভাবে ফেলা হচ্ছে আবর্জনা। পৌরসভার বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবি, এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হবে। কিন্তু আজও তাদের সে দাবি পূরণ হয়নি।
বাইপাস রাবনা ও কাগমারী এলাকায় যেভাবে বর্জ্য ডাম্পিং করা হয়, তাতে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে বলে মনে করেন পরিবেশবাদী সংগঠন বেলার বিভাগীয় সমন্বয়কারী গৌতম চন্দ্র চন্দ। তিনি বলেন, পৌরসভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা খুবই দুর্বল। শহরের প্রবেশপথে ময়লা ফেলার কারণে জীববৈচিত্র্যসহ পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। পৌরসভার নিজস্ব জায়গায় ডাম্পিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষায় আইনের প্রয়োগও দরকার। পরিবেশ পরিচ্ছন্ন করে স্বাস্থ্যবান্ধব করতে পৌরসভাকে মূল ভূমিকা নিতে হবে।
রাবনা বাইপাস এলাকার আসিফ হোসেন নামে স্কুলছাত্রের ভাষ্য, ‘এখান দিয়ে স্কুলে যাওয়ার সময় দুর্গন্ধে পেট ফুলে যায়। বাতাসের সঙ্গে আসা দুর্গন্ধ বাড়িতেও পাওয়া যায়।’ জায়গাটিতে ময়লা না ফেলতে সবার প্রতি অনুরোধ তার। একই এলাকার দোকানি সরোয়ার হোসেন বলছিলেন, ময়লার জন্য দোকানে গ্রাহক আসতে চান না। খাবারে মাছি বসে। ব্যবসা করা কষ্টকর হয়ে গেছে। তবুও পেটের দায়ে দুর্গন্ধের সঙ্গে থাকতে হচ্ছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়কের রাবনা বাইপাস এলাকায় ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। শহর থেকে পৌরসভার ভ্যানে করে খোলা স্থানে এসব ফেলা হচ্ছে। জেলার উত্তরের ছয় উপজেলার মানুষ শহরে এ সড়ক দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করেন। যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের দুর্গন্ধে নাকে রুমাল চেপে থাকতে দেখা যায়। পথচারীরা দ্রুত জায়গাটি পার হচ্ছিলেন। ময়লার মধ্যে পশুর মরদেহও পড়ে থাকতে দেখা যায়।
এর মধ্যেই টোকাইরা বিক্রির উপযোগী সামগ্রী খুঁজছিলেন মনোযোগ দিয়ে। কাগমারী শ্মশানঘাটের উত্তর দিকে ফেলা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা। নাগরপুরসহ দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ এ সড়কে যাতায়াত করেন। মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকারি এমএম আলী কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের পথও এটি। দুর্গন্ধে তারাসহ স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেনের ভাষ্য, ‘আমাদের কি যে খারাপ লাগে, সেটি বলে বোঝোতে পারব না। ঘরে থাকা, রান্না ও খাওয়া কিছুই তৃপ্তি সহকারে করতে পারি না। আমরা অনেকবার বলেছি, কোনো লাভ হয়নি।’ এ সড়কে অটোরিকশা চালান সাহেব আলী। তিনি বলেন, ‘দুর্গন্ধে অবস্থা ভয়াবহ। যাত্রীরা উঠতে চান না।’ লেবু মিয়া নামে এক যাত্রী বলছিলেন, শহরে প্রবেশের মূল সড়কে এমন ভাগাড় অশোভনীয়।’ আর আফজাল হোসেন জানান, এ সড়কে চলাচলের সময় তাঁর শ্বাসকষ্ট হয়।
ময়লার ভাগাড় পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স এবং রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক ড.

