অপকর্ম, চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে সংগঠন ছাড়লেন বরিশালের তিন নেতা
Published: 1st, June 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বরিশাল জেলা কমিটির মুখ্য সংগঠকসহ তিন নেতা সংগঠন থেকে পদত্যাগ করেছেন। আজ রোববার রাতে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তাঁরা পদত্যাগের ঘোষণা দেন। পদত্যাগের কারণ হিসেবে তাঁরা কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে তদবির, অপকর্ম ও চাঁদাবাজির অভিযোগ তোলেন। তাঁদের ভাষ্য, নানা কারণে সংগঠনটি গণবিরোধী প্ল্যাটফর্মে রূপ নিয়েছে।
পদত্যাগকারী তিন নেতা হলেন বরিশাল জেলার মুখ্য সমন্বয়ক হাসিবুল আলম (তুরান), যুগ্ম আহ্বায়ক তৌহিদুল ইসলাম (আবিদ) ও সদস্য তাহসিন আহমেদ (রাতুল)।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে হাসিবুল আলম বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নামে বিভিন্ন প্রকৌশল দপ্তরে গিয়ে ঠিকাদারি কাজ পেতে নেতারা তদবির করছেন। এমনকি তাঁর (হাসিবুল) নাম ব্যবহার করে জেলা কমিটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক মহসিন উদ্দিন চাঁদাবাজি ও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে হাসিবুল আলম বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশপন্থী নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত। কিন্তু পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন থেকে এসে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এ প্ল্যাটফর্মকে অনেকে বিতর্কিত করেছেন। সম্প্রতি গণমাধ্যমের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, আমার পরিচয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা শাখার জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক মহসিন উদ্দিন চাঁদাবাজি ও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়েছেন। কথিত কিছু নেতা-কর্মী দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের শ্রমজীবী মানুষের কাছে না গিয়ে বিভিন্ন সরকারি ও আমলাদের দপ্তরে গিয়ে ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তাঁরা দেশের মানুষকে সচেতন না করে পুরোনো রাজনৈতিক ধারায় আগ্রাসী, দখলবাজি, সাম্প্রদায়িক উসকানি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, মামলা–বাণিজ্য করে চলেছেন।’
হাসিবুল আলম বলেন, ‘আমাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত। যেখানে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষের অন্তর্ভুক্তিমূলক অংশগ্রহণ থাকবে এবং বাংলাদেশপন্থী রাজনৈতিক ধারার চর্চা হবে। কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সে উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে কাজ না করে বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছে, যা জুলাই অভ্যুত্থানের প্রত্যাশিত রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে পুরোপুরি সাংঘর্ষিক। এ কারণে সংগঠনটি একটি গণবিরোধী প্ল্যাটফর্মে রূপ নিয়েছে। তাই জুলাই শহীদ ও আহতদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি না করে পদত্যাগ করাকে যৌক্তিক মনে করেছি।’
অভিযোগের বিষয়ে জেলা শাখার জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক মহসিন উদ্দিন বলেন, ‘চাঁদাবাজির অভিযোগ সত্য নয়। পুলিশ কমিশনার ঘটনার তদন্ত করেছেন। তাতে চাঁদাবাজির অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার বাধাগ্রস্ত করতে এ ধরনের মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয়েছে।’
অভিযোগের বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বরিশাল জেলা আহ্বায়ক সাব্বির হোসেন বলেন, ‘চাঁদাবাজির অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমরা এখন পর্যন্ত কেউ তদবির করিনি। যদি কেউ গোপনে করে থাকে তবে তা ভিন্ন কথা। তাঁরা পদত্যাগের কথা আমাকে জানাননি। সংগঠনে অনিয়ম হয়ে থাকলে তাঁরা প্রতিবাদ করতে পারতেন। কিন্তু তা তাঁরা করেননি। এখন সংগঠন তাঁদের ভালো লাগছে না। তাই অভিযোগ দিয়ে এখন দল থেকে বের হয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ ভিত্তিহীন।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হ স ব ল আলম র জন ত ক পদত য গ বর শ ল স গঠন
