ছোট্ট রদিয়ার লাল টুকটুকে জমা পরা ছবিটি এখন শুধুই স্মৃতি
Published: 31st, May 2025 GMT
চার বছরের ছোট্ট শিশু মোছা. রদিয়া আকতার (রুহি) নিখোঁজের কয়েক দিন আগে লাল টুকটুকে জামা পরে একটি ছবি তুলেছিল। ছবিটি এখন শুধুই স্মৃতি। নিখোঁজের ছয় দিন পর গতকাল শুক্রবার রাত ১১টার দিকে সেপটিক ট্যাংকে তার বস্তাবন্দী অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রদিয়া আকতারের বাড়ি জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার হেমাইল গ্রামে। সে ওই গ্রামের আবদুর রহমানের সাবেক স্ত্রীর সন্তান। এ ঘটনায় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সৎমাসহ তিনজনকে আটক করেছে।
আটক তিনজন হলেন নিহত রদিয়ার সৎমা সোনিয়া খাতুন, সৎমায়ের বাবা মো.
থানার পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রদিয়ার মা আরজিনা খাতুনের সঙ্গে তাঁর বাবা আবদুর রহমানের বিয়ে বিচ্ছেদ হয়েছে। সে মায়ের সঙ্গে একই গ্রামে নানার বাড়িতে থাকত। রদিয়ার বাবা পরে আবার বিয়ে করেন। রদিয়া নানার বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে যেত। গত ২৪ মে বেলা ১১টার দিকে বাবার বাড়িতে দাদিকে দেখতে যায়। এরপর সে আর নানার বাড়িতে ফিরেনি। পরের দিন রদিয়ার বাবা কালাই থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
রদিয়ার বাবা ও দাদার বাড়ির লোকজনের অভিযোগ, রদিয়ার মা ও নানার বাড়ির লোকজন তাকে গুম করেছে।
গতকাল শুক্রবার রাতে হঠাৎ করেই আবদর রহমানের বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল। শিশুটির স্বজন ও গ্রামবাসী সেপটিক ট্যাংকের ঢাকনা তুলে ভেতরে একটি বস্তা দেখতে পেয়ে থানার পুলিশকে খবর দেন। রাত ১১টার দিকে বস্তাবন্দী অবস্থায় নিখোঁজ শিশুটির অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়।
রদিয়ার মা আরজিনা খাতুন বলেন, ‘ওরা আমার মেয়েকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে। লাশ গুম করতে বস্তাবন্দী করে বাড়ির সেপটিক ট্যাংকে লুকিয়ে রাখে। পাপকাজ পাহাড়ে ঢাকা থাকে না। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।’
কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ হোসেন বলেন, নিখোঁজ শিশুটিকে হত্যার পর লাশ বস্তাবন্দী করে বাড়ির সেপটিক ট্যাংকের ভেতর রাখা হয়েছিল। পুলিশ জিডির সূত্র ধরে তথ্য উদ্ঘাটন করেছে। শিশুটিকে তিন-চার দিন আগে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। লাশটি গুম করতে সেপটিক ট্যাংকের ভেতর রাখা হয়েছিল। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ আটক তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দুই জাতীয় প্রতিযোগিতায় বিইউবিটির গৌরবোজ্জ্বল সাফল্য
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এন্ড টেকনোলজি (বিইউবিটি) সাম্প্রতিক সময়ে দুটি জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় অসাধারণ সাফল্য অর্জন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনামকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়েছে। শনিবার অনুষ্ঠিত ‘ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’ ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বিইউবিটির ডিবেটিং ক্লাব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। ফাইনাল পর্বে বিইউবিটি আনন্দ মোহন কলেজকে পরাজিত করে।
বিতর্কের বিষয় ছিল- ‘রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি করা আসন্ন বাজেটের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত।’ এই বিতর্কে বিইউবিটি বিরোধী দলের ভূমিকায় অংশগ্রহণ করে যুক্তিনিষ্ঠ বিশ্লেষণ, শক্তিশালী উপস্থাপন এবং বুদ্ধিদীপ্ত বক্তব্যের মাধ্যমে শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করে।
অন্যদিকে, শুক্রবার অনুষ্ঠিত ৭ম ওয়ার্ল্ড ইনভেনশন কমপিটিশন অ্যান্ড এক্সিবিশনের জাতীয় পর্বে বিইউবিটির কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী প্রকল্প ‘এগ্রো ডক্টর’ আইটি ও রোবোটিকস বিভাগে রৌপ্য পদক অর্জন করে।
৫১তম ব্যাচের তিনি শিক্ষার্থী ফজলে রাব্বী, কামরুল ইসলাম ও মো. সাকিলের উদ্ভাবিত প্রকল্প ‘এগ্রো ডক্টর’ প্রযুক্তিনির্ভর এমন একটি সমাধান, যা কৃষকদের ফসলের রোগ নির্ণয়ে সহায়তা করে। এটি অটোমেশন ও মেশিন লার্নিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে, টেকসই কৃষি ও সফল ফলনের নিশ্চয়তা প্রদান করে।
এই সাফল্যের পর বিইউবিটির উভয় দল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ বি এম শওকত আলীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে। উপাচার্য তাঁদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘এই অর্জনসমূহ শুধুমাত্র ব্যক্তিগত নয়, বরং বিইউবিটির সম্মান এবং বাংলাদেশের শিক্ষার গৌরব। আশা করি, বিইউবিটির তরুণেরা দেশ ও জাতির জন্য আরও সৃজনশীল ও দক্ষ নেতৃত্ব গড়ে তুলবে।’
ডিবেটিং ক্লাবের সদস্যরা বলেন, ‘এই জয় আমাদের যুক্তিবোধ, দলগত কাজ ও নেতৃত্বের একটি অনন্য প্রমাণ। আমরা ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক মঞ্চেও নিজেদের জায়গা করে নিতে চাই।’ অপরদিকে টিম ‘এগ্রো ডক্টর’- এর সদস্যরা বলেন, ‘আমাদের উদ্ভাবনী প্রযুক্তি দেশের কৃষি খাতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে পারে। এই সাফল্য আমাদের আরও উদ্ভাবনে উৎসাহিত করবে।’
বিইউবিটি ভবিষ্যতেও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিজেদের সক্ষমতা প্রমাণ করে বাংলাদেশকে গর্বিত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি