নাইক্ষ্যংছড়িতে চোরাচালানিদের হামলায় ৩ বিজিবি সদস্য আহত, ১৩টি গরু ছিনতাই
Published: 2nd, June 2025 GMT
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে চোরাচালানিদের হামলায় তিনজন বিজিবির সদস্য আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে শফিকুল ইসলাম নামে বিজিবির একজন ল্যান্স নায়েকের কাঁধের হাড় ভেঙে গেছে। হামলাকারীরা বিজিবির জব্দ করা ১৩টি চোরাই গরু ছিনিয়ে নিয়ে গেছে।
গতকাল রোববার বিকেলে নাইক্ষ্যংছড়ির চাকধালা এলাকার উত্তর সালামীপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আজ সোমবার সকালে নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় মামলা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, গতকাল বিকেলে বিজিবির একটি টহল দল চাকধালার উত্তর সালামীপাড়ায় যায়। এ সময় একদল চোরাচালানি গরু নিয়ে আসছিল। চোরাকারবারিরা বিজিবি সদস্যদের আসতে দেখে প্রথমে পালিয়ে যায়। এরপর বিজিবি সদস্যরা সীমান্ত পথে নিয়ে আসা ১৮টি গরু জব্দ করেন। গরু নিয়ে বিজিবি সদস্যরা ফেরার সময় চোরাকারবারিরা দেশি বন্দুকের গুলি ছোড়ে ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়।
এ ঘটনায় আজ নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন বিজিবি সদস্য এ এম নুর ইসলাম। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, চোরাকারবারিরা প্রথমে দেশি বন্দুকের গুলি ছুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। কিন্তু এরপরও বিজিবি সদস্যরা গরু জব্দ করায় ২০ থেকে ২৫ জন চোরাকারবারি লাঠিসোঁটা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তারা বেধড়ক মারধর করে বিজিবি সদস্যদের। হামলাকারীরা ১৩টি গরু ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। হামলায় ল্যান্স নায়েক শফিকুল ইসলামের কাঁধের হাড় ভেঙে যায়। নজরুল ইসলাম ও সোহাগ নামে আরও দুজন আহত হয়েছেন।
মামলায় ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিরা হলেন আক্তার কামাল (৩৫), মো.
নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসরুরুল হক জানিয়েছেন, হামলাকারীদের বিরুদ্ধে চোরাচালান, সরকারি কাজে বাধা প্রদান ও হত্যাচেষ্টার মামলা করা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চ র ক রব র সদস য ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ
গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।
ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে।
আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন।
আরো পড়ুন:
ভারতের ৬ প্রতিষ্ঠানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা
পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্নের ঘোষণা ট্রাম্পের
ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন।
অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।
ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”
প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।
মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”
তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”
মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলি অভিযান সমর্থন করেছিলেন।
গ্যালাপের মতে, মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন দিয়েছেন।
ঢাকা/ফিরোজ