এছাড়াও পড়ুন:
বাজুসের নতুন সভাপতি এনামুল হক খান
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনে (বাজুস) বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন ডায়মন্ড অ্যান্ড ডিভাস’র এনামুল হক খান। সংগঠনটির ২০২৫-২৬ এবং ২০২৬-২৭ মেয়াদের জন্য তিনি দায়িত্ব পালন করবেন ।
সোমবার (৩ নভেম্বর) রাজধানীর মগবাজারে বাজুস কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বাজুস নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান নাসরিন ফাতেমা আউয়াল ফলাফল ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, বৈধ প্রার্থীদের মধ্য থেকে কোনো প্রার্থী তাদের মনোনয়পত্র প্রত্যাহার না করায় বাণিজ্য সংগঠনের বিধিমালা-২০২৫ এর ২৪(১) ধারা মোতাবেক বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা নির্বাচনযোগ্য পদের সমান হওয়ায় ৩৫ জন প্রার্থীকে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে।
বাজুসের ২০২৫-২৬ এবং ২০২৬-২৭ মেয়াদের একজন সিনিয়র সহ-সহভাপতি, ৩ জন সহ-সভাপতি, একজন কোষাধ্যক্ষ এবং ২৯ জন পরিচালক নির্বাচিত হয়েছে। এদের সবাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক এখন থেকে আর কেউ থাকবেন না। ফলে সাধারণ সম্পদ পদে কেউ নির্বাচিত হননি। বাজুস প্রতিষ্ঠার পর এই প্রথম সাধারণ সম্পদ পদ বিলুপ্ত করা হলো।
বাজুসের নবনির্বাচিত সভাপতি এনামুল হক খান বলেন, আমরা সোনার ব্যবসা করি। মানুষকে বোঝাতে হবে ব্যবসায়ীরা কিন্তু চোরাকারবারী না। একটি আলোর পথ অন্যটি অন্ধকার পথ। আমরা আলোর পথে আছি। যারা চোরাকারবারী করে তারা কোনোদিন সোনা ব্যবসায় আসবে না। আর যারা সোনা ব্যবসা করে তারা কোনোদিন চোরাকারবারীতে জড়াবে না।
তিনি বলেন, আমাদের সোনা আমদানির প্রক্রিয়া সহজ করতে হবে। সোনা আমদানির ব্যবস্থা আছে, কিন্তু এতো কঠিন প্রক্রিয়া যে, এই কঠিন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সোনা আমদানি করতে গেলে যেই দাম দাঁড়ায়, সেই দাম দিয়ে কেউ সোনা কিনতে আগ্রহী না। আর এজন্য যতদিন সোনা আমদানি সহজ না হয়, ততোদিন পর্যন্ত ব্যাগেজ রুলসের মাধ্যমে সোনা যে সহজে আসতো, সেটা চালু করার জন্য আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করবো।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে ভ্যাট ৫ শতাংশ অথচ আমাদের পাশের দেশে ভ্যাট অনেক কম। আমরা ভ্যাট কমানোর জন্য কাজ করবো।
বাজুসের সিনিয়র সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন সানন্দা জুয়েলার্স (প্রা.) এর রনজিৎ ঘোষ, সহ-সভাপতি পদে আপন ডায়মন্ড হাউজের আজাদ আহমেদ, জড়োয়া হাউজ (প্রা.) লিমিটেডের অভি রায় এবং জেসিএক্স গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডের ইকবাল হোসেন চৌধুরী নির্বাচিত হয়েছেন। কোষাধ্যক্ষ পদে নির্বাচিত হয়েছেন নিউ ফেন্সী জুয়েলার্স’র অমিত ঘোষ।
বাজুসের পরিচালক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন মো. মিলন মিয়া, পবন কুমার আগোওরালা, তানভীর রহমান, মো. লিটন হাওলাদার, বাবুল দত্ত, গনেশ দেবনাথ, আশিস কুমার মন্ডল, মিনাজুর রহমান, বিকাশ ঘোষ, সুমন চন্দ্র দে, মোস্তাফা কামাল, ধনঞ্জয় সাহা (বিপুল), শ্রীবাস রায়, মো. আলী হোসেন, মো. রুবেল, মো. নয়ন চৌধুরী, মো. ছালাম, ফাহাদ কামাল লিংকন, গৌতম ঘোষ, মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম, মো. তারেকুল ইসলাম চৌধুরী, আবু নাসের মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, মো. রফিকুল ইসলাম, সৌমেন সাহা, আককাছ আলী, মোহাম্মদ মোরশেদ আলম, শাওন আহমেদ চৌধুরী, মো. নাজমুল হুদা লতিফ এবং পলাশ কুমার সাহা।
ঢাকা/নাজমুল/ফিরোজ