Samakal:
2025-07-31@06:42:34 GMT

কেমন হতে পারে ইরানের জবাব

Published: 13th, June 2025 GMT

কেমন হতে পারে ইরানের জবাব

ইসরায়েলের হামলার পর কঠোর প্রতিশোধ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান। দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি ইসরায়েলকে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে বলে হুমকিও দিয়েছেন। পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা ও ঊর্ধ্বতন সামরিক নেতাদের হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করে তিনি বলেন, এই গল্পের শেষ ইরানের হাতেই লেখা হবে। ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ করা মানে সিংহের লেজ নিয়ে খেলা করা। এই ধরনের হামলার মুখে ইরান পারমাণবিক বোমা তৈরির প্রয়োজন অনুভব করতে পারে বলেও সতর্ক করেন তিনি।   
  
পাল্টা হামলায় প্রাথমিকভাবে ইসরায়েলে ১০০ ড্রোন ছুড়েছে ইরান। প্রতিবেশী দেশ ইরাক জানিয়েছে, ইরানি ড্রোনগুলো তাদের আকাশসীমা অতিক্রম করে ইসরায়েলের দিকে ছুটে গেছে। তবে ইসরায়েল নিজ ভূখণ্ডের বাইরে এসব ড্রোন ঠেকিয়ে দেওয়ার দাবি করেছে। জর্দান জানিয়েছে, তাদের দেশে ইরানি ড্রোন বিস্ফোরণের আশঙ্কায় তারা আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে কিছু ড্রোন ভূপাতিত করেছে। 
আয়াতুল্লাহ খামেনি বলেছেন, ইসরায়েল ইরানের আবাসিক স্থাপনা লক্ষ্যবস্তু করেছে। হামলায় নারী ও শিশু নিহত হয়েছে। তিনি এর জবাবে সামরিক ও কূটনৈতিক উভয় ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখানোর অঙ্গীকার করেছেন। 

এদিকে ইরান মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সামরিক স্থাপনায় হামলা করার সিদ্ধান্ত নেয় কিনা, তা পর্যবেক্ষণ করছে ওয়াশিংটন। তবে ইরানি নেতারা সম্ভবত মনে করছেন, ট্রাম্প প্রশাসন কেবল এই হামলা সম্পর্কে আগে থেকেই অবগত ছিল না, বরং গোপনে ইসরায়েলকে সমর্থনও দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, তারা এই হামলায় জড়িত ছিল না। তবে তেহরান মনে করে, হামলাটি ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র সমন্বিত হামলা। দেশটি এও মনে করে, ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সম্পূর্ণরূপে মার্কিন সামরিক সরঞ্জামের ওপর নির্ভরশীল।

ইরান ক্ষোভ প্রকাশ করে ওই বিবৃতিতে ইসরায়েলকে সন্ত্রাসবাদের জন্য অভিযুক্ত করেছে। দেশটি জোর দিয়ে বলেছে, হামলাটি প্রমাণ করে, ইসরায়েল কোনো আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলে না। তারা মাতালের মতো প্রকাশ্যে সন্ত্রাসে লিপ্ত হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, ইরানের সমৃদ্ধি, পারমাণবিক প্রযুক্তি ও ক্ষেপণাস্ত্র শক্তির বিষয়টি বিশ্ব এখন ভালোভাবে অবগত। কারা আগ্রাসী, কোন দেশ এই অঞ্চলের জন্য হুমকিস্বরূপ তাও বিশ্বের দেশগুলো এখন জানে। 

ইরান জোর দিয়ে বলেছে, পারমাণবিক বোমা তৈরির কোনো গোপন পরিকল্পনা তাদের কখনও ছিল না। ইরানসহ পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী সব দেশের বেসামরিক উদ্দেশ্যে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার সার্বভৌম অধিকার রয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কাছাকাছি আছে– এমন কোনো প্রমাণ নেই। চলতি সপ্তাহে দেওয়া আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) প্রতিবেদনেও তা নিশ্চিত করা হয়েছে।’ তবে আইএইএ জানিয়েছে, ইরান তার পরমাণু কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে করছে কিনা, তা প্রমাণ করা সম্ভব না। 

বিশ্লেষণে বল হয়, তেহরান ধারাবাহিকভাবে যুক্তি দিয়ে আসছে, বারাক ওবামার সময় করা চুক্তি অনুসারে তারা শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করে আসছে। ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গেও ইরান পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ধারবাহিক আলোচনা করে যাচ্ছে। ইরানের অভিজ্ঞ কর্মকর্তারা জানতেন, ইরানের পদক্ষেপ নিয়ে ইসরায়েল ক্রমশ ক্ষুব্ধ হচ্ছে। তবে আরব কূটনীতিকদের আশা ছিল, ওয়াশিংটন-তেহরান অবশেষে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে সক্ষম হবে। তারা মনে করেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ হামলার অনুমতি ইসরায়েলকে সহসাই দেবে না।  

