বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বরিশাল জেলা কমিটির মুখ্য সংগঠকসহ তিন নেতা সংগঠন থেকে পদত্যাগ করেছেন। আজ রোববার রাতে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তাঁরা পদত্যাগের ঘোষণা দেন। পদত্যাগের কারণ হিসেবে তাঁরা কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে তদবির, অপকর্ম ও চাঁদাবাজির অভিযোগ তোলেন। তাঁদের ভাষ্য, নানা কারণে সংগঠনটি গণবিরোধী প্ল্যাটফর্মে রূপ নিয়েছে।

পদত্যাগকারী তিন নেতা হলেন বরিশাল জেলার মুখ্য সমন্বয়ক হাসিবুল আলম (তুরান), যুগ্ম আহ্বায়ক তৌহিদুল ইসলাম (আবিদ) ও সদস্য তাহসিন আহমেদ (রাতুল)।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে হাসিবুল আলম বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নামে বিভিন্ন প্রকৌশল দপ্তরে গিয়ে ঠিকাদারি কাজ পেতে নেতারা তদবির করছেন। এমনকি তাঁর (হাসিবুল) নাম ব্যবহার করে জেলা কমিটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক মহসিন উদ্দিন চাঁদাবাজি ও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে হাসিবুল আলম বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশপন্থী নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত। কিন্তু পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন থেকে এসে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এ প্ল্যাটফর্মকে অনেকে বিতর্কিত করেছেন। সম্প্রতি গণমাধ্যমের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, আমার পরিচয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা শাখার জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক মহসিন উদ্দিন চাঁদাবাজি ও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়েছেন। কথিত কিছু নেতা-কর্মী দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের শ্রমজীবী মানুষের কাছে না গিয়ে বিভিন্ন সরকারি ও আমলাদের দপ্তরে গিয়ে ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তাঁরা দেশের মানুষকে সচেতন না করে পুরোনো রাজনৈতিক ধারায় আগ্রাসী, দখলবাজি, সাম্প্রদায়িক উসকানি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, মামলা–বাণিজ্য করে চলেছেন।’

হাসিবুল আলম বলেন, ‘আমাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত। যেখানে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষের অন্তর্ভুক্তিমূলক অংশগ্রহণ থাকবে এবং বাংলাদেশপন্থী রাজনৈতিক ধারার চর্চা হবে। কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সে উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে কাজ না করে বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছে, যা জুলাই অভ্যুত্থানের প্রত্যাশিত রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে পুরোপুরি সাংঘর্ষিক। এ কারণে সংগঠনটি একটি গণবিরোধী প্ল্যাটফর্মে রূপ নিয়েছে। তাই জুলাই শহীদ ও আহতদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি না করে পদত্যাগ করাকে যৌক্তিক মনে করেছি।’

অভিযোগের বিষয়ে জেলা শাখার জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক মহসিন উদ্দিন বলেন, ‘চাঁদাবাজির অভিযোগ সত্য নয়। পুলিশ কমিশনার ঘটনার তদন্ত করেছেন। তাতে চাঁদাবাজির অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার বাধাগ্রস্ত করতে এ ধরনের মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয়েছে।’

অভিযোগের বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বরিশাল জেলা আহ্বায়ক সাব্বির হোসেন বলেন, ‘চাঁদাবাজির অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমরা এখন পর্যন্ত কেউ তদবির করিনি। যদি কেউ গোপনে করে থাকে তবে তা ভিন্ন কথা। তাঁরা পদত্যাগের কথা আমাকে জানাননি। সংগঠনে অনিয়ম হয়ে থাকলে তাঁরা প্রতিবাদ করতে পারতেন। কিন্তু তা তাঁরা করেননি। এখন সংগঠন তাঁদের ভালো লাগছে না। তাই অভিযোগ দিয়ে এখন দল থেকে বের হয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ ভিত্তিহীন।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হ স ব ল আলম র জন ত ক পদত য গ বর শ ল স গঠন

এছাড়াও পড়ুন:

মতলবের দুই বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি-দখলদারির অভিযোগ, দল থেকে বহিষ্কার

চাঁদপুরের মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলার বিএনপির দুই নেতাকে দলের সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

চাঁদাবাজি, দখলদারি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ নানা ধরনের অপকর্মে লিপ্ত থাকার অভিযোগে ওই দুজনের বিরুদ্ধে এ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

বহিষ্কৃত নেতারা হলেন মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর পৌর বিএনপির সহসভাপতি আবদুল মান্নান লস্কর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া। এর মধ্যে মতলব উত্তরের আবদুল মান্নান লস্করকে চাঁদাবাজির মামলায় গত সোমবার রাতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি এখন কারাগারে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আবদুল মান্নান লস্কর ও আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়াকে চাঁদাবাজি, দখলদারি ও মানুষকে ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত থাকার অভিযোগে দলের প্রাথমিক সদস্যসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া ওই একই অভিযোগে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ইমাম হোসেন গাজীকেও দলের সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।  

এ ব্যাপারে চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহম্মেদের (মানিক) মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে মতলব উত্তর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল হক ও মতলব দক্ষিণ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলাম বলেন, ওই দুই নেতাকে বহিষ্কারের বিষয়টি জেনেছেন। তবে এ ব্যাপারে  চিঠি এখনো পাননি। যেকোনো বিষয়ে দলীয় সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। এটি অন্যান্য নেতার জন্যও একটি বার্তা ও শিক্ষা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মতলবের দুই বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি-দখলদারির অভিযোগ, দল থেকে বহিষ্কার
  • ছয় দফা দাবিতে ‘আমরা ভোলাবাসী’র আন্দোলন ‘সরকারি আশ্বাসে’ স্থগিত
  • নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছিল না, তাই কেন্দ্র ছাড়া সব কমিটি স্থগিত