ভৈরবে ছিনতাইয়ের প্রতিবাদে সভা, ঠিক তখনই আরেক ছিনতাইয়ের ঘটনা
Published: 23rd, May 2025 GMT
ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে ট্রাকচালক মো. সজীব (২২) নিহত হওয়ার প্রতিবাদে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে আয়োজিত সভার মাঝেই সামনে এল আরেকটি ছিনতাইয়ের ঘটনা। আজ শুক্রবার সভা চলাকালে এক নারী হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে ছুটে এসে জানান, কিছুক্ষণ আগেই তিনি ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন।
ভুক্তভোগী ফরিদা বানু (৪৫) বলেন, ‘আমার মাইয়ার গলায় সমস্যা। ভৈরবে ডাক্তার দেখাইতে আইছি। ব্রিজের কাছে কয়েকজন ছুরি নিয়া সামনে আইলো। তিন শ টাকা আর মোবাইল ছিনাইয়া লইয়া গেল। আমার সব নিয়া গেছে। অহন আমি কী করুম?’
ফরিদা বানুর বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার কুণ্ডা গ্রামে। তিনি মৃত নিদু মিয়ার স্ত্রী। আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভৈরব বাসস্ট্যান্ড এলাকায় নাগরিক সমাজের ব্যানারে আয়োজিত সভায় তিনি উপস্থিত হয়ে এ অভিযোগ করেন।
সভায় বক্তব্য দেন ভৈরব প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শামসুজ্জামান, টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আসাদুজ্জামান ফারুক, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আল মামুন, চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক তানভীর আহমেদ, নিরাপদ সড়ক চাই ভৈরব শাখার সাধারণ সম্পাদক মো.
বক্তারা বলেন, ভৈরব এখন ছিনতাইকারীদের অভয়ারণ্য হয়ে উঠেছে। দিনরাত সমানতালে চলছে ছিনতাই। শুধু টাকা ছিনিয়ে নেওয়াই নয়, ছুরিকাঘাতে মানুষকে জখম করাও এখন নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। গত বুধবার নিহত হন ট্রাকচালক মো. সজীব। তিনি প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গাড়ি থেকে নামতেই ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন। সভায় বক্তারা দ্রুত ছিনতাইকারীদের তালিকা প্রকাশ ও তাঁদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান। দাবি না মানা হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়।
নিহত সজীবের ভাই ইব্রাহিম মিয়া বলেন, ‘আমি ট্রাকে ছিলাম। ভাই প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে নামার কয়েক মিনিট পরই ছিনতাইকারী ব্যক্তিরা তাকে ঘিরে ধরে। সব দিয়ে দেওয়ার পরও তাকে ছুরিকাঘাত করে ফেলে রেখে যায়।’
প্রেসক্লাবের সদস্যসচিব সোহেলুর রহমান বলেন, ‘বাসস্ট্যান্ডে র্যাব অফিস থাকার পরও ভৈরবে ছিনতাই কমছে না। আমরা এখন সাধারণ মানুষই এগিয়ে আসব নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে।’
ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খন্দকার ফুয়াদ রুহানী বলেন, সজীব হত্যার ঘটনায় চারজনকে শনাক্ত করা হয়েছে, এর মধ্যে একজনকে আটক করা হয়েছে। টহল বাড়ানো হয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ছ নত ই
এছাড়াও পড়ুন:
