হবিগঞ্জ পৌর পানি শোধনাগারের একটি পাম্প বিকল হয়ে সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ফলে পানি সংকটে ভুগছে জেলা সদরের প্রায় আড়াই হাজার পরিবার।
গত বুধবার বজ্রপাতের সময় জেলা সদরের বেবিস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থিত হবিগঞ্জ পৌর পানি শোধনাগারের পাঁচটি পাম্পের মধ্যে একটিতে আগুন ধরে বিকল হয়ে যায়। এ ঘটনার পর থেকেই গ্রাহক পর্যায়ে পানি সরবরাহে ভাটা পড়ে।
পৌরসভা কর্তৃপক্ষ সাত দিন ধরে পাম্পটি সচল করেনি বিধায় এসব পরিবারের পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ করতে পারছে না। এমন পরিস্থিতিতে বাসাবাড়িতে রান্নাবান্না, গোসলসহ দৈনন্দিন কাজে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পৌরবাসীকে।
শহরের পুরোনো মুন্সেফি কোয়ার্টারের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, হবিগঞ্জ পৌরসভা রোজ সকাল-বিকেল দুই বেলা পানি সরবরাহ করে থাকে। গত এক সপ্তাহ ধরে অল্প পরিমাণে পানি দেওয়া হচ্ছে। ফলে গোসলসহ বাসার কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। অনেককেই পুকুরে গিয়ে গোসল করতে হচ্ছে।
আরেক বাসিন্দা রবিউল ইসলাম বলেন, একটি পাম্প মেরামত করতে যদি সাত দিন পার হয়ে যায়, তাহলে আরও কয়েকটি যদি বিকল হতো কতদিন লাগত। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার জন্যই এমনটা হচ্ছে।
আছিয়া আক্তার নামে এক গৃহিণী বলেন, পৌরসভার পানি দিয়েই যাবতীয় কাজ সারতে হয়। এখন পানি এলেও তা পর্যাপ্ত নয়। যে কারণে কিছুই করা যাচ্ছে না। দৈনন্দিন কাজের জন্য যে পরিমাণ পানি প্রয়োজন, তার অর্ধেকের কম পানি দিচ্ছে পৌরসভা।
এ বিষয়ে হবিগঞ্জ পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী (পানি ও পয়ঃ) মোহাম্মদ আব্দুল কুদ্দুস বলেন, বেবিস্ট্যান্ড এলাকার পৌর পানি শোধনাগারে পাঁচটি পাম্পের মধ্যে একটি বজ্রপাতে বিকল হয়ে যাওয়ায় ২ হাজার ৪০০ পরিবারের মধ্যে পানি সরবরাহে কিছুটা ঘাটতি দেখা দিয়েছে। সেটি মেরামতের চেষ্টা করা হচ্ছে। আশা করছি, দ্রুত মেরামত কাজ শেষ হবে। এর পর আর পানির সংকট থাকবে না।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশে আতঙ্ক-উত্তেজনা, ট্রাম্প আসলে কী চান
যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর ভাইস অ্যাডমিরাল রিচার্ড কোরেল ভেবেছিলেন, দেশটির পারমাণবিক বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে তাঁর নিয়োগ নিশ্চিত হওয়া নিয়ে গত বৃহস্পতিবার শুনানি সহজভাবেই শেষ হবে। তবে তাঁর সাক্ষ্য গ্রহণের আগের দিন বুধবার রাত ৯টা ৪ মিনিটে সে আশা ভেঙে গেছে।
ওই সময় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘোষণা দিয়ে বিশ্বকে চমকে দেন। বলেন, তিনি মার্কিন বাহিনীকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা অবিলম্বে শুরু করতে বলেছেন। তাঁর যুক্তি, যুক্তরাষ্ট্র এ ক্ষেত্রে রাশিয়া ও চীনের পেছনে থাকতে পারে না।
ট্রাম্প বলেন, ‘পারমাণবিক অস্ত্রে রাশিয়া দ্বিতীয় এবং চীন বেশ দূরে তৃতীয় অবস্থানে। কিন্তু দেশটি পাঁচ বছরের মধ্যে আমাদের সমপর্যায়ে উঠে আসতে পারে।’
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সিনেটে সশস্ত্র বাহিনী কমিটির প্রায় ৯০ মিনিটের শুনানিতে ট্রাম্পের মন্তব্য নিয়ে বারবার কোরেলকে প্রশ্ন করা হয়। ট্রাম্পের মন্তব্যে অনেক আইনপ্রণেতাই এ সময় ছিলেন বিভ্রান্ত। এ থেকে বোঝা যায়, রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ওয়াশিংটন ও এর বাইরে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন।
মার্কিন কর্মকর্তারা পরিষ্কার করেননি যে ট্রাম্প পারমাণবিক অস্ত্র সরবরাহ ব্যবস্থার পরীক্ষা করতে বলছেন, নাকি বিস্ফোরক পরীক্ষায় ৩৩ বছরের নিষেধাজ্ঞা শেষ করতে চাইছেন। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ট্রাম্পের নির্দেশ বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে ও প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়াতে পারে, যা শীতল যুদ্ধের ভয়ংকর স্মৃতি ফিরিয়ে আনে।কমিটির শীর্ষ ডেমোক্র্যাট সদস্য সিনেটর জ্যাক রিড কোরেলকে প্রশ্ন করেন, যুক্তরাষ্ট্র আবারও পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা শুরু করলে তা কি বিশ্বে পারমাণবিক অস্ত্রের প্রতিযোগিতা বাড়াবে এবং অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করবে।
কোরেল বলেন, ‘যদি আমাকে স্ট্র্যাটেজিক কমান্ডের (স্ট্র্যাটকম) কমান্ডার হিসেবে নিশ্চিত করা হয়, আমার কাজ হবে, পারমাণবিক পরীক্ষাবিষয়ক যেকোনো আলোচনা সম্পর্কে সামরিক পরামর্শ দেওয়া।’
ভাইস অ্যাডমিরাল কোরেলকে গত সেপ্টেম্বরে ট্রাম্প স্ট্র্যাটকমের প্রধান করার জন্য মনোনীত করেন। স্ট্র্যাটকম পারমাণবিক হামলা প্রতিরোধ ও আক্রমণের সক্ষমতা নিয়ে কাজ করে। কোরেল পুরো শুনানিতে সতর্কভাবে প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।
পারমাণবিক অস্ত্রে রাশিয়া দ্বিতীয় ও চীন বেশ দূরে তৃতীয় অবস্থানে। কিন্তু দেশটি পাঁচ বছরের মধ্যে আমাদের সমপর্যায়ে উঠে আসতে পারে।ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন প্রেসিডেন্টশুনানির এক পর্যায়ে স্বতন্ত্র সিনেটর অ্যাঙ্গাস কিং প্রশ্ন করেন, ট্রাম্প কি পারমাণবিক ডিভাইসের বিস্ফোরক পরীক্ষা নয়, বরং ক্ষেপণাস্ত্র বা অন্য সরবরাহ ব্যবস্থা পরীক্ষার কথা বলছেন কি না।
জবাবে কোরেল বলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্টের উদ্দেশ্য জানি না, তবে এটি এমন একটি ব্যাখ্যা হতে পারে, আমি তা মেনে নিই।’
দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে গত বৃহস্পতিবার মুখোমুখি বৈঠকে যোগ দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সি চিন পিং