সাইফুল্লাহ বলেন, উন্মুক্ত স্থানে বর্জ্য ফেলার কারণে দুর্গন্ধ ও রোগ-জীবাণু ছড়ায়। এখানকার মাটি উর্বরতা হারাচ্ছে। প্লাস্টিক বর্জ্য নালায় ঢুকে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করছে।
খোলা স্থানের ময়লা-আবর্জনা থেকে শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি ও ফুসফুসের জটিল রোগ হতে পারে। বায়ুদূষণের কারণে এলার্জি এবং অ্যাজমার সমস্যা প্রকট হচ্ছে। ফুসফুসের কার্যক্ষমতা ধীরে ধীরে কমে যেতে পারে। এসব তথ্য জানিয়ে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরপি) নজরুল ইসলাম কনক বলেন, এসব স্থান থেকে রোগ-জীবাণু বাতাসের মাধ্যমে মানুষ ও পাখ-পাখালির মধ্যে ছড়ায়। বাতাসে ভারী ধাতু ছড়িয়ে শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে দেহে প্রবেশ করছে। ফলে লিভার-কিডনির রোগ, ক্যান্সারের ঝুঁকিও বেড়ে যাচ্ছে।
বিষয়টি নজরে এসেছে বলে জানান পৌরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক শিহাব রায়হান। তিনি বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য সরকারের কাছে জায়গা চাওয়া হয়েছে। আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার প্রকল্পও হাতে নেওয়া হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরে কাজ শুরু হবে। দ্রুত ভোগান্তি লাঘবের পাশাপাশি শহরের বাসিন্দারা আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পাবেন বলে আশা তাঁর।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ময়ল র স ত প প রসভ র পর ব শ প রব শ ময়ল র এ সড়ক শহর র

এছাড়াও পড়ুন:

ইংল্যান্ড সিরিজে ভারতের ৩–১ ব্যবধানে জয় দেখছেন টেন্ডুলকার

এবার ভারতের পক্ষে বাজি ধরা কঠিনই হওয়ার কথা। দলে নেই বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা, রবিচন্দ্রন অশ্বিনের মতো ক্রিকেটার। নেই চেতেশ্বর পূজারা, রাহানেরাও। ১৩ বছর পর পূজারা-কোহলি-রোহিত-রাহানে-অশ্বিন ছাড়া টেস্টে নামবে ভারত। মানে নতুন যুগের সূচনা করতে যাচ্ছে দলটি।

তবু ইংল্যান্ডের মাটিতে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ৩-১ ব্যবধানে ভারতের জয় দেখছেন কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকার। ক্রিকেটবিষয়ক পোর্টাল ইএসপিএনক্রিকইনফোকে বৃহস্পতিবার দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেছেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক শচীন ২০০৭ সালে রাহুল দ্রাবিড়ের নেতৃত্বে ইংল্যান্ডে ভারতের শেষ সিরিজ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। এবার নেতৃত্বে শুবমান গিল। তাঁর এই দল নিয়ে টেন্ডুলকার আশাবাদী। কিংবদন্তি ভারতের জয় নিয়ে বলেছেন, ‘আমি ৩-১ ব্যবধানে ভারতের পক্ষেই সিরিজের ফল ধরে রেখেছি।’

আমার পরামর্শ থাকবে—বাইরের কে কী বলছে, সেসব নিয়ে ভাবার দরকার নেই। শুবমান আক্রমণাত্মক, না রক্ষণাত্মক, না সে যথেষ্ট তৎপর—এসব শুধু মতামত। এসব দলের বাইরে থাকা লোকজনের মতামত।শচীন টেন্ডুলকার

শচীনের বাজি যেমন ভারতের পক্ষে তেমনি ইংল্যান্ডের সাবেক দুই ক্রিকেটার নাসের হুসেইন ও গ্রায়েম সোয়ানেরও বাজি ইংল্যান্ডের পক্ষে। নাসের এই সিরিজে ইংল্যান্ডের ৩-১ ব্যবধানে ও সোয়ান ৪-১ ব্যবধানে জয় দেখছেন।

আরও পড়ুনজিএসএলের সঙ্গে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা সিরিজের সংঘাত, রংপুরের দলে কে আছেন কে নেই২ ঘণ্টা আগে

পাঁচ টেস্টের এই সিরিজ ভারত খেলবে শুবমান গিলের নেতৃত্বে। মাত্র ২৪ বছর বয়সে ভারতের টেস্ট দলের অধিনায়ক হয়েছেন গিল। গত ২৪ মে তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন টেস্ট অধিনায়ক ঘোষণা করে বিসিসিআই।

নতুন অধিনায়ক গিলকে পরামর্শ দিয়েছেন টেন্ডুলকার, ‘আমার পরামর্শ থাকবে—বাইরের কে কী বলছে, সেসব নিয়ে ভাবার দরকার নেই। শুবমান আক্রমণাত্মক, না রক্ষণাত্মক, না সে যথেষ্ট তৎপর—এসব শুধু মতামত। এসব দলের বাইরে থাকা লোকজনের মতামত। ওর ভাবার বিষয় হলো, ড্রেসিংরুমে যেটা আলোচনা হয়েছে সেটা মাঠে বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না। সিদ্ধান্তগুলো দলের স্বার্থকে সামনে রেখেই নেওয়া হচ্ছে কি না—সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।’

অ্যান্ডারসন–টেন্ডুলকার ট্রফি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