মৃত স্বজনের সৎকার শেষে ফেরার পথে নিহত ৩, আহত ৪
Published: 30th, May 2025 GMT
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলায় মৃত স্বজনের সৎকার শেষে ইজিবাইক যোগে ফেরার পথে ট্রাকের ধাক্কায় দুই নারী ও এক শিশুসহ ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৪ জন।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বিকেলে দেবীগঞ্জ উপজেলার পৌর শহরের পাকুড়িতলা এলাকায় দেবীগঞ্জ-বোদা মহাসড়কে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে।
নিহতরা হলেন- বোদা উপজেলার সাকোয়া ইউনিয়নের নয়াদিঘী এলাকার তাপস কুমার রায়ের স্ত্রী শ্যামলী রাণী (৩০), দেবীগঞ্জ উপজেলার পামুলী ইউনিয়নের জোতভূবণপাড়া এলাকার অরুণ কুমার রায়ের স্ত্রী ভরসা রাণী (৩৫) ও একই উপজেলার দণ্ডপাল ইউনিয়নের রাজারহাট কালিগঞ্জ এলাকার হরেন্দ্র নাথ রায়ের মেয়ে দেবশ্রী রাণী (৭)।
আহতরা হলেন- দেবীগঞ্জ উপজেলার দেবীডুবা ইউনিয়নের লক্ষীর হাট এলাকার অজয় কুমার রায় (৬০), উপজেলার পামুলী ইউনিয়নের জোতভূবণ পাড়া এলাকার খোকা বাবু (৫০), বিমলা (৫০) ও দণ্ডপাল ইউনিয়নের রাজার হাট কালিগঞ্জ এলাকার সৌরভ (১১)।
পুলিশ ও স্থানীয়দের থেকে জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে দেবীগঞ্জ উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়নের ভাউলাগঞ্জ এলাকা থেকে মৃত স্বজনের সৎকার কাজ শেষে ইজিবাইকে ফিরছিলেন তারা। দেবীগঞ্জ পৌর এলাকার পাকুড়িতলায় পৌঁছালে বোদা থেকে দেবীগঞ্জগামী একটি ট্রাকের ধাক্কায় ইজিবাইকের চালকসহ ১০ যাত্রী মহাসড়কের পাশে ছিটকে পড়েন। এসময় ইজিবাইকের ৭ জন যাত্রী গুরুতর আহত হন। স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাদের উদ্ধার করে দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক শ্যামলী রাণীকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে গুরুতর আহত অন্য ৬ জনের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দেবশ্রী রাণী নামে এক শিশু ও ভরসা রাণী নামে এক নারীর মৃত্যু হয়।
দেবীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) প্রবীর কুমার রায় বলেন, ‘‘ঘটনার পরপরই পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা সেখানে ছুটে যান। ঘাতক ট্রাক নিয়ে চালক পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনায় থানায় একটি ইউডি মামলা দায়ের করা হয়েছে।’’
ঢাকা/নাঈম/টিপু
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
প্রথমবারের মতো চীনের বাজারে বাংলাদেশের আম
চীনের সঙ্গে নতুন বাণিজ্যিক সম্পর্কের সূচনা হয়েছে। দেশটিতে আম রপ্তানি শুরু করেছে বাংলাদেশ। প্রথম চালানে তিন টন আম বিমানের মাধ্যমে চীনের ছাং শা হুয়াং হুয়া বিমানবন্দরে পৌঁছেছে।
শনিবার (৩১ মে) দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জি মোমেন্টস এক এক্স বার্তায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
আম পৌঁছানোর পর বিমানবন্দর শুল্ক বিভাগের কর্মীরা প্যাকেজিং ও ফলের চেহারা কোয়ারেন্টিন পরিদর্শন করার পর ছাড়পত্র দেন।
এই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ থেকে চীন আম আমদানি করল। এই ঘটনা চীন-বাংলাদেশ কৃষিপণ্যের বাণিজ্যিক সহযোগিতার নতুন পথ পাড়ি দেওয়ার প্রতীক বলে মনে করা হচ্ছে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই চালানের আম চীনের ই-কর্মাস, সুপারমার্কেট ও তাজা খাদ্য চেইনের মতো চ্যানেলে বিক্রি করা হবে। এর আগে বাংলাদেশের আম প্রধানত মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে বিক্রি করা হতো।
এর আগে, প্রথম দফায় ২৮ মে বুধবার দুপুরে আমের চালান চীনে পাঠানো হয়। এ জন্য হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
গত কয়েক মাস আগে চীনে আম রপ্তানি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। কিছুদিন আগে এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে চুক্তি হয়। এ মৌসুমে সব মিলিয়ে ১০০ টন আম রপ্তানি হবে। প্রথম চালানে সাতক্ষীরা, যশোর অঞ্চলের আম রপ্তানি করা হলো। কয়েকজন রপ্তানিকারক মিলে ১০ টন আম রপ্তানি করেছেন বলে জানা গেছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, “প্রথম দফায় ঢাকা থেকে আম চীনে রপ্তানি হয়েছে। ধীরে ধীরে বাকি আমও রপ্তানি করা হবে।”
গত ২৮ এপ্রিল চীনের রাষ্ট্রদূত চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমের বাগান পরিদর্শন করেছিলেন। এরপরই আম রপ্তানির প্রক্রিয়া দ্রুত হয়।
চলতি বছর চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী উদযাপিত হলো। এ উপলক্ষে এই আম রপ্তানি একটি ভিন্ন মাত্রা যোগ হলো।
২০১৯ সালে চীনে আমসহ কিছু কৃষিপণ্য রপ্তানির অনুমোদন চেয়ে আবেদন করেছিল বাংলাদেশ। তবে করোনা সংক্রমণসহ নানা কারণে ছয় বছর পর দেশটিতে আম রপ্তানির উদ্যোগ সফল হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যানুসারে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশে আম উৎপাদিত হয়েছে ২৪ লাখ টন। এর মধ্যে রপ্তানি হয়েছে মাত্র ১ হাজার ৩২১ টন। বাংলাদেশ থেকে গত বছর ২১টি দেশে আম রপ্তানি করা হয়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, ইতালি ও সিঙ্গাপুরের পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের আরো কয়েকটি দেশ রয়েছে।
ঢাকা/হাসান/ইভা