জুভেন্টাস-বরুশিয়ার ৮ গোলের রোমাঞ্চকর ম্যাচে জয় পায়নি কেউ
উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের প্রথম রাতেই যেন ফুটবলপ্রেমীরা এক অসাধারণ ম্যাচের সাক্ষী হলো। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে তুরিনে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে জুভেন্টাস ও বরুশিয়া ডর্টমুন্ড ৪-৪ গোলে ড্র করেছে। ম্যাচের শেষ মুহূর্তে ডর্টমুন্ডের জয় যখন প্রায় নিশ্চিত, ঠিক তখনই জুভেন্টাসের নাটকীয় প্রত্যাবর্তনে সবাই হতবাক হয়ে যায়।
ম্যাচের নায়ক ছিলেন জুভেন্টাসের সেই খেলোয়াড় যাকে ক্লাব এই গ্রীষ্মে বিক্রি করে দিতে চেয়েছিল, দুসান ভ্লাহোভিচ। ২৫ বছর বয়সী এই সার্বিয়ান ফরোয়ার্ড বদলি হিসেবে নেমে যেন ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন। দুটি গোল করার পাশাপাশি ইংরেজ ডিফেন্ডার লয়েড কেলির গোলে সহায়তাও তিনিই করেছেন। নির্ধারিত সময়ের পরও যখন ডর্টমুন্ড ২-০ গোলে এগিয়ে ছিল, সেই অবস্থায় শেষ মুহূর্তে এই অবিশ্বাস্য ড্র নিশ্চিত করেন ভ্লাহোভিচ।
আরো পড়ুন:
এমবাপ্পের জোড়া গোলে চ্যাম্পিয়নস লিগে রিয়ালের রোমাঞ্চকর জয়
মেসির গোলে, অ্যাসিস্টে মায়ামির জয়
ম্যাচের শুরু থেকেই দুই দলের আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ চলতে থাকে। ৫২তম মিনিটে ডর্টমুন্ডের করিম আদেয়েমি বাম পায়ের শটে বক্সের বাইরে থেকে প্রথম গোলটি করে দলকে এগিয়ে দেন। এরপরই জুভেন্টাসের তরুণ তারকা কেনান ইলদিজ ডান দিক থেকে নেওয়া এক শটে বল জালে জড়িয়ে সমতা ফেরান। কিন্তু জুভেন্টাস সমর্থকদের এই আনন্দ খুব বেশি সময় স্থায়ী হয়নি। কারণ, মাত্র এক মিনিটেরও কম সময়ের মধ্যে আদেয়েমি আবার মাঠে ঝলসে ওঠেন এবং তার পাস থেকে ফেলিক্স এনমেচা বক্সের বাইরে থেকে ডর্টমুন্ডের দ্বিতীয় গোলটি করে বসেন।
ম্যাচের এমন টানটান উত্তেজনার মধ্যেই ৬৭তম মিনিটে ইলদিজ দুর্দান্ত একটি পাস বাড়িয়ে দেন ভ্লাহোভিচের দিকে। ভ্লাহোভিচ ডান পায়ের শটে সহজেই গোল করে স্কোর ২-২ করেন। এরপর আবার ডর্টমুন্ড এগিয়ে যায়। ৭৪তম মিনিটে ইয়ান কৌটো এবং ৮৬তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে বেনসেবাইনি গোল করেন। লয়েড কেলির হ্যান্ডবলের কারণে এই পেনাল্টি পেয়েছিল ডর্টমুন্ড। যখন মনে হচ্ছিল, ডর্টমুন্ড ৪-২ গোলে জয়ী হতে চলেছে, ঠিক তখনই ভ্লাহোভিচ জুভেন্টাসকে বাঁচিয়ে দিলেন।
ম্যাচের ৯০+৩ মিনিটে ডর্টমুন্ডের জয় যখন প্রায় নিশ্চিত, তখন পিয়ের কালুলুর ক্রস থেকে ভ্লাহোভিচ ৯০+৪ মিনিটে সরাসরি শটে গোল করে ব্যবধান ৪-৩ করেন। এবং নাটকীয়তার শেষ এখানেই নয়! ৯৬তম মিনিটে জুভেন্টাসের কেলি গোল করে বসেন এবং ৪-৪ সমতা ফেরান। শেষ পর্যন্ত এই সমতা নিয়েই শেষ হয় ম্যাচ।
দুই দলের এমন গোল উৎসব চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে এই নিয়ে সপ্তমবার ঘটল, যেখানে উভয় দলই অন্তত চারটি করে গোল করেছে।
এবারের লিগ-পর্বের নতুন নিয়ম অনুযায়ী, শীর্ষ আটটি দল সরাসরি শেষ ষোলোতে যাবে এবং পরের ১৬টি দল দুই লেগের প্লে-অফ খেলবে। সেই প্লে-অফ থেকে আরও আটটি দল শেষ ষোলোতে সুযোগ পাবে।
ঢাকা/আমিনুল