গত ২৩ এপ্রিল ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের চলমান আলোচনায় সন্তুষ্ট নয় ইসরায়েল। তারা বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করে ইরানের কূটনৈতিক প্রক্রিয়াকে বিপথগামী করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু আমাদের নিরাপত্তা পরিষেবাগুলো উচ্চ সতর্কতায় রয়েছে। 
তবে আরাগচির এই বক্তব্য ভুল প্রমাণিত করে ইসরায়েল সফল হামলা চালিয়েছে। ইরানের কাছে থাকা রাশিয়ার তৈরি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অকার্যকর প্রমাণিত হয়েছে।

ইরানের অর্জন মূলত একটি। তা হলো, সম্প্রতি আরব রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে দেশটি সম্পর্ক উন্নত করতে সক্ষম হয়েছে। তবে লেবানন, ফিলিস্তিন, সিরিয়া, ইয়েমেন ও ইরাকে যে প্রক্সি যুদ্ধ চালাচ্ছিল তেহরান, ইসরায়েল সেই প্রতিরক্ষা ভেঙে দিতে সক্ষম হয়। এই অবস্থায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আরব রাষ্ট্রগুলো যৌথভাবে কোনো সামরিক পদক্ষেপের দিকে অগ্রসর হবে না।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল য ক তর ষ ট র ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

কুবির নজরুল হল থেকে গুলি ও গাঁজা উদ্ধার

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) কাজী নজরুল ইসলাম হলের ৩০৭ নম্বর কক্ষ থেকে ব্যবহৃত গুলি ও গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে।

সোমবার (২৮ জুলাই) রাত সাড়ে ১১টার দিকে হলে অভিযান চালিয়ে এসব উদ্ধার করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হলের প্রাধ্যক্ষ সহযোগী অধ্যাপক মো. হারুন। অভিযান চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মাহমুদুল হাসান উপস্থিত ছিলেন। 

হল প্রাধ্যক্ষ জানান, তিনি আনুমানিক রাত সাড়ে ১১টার দিকে হলের বিভিন্ন কক্ষে গিয়ে তল্লাশি চালান। এমন সময় ৩০৭ নম্বর কক্ষে ব্যবহৃত গুলি ও এর জানালার পাশে মাদক পেয়েছেন। অভিযানের সময় ওই কক্ষে তিনজন শিক্ষার্থী অবস্থান করেছিলে।

আরো পড়ুন:

৩৫ বছর পর রাকসু তফসিল নিয়ে শিক্ষার্থীদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া

প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকের বেতন ১০ম গ্রেডে উন্নীত হচ্ছে

ওই তিন শিক্ষার্থীরা হলেন, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাকিং বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী সবুজ মিঞা ও রবিন আউয়াল রবিন এবং ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের একই বর্ষের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী সাঈদ উদ্দিন আহমেদ।

এর মধ্যে সবুজ মিঞা শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলে আবাসিক শিক্ষার্থী। তার ব্যাপারে নজরুল হলের প্রাধ্যক্ষ মো. হারুন বলেন, “সবুজ মিঞা যেহেতু আমাদের হলের আবাসিক শিক্ষার্থী না। তার বিরুদ্ধে এখন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছি না। তবে, আমি তার হলের প্রাধ্যক্ষকে বিষয়টি জানাব।”

এ বিষয়ে শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের প্রাধ্যক্ষ মো. জিয়া উদ্দিন বলেন, “এ ব্যাপারে এখনো আমাকে কেউ কিছু অবগত করেননি।”

এদিকে, শিক্ষার্থী সাঈদ উদ্দিন আহমেদকে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১১টার দিকে ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় মাঠ থেকে মাদক সেবনরত অবস্থায় আটক করে প্রক্টোরিয়াল বডি। এরপর গত ২৮ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় তাকে ১ বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া, ১ বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ ও আবাসিক হলে অবস্থানের উপরও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

নিষেধাজ্ঞা থাকার পরেও কীভাবে তিনি হলে অবস্থান করছেন- এমন প্রশ্নে প্রাধ্যক্ষ বলেন, “ওই কক্ষে যারা থাকে, তাদের কড়া নির্দেশনা দিয়েছিলাম- আনাস যাতে ওই কক্ষে থাকতে না পারে। তালাও পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, তারা আমার চোখ ফাঁকি দিয়ে এবং আদেশ অমান্য করে বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীকে ওই কক্ষে রাখছে। তাদের বিরুদ্ধেও আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”

এ ঘটনার সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। প্রাথমিকভাবে যে কক্ষ থেকে মাদক উদ্ধার করা হয়েছে, সেই কক্ষটি সিলগালা করা হয়েছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ডকে বিষয়টা অবগত করেছি। শৃঙ্খলা বোর্ড এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।”

সহকারী প্রক্টর মাহমুদুল হাসান বলেন, “অভিযুক্তদের ডোপ টেস্ট করতে পাঠানো হয়েছে। তবে, এগুলো হলের বিষয়, হল প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিবে। আর হল প্রশাসন শৃঙ্খলা বোর্ডে পাঠালে তখন তারা সিদ্ধান্ত নেবে।”

ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কুবির নজরুল হল থেকে গুলি ও গাঁজা উদ্ধার