যৌন হয়রানি: আইসিসির প্রধান প্রসিকিউটর বাধ্যতামূলক ছুটিতে
Published: 19th, May 2025 GMT
নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) চিফ প্রসিকিউটর করিম খানকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
তার বিরুদ্ধে যতদিন যৌন হয়রানির অভিযোগের তদন্ত শেষ না হবে ততোদিন দায়িত্বে থাকবেন না তিনি। এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আদালত।
সোমবার (১৯ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলু।
আরো পড়ুন:
গাজায় ইসরায়েলের তীব্র অভিযানের নিন্দা জাতিসংঘ প্রধানের
কলম্বিয়ায় নতুন করে ৬৬ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত: জাতিসংঘ
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রধান প্রসিকিউটরের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের অভ্যন্তরীণ তদারকি পরিষেবা অফিসের (ওআইওএস) তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি ছুটিতে থাকবেন।
গতকাল রবিবার আইসিসির অ্যাসেম্বলি অব স্টেটস পার্টিজ-এর প্রেসিডেন্সি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, প্রসিকিউটরের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত ওআইওএস কর্তৃক অ্যাসেম্বলির প্রেসিডেন্সির অনুরোধে, অ্যাসেম্বলির ব্যুরোর সঙ্গে পরামর্শ করার পর পরিচালনা করা হচ্ছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, করিম খানের অনুপস্থিতিতে তার দায়িত্ব ডেপুটি প্রসিকিউটররা পালন করবেন। জোর দিয়ে বলা হয়েছে, আদালত স্বাভাবিকভাবে এবং কোনো বাধা ছাড়াই তার কাজ চালিয়ে যাবে।
এতে আরো বলা হয়েছে, তদন্ত রোম সংবিধান এবং আদালতের আইনি কাঠামো অনুসারে স্বচ্ছভাবে পরিচালিত হবে।
২০২৪ সালের মে মাসে, আইসিসির দুই কর্মী আদালতের স্বাধীন তদারকি সংস্থার কাছে খানের আচরণ সম্পর্কে অভিযোগ দায়ের করেন।
যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং তার প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চাওয়ার কয়েকদিন আগেই এই ঘটনা ঘটে।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের মতে, ২০২১ সাল থেকে আইসিসির প্রধান প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করা করিম খানের বিরুদ্ধে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে নিউ ইয়র্কের একটি হোটেলে একজন নারী সহকারীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনা হয়েছে।
তার আইনজীবীরা সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, এগুলো ‘স্পষ্টতই অসত্য’।
৫৫ বছর বয়সী ব্রিটিশ আইনজীবী করিম খানের অনুরোধেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামনি নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন আইসিসি।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর ম খ ন আইস স র তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
বিচারকের সঙ্গে অসদাচরণ: বিএনপিপন্থি ৪ আইনজীবীকে শোকজ
হত্যাচেষ্টা মামলায় আসামিকে জামিন না দেওয়ায় বিচারকের সঙ্গে অসদাচরণ করায় বিএনপিপন্থি চার আইনজীবীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম।
তারা হলেন- ফোরামের ঢাকা বার ইউনিটের আহ্বায়ক খোরশেদ আলম, ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাধারণ সম্পাদক আব্দুল খালেক মিলন, ফোরামের সদস্য মো. জাবেদ ও এস এম ইলিয়াস হাওলাদার।
রোববার ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সহদপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ জিয়াউর রহমানের সই করা নোটিশে বলা হয়, ‘শনিবার ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের একজন ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে আপনারা অপেশাদার আচরণ করেছেন বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। এ কারণে কেন আপনাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, আগামী তিন দিনের মধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও মহাসচিবের কাছে তা লিখিতভাবে জানাতে বলা হলো।
শনিবার ঢাকার জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুনাইদের আদালতে হত্যাচেষ্টা মামলায় আসামির জামিন শুনানির সময় বিচারকের সঙ্গে অসদাচরণের ঘটনা ঘটে। জামিন না দেওয়ায় ‘আওয়ামী লীগের দালাল’ তকমা দিয়ে গালিগালাজ করেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা।
জানা যায়, কেরানীগঞ্জ মডেল থানার একটি হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি হানিফ মেম্বার গত ১২ মে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। বিচারক ওই আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বৃহস্পতিবার তার জামিন চেয়ে আবেদন করেন আইনজীবী। শনিবার ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারক নামঞ্জুরের পর গালিগালাজ ও অসদাচরণের ঘটনা ঘটে।
সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘কেরানীগঞ্জ মডেল থানার হত্যাচেষ্টা মামলায় হানিফ মেম্বার নামের এক আসামির জামিন শুনানির দিন ধার্য ছিল। খোরশেদ আলমসহ কয়েকজন আইনজীবী জামিন শুনানি করলে আদালত তা নামঞ্জুর করেন। পরে আইনজীবীরা স্যারের সঙ্গে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। ফ্যাসিবাদের দোসর, দালাল বলেন। আদালতের কজলিস্ট ছুড়ে ফেলে দেন। তারা বিচারকের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন, হুমকি দেন।’
এ বিষয়ে ঢাকার জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুনাইদের সঙ্গে আসামিপক্ষের আইনজীবীদের একটি কথোপকথনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খোরশেদ আলম বিচারককে বলছেন, ঘটনার তারিখ, সময়, ঘটনাস্থল সেইম। দুইটা মামলা, এটা হয় না কি? এরপর এজলাস ত্যাগ করেন বিচারক।
তবে এ ঘটনার সময় কয়েকজন আইনজীবী আদালত কক্ষে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় আবদুল খালেক মিলন এবং অন্যরা বিচারকের সঙ্গে উচ্চস্বরে কথা বলেন। এক আইনজীবী ধমকের সুরে বলেন, ‘চুপ।’ তারা বিচারককে বলেন, ‘আপনি আওয়ামী লীগের দালাল।’ পরে বিচারককে গালাগাল করেন তারা।
এদিকে যে আসামির জন্য বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা জামিন চেয়েছিলেন, সেই আসামি হানিফ মেম্বার স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা বলে জানা গেছে। গত ৬ মে ফজলুল হক নামের এক ব্যক্তি হানিফ মেম্বারসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় ৭০-৮০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন।