ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকার কোরবানির বর্জ্যের ৮৫ শতাংশ আজকের দিনের মধ্যেই অপসারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।

শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা উত্তর নগর ভবনে কোরবানির বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রমের অগ্রগতি বিষয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।

ডিএনসিসির প্রশাসক বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সব পর্যায়ের কর্মকর্তা কর্মচারীদের কর্মতৎপরতা এবং জনগণের সহায়তায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে বেশিরভাগ বর্জ্য অপসারণ সম্ভব হয়েছে। রোববার সকাল থেকে রাস্তার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম শুরু হবে।

তিনি বলেন, আমরা অনুমান করছি, এ বছর কোরবানিতে মোট ২০ হাজার টন বর্জ্য উৎপন্ন হতে পারে। সে হিসেবে আমাদের ১গ হাজারের অধিক পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও প্রয়োজনীয় ট্রাক, পিক-আপ, ভ্যানসহ অন্যান্য সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

মোহাম্মদ এজাজ বলেন, কোরবানির প্রথম দিনে প্রায় ৯ হাজার ২০০ টন বর্জ্য উৎপন্ন হয়েছে। যার মধ্যে ৭ হাজার ৮০০ টন কোরবানির বর্জ্য ল্যান্ডফিলে ডাম্পিং করা হয়েছে। এছাড়াও পুরো ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার কোরবানির বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম সার্বক্ষণিক তদারকি করা হচ্ছে।

এ সময় নগরবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রশাসক বলেন, এ বছর ডিএনসিসি থেকে সরবরাহকৃত পলিব্যাগে কোরবানির বর্জ্য নির্দিষ্ট স্থানে রাখায় সিটি করপোরেশনের কর্মীদের কাজ করতে সুবিধা হয়েছে। নগরবাসী এভাবে সহায়তা করলে পুরো কার্যক্রম খুব সহজে এবং দ্রুত সম্পন্ন হবে।

মোহাম্মদ এজাজ ডিএনসিসির পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সার্বিক কার্যক্রমের জন্য বিশেষভাব ধন্যবাদ জানান।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান, ডিএনসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এ বি এম সামসুল আলম সহ ডিএনসিসির অন্যান্য কর্মকর্তারা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ড এনস স র প কর মকর ত ম হ ম মদ

এছাড়াও পড়ুন:

মশা নিধনে জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে

চট্টগ্রামে এডিস মশার প্রজনন ও লার্ভার ঘনত্ব গত এক বছরে দ্বিগুণ হয়েছে, আর এর সরাসরি ফল ভোগ করছেন নগরবাসী। স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের মতে, এবার ডেঙ্গুর চেয়েও চিকুনগুনিয়া ঘরে ঘরে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে, যা এক নতুন উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। মশা নিধনে কার্যকর ও সমন্বিত উদ্যোগের অভাবই এ রোগের দ্রুত বিস্তারের প্রধান কারণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। চট্টগ্রামে এভাবে জনস্বাস্থ্য ভেঙে পড়ার বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক।

রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, চট্টগ্রাম নগর এডিস মশাবাহিত রোগের জন্য এখন অতি ঝুঁকিপূর্ণ। গত বছর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগ একই ধরনের জরিপ চালিয়েছিল। এই দুই জরিপের তুলনামূলক চিত্র আমাদের সামনে এক ভয়াবহ বাস্তবতা তুলে ধরে—এডিস মশার প্রজনন ও লার্ভার ঘনত্ব দুটিই আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে।

২০২৪ সালে চট্টগ্রামে এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব (ব্রুটো ইনডেক্স) ছিল ৩৬ শতাংশ, যা এবার আইইডিসিআরের গবেষণায় পৌঁছেছে ৭৫ দশমিক ২৯ শতাংশে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মান যেখানে ২০ শতাংশ, সেখানে চট্টগ্রামের এ চিত্র রীতিমতো ভয়াবহ। বাসাবাড়িতেও লার্ভার উপস্থিতি বেড়েছে। গত বছর ৩৭ শতাংশ বাড়িতে লার্ভা পাওয়া গেলেও এবার তা প্রায় ৪৮ শতাংশে পৌঁছেছে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবার ডেঙ্গুর চেয়ে চিকুনগুনিয়ার রোগী বেশি পাওয়া যাচ্ছে। আবার অনেকের ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া দুটিই হচ্ছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে জিকা ভাইরাসের উপস্থিতি, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। চলতি বছরেই ৭৬৪ জনের চিকুনগুনিয়া ও ৭৯৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে এবং ডেঙ্গুতে আটজন প্রাণ হারিয়েছেন, যার মধ্যে ছয়জনই মারা গেছেন এই জুলাই মাসে।

সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, আইইডিসিআরের সুপারিশগুলো সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয়েছে এবং সে অনুযায়ী কাজ চলছে। সিটি করপোরেশনের মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা শরফুল ইসলাম দাবি করছেন যে মশকনিধনে ক্রাশ কর্মসূচি চলছে এবং নতুন জরিপ অনুযায়ী হটস্পট ধরে কাজ করা হচ্ছে। তবে প্রশ্ন হলো এ উদ্যোগগুলো কি যথেষ্ট? লার্ভার ঘনত্ব যেখানে তিন-চার গুণ বেশি, সেখানে গতানুগতিক কর্মসূচির ওপর নির্ভর করলে চলবে না।

মশাবাহিত রোগ থেকে মুক্তি পেতে হলে মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করার কোনো বিকল্প নেই। এ কাজে সিটি করপোরেশনকে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে হবে। বাসাবাড়িতে নানা জায়গায় জমে থাকা স্বচ্ছ পানিও এডিস মশার প্রজননের জন্য যথেষ্ট। ফলে নাগরিকদের সচেতনতা এখানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চট্টগ্রাম শহরকে মশাবাহিত রোগের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা করতে হলে স্থানীয় প্রশাসন, নগর কর্তৃপক্ষকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে; নগরবাসীকে দ্রুত তৎপর হতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাশিয়ার পূর্বাঞ্চলে শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলজুড়ে সুনামির সতর্কতা
  • মশা নিধনে জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে
  • স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে দ্বিতীয় দিনেও মহাসড়কে প্রতীকী ক্লাস করলেন শিক্ষার্থীরা
  • প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা খরচের পরও ডুবছে চট্টগ্রাম