ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে ট্রাকচালক মো. সজীব (২২) নিহত হওয়ার প্রতিবাদে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে আয়োজিত সভার মাঝেই সামনে এল আরেকটি ছিনতাইয়ের ঘটনা। আজ শুক্রবার সভা চলাকালে এক নারী হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে ছুটে এসে জানান, কিছুক্ষণ আগেই তিনি ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন।

ভুক্তভোগী ফরিদা বানু (৪৫) বলেন, ‘আমার মাইয়ার গলায় সমস্যা। ভৈরবে ডাক্তার দেখাইতে আইছি। ব্রিজের কাছে কয়েকজন ছুরি নিয়া সামনে আইলো। তিন শ টাকা আর মোবাইল ছিনাইয়া লইয়া গেল। আমার সব নিয়া গেছে। অহন আমি কী করুম?’
ফরিদা বানুর বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার কুণ্ডা গ্রামে। তিনি মৃত নিদু মিয়ার স্ত্রী। আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভৈরব বাসস্ট্যান্ড এলাকায় নাগরিক সমাজের ব্যানারে আয়োজিত সভায় তিনি উপস্থিত হয়ে এ অভিযোগ করেন।

সভায় বক্তব্য দেন ভৈরব প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শামসুজ্জামান, টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আসাদুজ্জামান ফারুক, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আল মামুন, চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক তানভীর আহমেদ, নিরাপদ সড়ক চাই ভৈরব শাখার সাধারণ সম্পাদক মো.

আলাল উদ্দিন প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, ভৈরব এখন ছিনতাইকারীদের অভয়ারণ্য হয়ে উঠেছে। দিনরাত সমানতালে চলছে ছিনতাই। শুধু টাকা ছিনিয়ে নেওয়াই নয়, ছুরিকাঘাতে মানুষকে জখম করাও এখন নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। গত বুধবার নিহত হন ট্রাকচালক মো. সজীব। তিনি প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গাড়ি থেকে নামতেই ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন। সভায় বক্তারা দ্রুত ছিনতাইকারীদের তালিকা প্রকাশ ও তাঁদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান। দাবি না মানা হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়।

নিহত সজীবের ভাই ইব্রাহিম মিয়া বলেন, ‘আমি ট্রাকে ছিলাম। ভাই প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে নামার কয়েক মিনিট পরই ছিনতাইকারী ব্যক্তিরা তাকে ঘিরে ধরে। সব দিয়ে দেওয়ার পরও তাকে ছুরিকাঘাত করে ফেলে রেখে যায়।’

প্রেসক্লাবের সদস্যসচিব সোহেলুর রহমান বলেন, ‘বাসস্ট্যান্ডে র‍্যাব অফিস থাকার পরও ভৈরবে ছিনতাই কমছে না। আমরা এখন সাধারণ মানুষই এগিয়ে আসব নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে।’

ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খন্দকার ফুয়াদ রুহানী বলেন, সজীব হত্যার ঘটনায় চারজনকে শনাক্ত করা হয়েছে, এর মধ্যে একজনকে আটক করা হয়েছে। টহল বাড়ানো হয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ছ নত ই

এছাড়াও পড়ুন:

থ্রিলারে ভরা ম্যাচ জিতে সেমিফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদ

ভোররাতে নিউ জার্সির মেটলাইফ স্টেডিয়ামে যেন ফুটবলপ্রেমীরা এক রূপকথার ম্যাচ প্রত্যক্ষ করলেন। রিয়াল মাদ্রিদ ও বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের কোয়ার্টার-ফাইনাল ম্যাচটি ছিল যেন নাটক। যেখানে প্রতিটি দৃশ্য ছিল টানটান উত্তেজনায় ভরা। অভিনয়ে যার মূল নায়ক কিলিয়ান এমবাপে ও থিবো কোর্তোয়া। শেষের রুদ্ধশ্বাস মুহূর্তে ৩-২ গোলের জয় নিয়ে ক্লাব বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পা রাখল রিয়াল।

শুরুটা হয়েছিল স্বপ্নের মতো। মাত্র দশ মিনিটেই গোল করে রিয়ালকে এগিয়ে দেন গন্সালো গার্সিয়া। যুব দল থেকে উঠে আসা এই ফরোয়ার্ড প্রমাণ করছেন, বড় মঞ্চে খেলতে হলে কেবল নাম নয়, দরকার সাহস ও স্কিলে ভরপুর পারফরম্যান্স। এরপর ফ্রান গার্সিয়ার নিখুঁত ফিনিশিংয়ে দ্বিগুণ হয় ব্যবধান। প্রথমার্ধে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে থাকা রিয়াল যেন তখনই লিখে ফেলেছিল জয়গাঁথা।

তবে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড হাল ছাড়ার দল নয়। দ্বিতীয়ার্ধে তারা গতি বাড়ায়, চাপ বাড়ায়। কিন্তু রিয়াল গোলরক্ষক কোর্তোয়া তখনো ছিলেন অটল প্রহরীর মতো। কোচের পরিবর্তনের সিদ্ধান্তে মাঠে নামেন এমবাপে, যিনি আবারো প্রমাণ করেন কেন তিনি বিশ্বের সেরা ফরোয়ার্ডদের একজন।

আরো পড়ুন:

দারুণ জয়ে সিরিজে সমতা আনল বাংলাদেশ

টেস্ট অধিনায়কত্ব ছাড়লেন শান্ত 

কিন্তু গল্পে মোড় আসে যোগ করা সময়ে। আন্টোনিও রুডিগারের ভুলে গোল করে ম্যাচে উত্তেজনার স্রোত ফেরায় ডর্টমুন্ড। কিন্তু আশার আলো নিভিয়ে দিতে বেশি সময় নেননি এমবাপে। ওভারহেড কিকে দুর্দান্ত এক গোল করে আবারো রেয়ালকে এগিয়ে দেন ৩-১ গোলে।

এরপর ঘটে আরও এক নাটকীয়তা। ডিন হাউসেনের লাল কার্ড এবং ডর্টমুন্ডের পেনাল্টি গোল। স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৩-২। তখনও এক মিনিট বাকি। ঠিক তখনই মার্সেল সাবিৎজারের জোরালো শট ফিরিয়ে রিয়ালকে বাঁচান কোর্তোয়া। যিনি এদিন গোলবারে ছিলেন সত্যিকারের সুপারহিরো।

রেফারির শেষ বাঁশির সঙ্গে সঙ্গে ডর্টমুন্ডের হতাশা আর রিয়ালের উল্লাস মিশে যায় রাতের আকাশে। থ্রিলার ম্যাচ শেষে রিয়াল মাদ্রিদ এখন ফাইনালে ওঠার লক্ষ্যে লড়বে চ্যাম্পিয়নস লিগজয়ী পিএসজির বিপক্ষে, বুধবার দিবাগত রাতে।

  ঢাকা/আমিনুল/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যুগের পর যুগ রিয়ার নামটা থাকবে: উপদেষ্টা শারমীন মুরশিদ
  • থ্রিলারে ভরা ম্যাচ জিতে সেমিফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদ