গলের কথা শুনলে এত দিন কল্পনায় আসত একটা দৃশ্যই। ভারত মহাসাগর ছাপিয়ে ছুটে আসছে সুনামি। প্রচণ্ড ঢেউ আছড়ে পড়ছে সমুদ্রতীরের হোটেল–রিসোর্ট–ঘরবাড়িতে। ঠিক ওই সময় গল থেকে দুরন্ত গতিতে গাড়ি চালিয়ে কলম্বোর দিকে সপরিবার ছুটে যাচ্ছেন মুত্তিয়া মুরালিধরন।

সেটা হয়তো এর আগে চারবার শ্রীলঙ্কায় এসেও কখনো গলে আসা হয়নি বলেই। নইলে এবার প্রথম এসে যা দেখছি—গল মানে প্রথমত চোখ জুড়িয়ে যাওয়া এক শহর। শ্রীলঙ্কায় বেড়াতে এলে গল ফোর্টকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা ছিমছাম এই শহর পর্যটকদের পছন্দের তালিকার ওপরের দিকে থাকে।

আরও পড়ুনপ্রথম সেশনে ৩ উইকেট হারিয়ে ৯০ তুলল বাংলাদেশ৩ ঘণ্টা আগে

১৬ শতকে গলফোর্ট বানিয়েছিল পর্তুগিজরা, যেটিকে ১৭ শতকে ওলন্দাজরা আরও শক্তপোক্ত করে তোলে। তবে গল ফোর্ট শুধু ইতিহাসের স্মারক হয়েই রয়ে যায়নি; ইতিহাস বরং সেখানে এখনো অনেকটাই জীবন্ত। ঐতিহ্যবাহী সব স্থাপনা, জাদুঘর, দোকান আর হোটেল–রেস্তোরাঁ মিলে শ্রীলঙ্কার ঔপনিবেশিক অতীত আর আধুনিক জীবনের অনন্য এক মেলবন্ধন গল ফোর্ট। দুর্গনগরীতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের মূল আকর্ষণও।

গলে আসা পর্যটকদের বড় অংশ ভারতের, তারপরই রাশিয়ার। হিক্কাডুয়া বিচের দিকে গেলে তো বিভ্রমেই পড়ে যাবেন—রাশিয়ার কোনো এলাকায় চলে এলেন না তো! অনেক হোটেল–রিসোর্ট, দোকান–রেস্তোরাঁর সাইনবোর্ড সিংহলিজ আর ইংরেজির পাশাপাশি রাশিয়ান ভাষায় লেখা! খাবারের মেনু, সমুদ্রতীরে যাওয়ার পথে সাবধানবাণী—সবকিছুতেই আছে রাশিয়ান ভাষা।

গল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের পাশেই গল ফোর্ট.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গল ফ র ট

এছাড়াও পড়ুন:

সুন্দরবনের নতুন পর্যটন স্পট ‘আলী বান্দা’

পূর্ব সুন্দরবনের নিসর্গঘেরা অভয়ারণ্যে গড়ে তোলা হয়েছে নতুন পর্যটন কেন্দ্র ‘আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার’। সবুজ ম্যানগ্রোভ বনের বুক চিরে, নদীর নোনাজলে ভেসে, প্রকৃতির নীরব সৌন্দর্যে ঘেরা এই কেন্দ্রটি চলতি নভেম্বর মাস থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভ্রমণ করতে পারবেন পর্যটকরা।

পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের আওতাধীন আলী বান্দা এরইমধ্যে ভ্রমণপিপাসুদের দৃষ্টি কেড়েছে। শরণখোলা রেঞ্জ অফিস থেকে ট্রলারযোগে মাত্র ৪০ মিনিটের নৌপথ পেরিয়ে পৌঁছানো যায় সেখানে। 

যাত্রাপথে চোখে পড়ে বনের গভীর সবুজ গাছগাছালি, ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে যাওয়া পাখি, কচুরিপানায় ঢাকা জলাশয় এবং সুন্দরী-গেওয়া গাছের সারি যা পর্যটকদের মোহিত করে।

বন বিভাগ জানিয়েছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টারের অবকাঠামো নির্মাণকাজ শুরু হয়। এখানে তৈরি হয়েছে ছয়তলা ভবনের সমান উচ্চতার একটি ওয়াচ টাওয়ার, যেখান থেকে সুন্দরবনের বিস্তৃত সবুজাভ দৃশ্য চোখে ধরা পড়ে। 

রয়েছে দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ ফুট ট্রেইল (ওয়াকওয়ে)। পথের দুই পাশে ঘন বনের মাঝে হাঁটলে দেখা যায় প্রকৃতির আসল রূপ। এছাড়া রয়েছে মিষ্টি পানির পুকুর, হরিণ রাখার সেড, জেটি, বিশ্রামাগার, সুভেনিয়ার শপ এবং পর্যটকদের নিরাপত্তায় বনরক্ষী ও স্থানীয় গাইডের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান।

ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে আলীবান্দা বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোর মানুষের জন্য সবচেয়ে সহজগম্য স্পট হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কম সময় ও কম ঝুঁকিতে সুন্দরবনের সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে এখানে। স্থানীয় পর্যটকরা এরইমধ্যে আগ্রহ দেখাতে শুরু করেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা শাহিন বলেন, “আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার চালু হলে স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এতে স্থানীয় গাইড, নৌযানচালক, হোটেল ব্যবসায়ী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কর্মসংস্থান বাড়বে। পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব পর্যটনের মাধ্যমে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সচেতনতা বাড়বে।”

তবে পর্যটনকেন্দ্রে প্রবেশ ফি নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে। আলীবান্দায় প্রবেশের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৪৫ টাকা।

শরণখোলা ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল বয়াতী বলেন, ‘‘আলীবান্দায় প্রবেশ ফি ৩৪৫ টাকা, অথচ একই বনের করমজল পর্যটন পয়েন্টে ফি মাত্র ৪৬ টাকা। অনেকেই আলীবান্দায় যেতে আগ্রহী, কিন্তু ফি বেশি হওয়ায় নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।’’

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “আলীবান্দা এখন প্রায় প্রস্তুত। চলতি মাসেই এখানে হরিণ আনা হবে। বর্তমানে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে স্পটটি। যেহেতু এটি ২০১৭ সালে ঘোষণা করা অভয়ারণ্য এলাকার অন্তর্ভুক্ত, তাই সাধারণ বনাঞ্চলের তুলনায় কিছু বিধিনিষেধ ও প্রবেশ ফি বেশি রাখা হয়েছে। তবে পর্যটকদের দাবির বিষয়টি আমরা সরকারের কাছে জানাব।’’

ঢাকা/শহিদুল/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দুই দিনে যেতে পারেননি কোনো পর্যটক, কক্সবাজার-সেন্ট মার্টিন জাহাজ চলাচল অনিশ্চিত
  • অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ
  • সেন্টমার্টিনের দ্বার খোলা, ছাড়েনি জাহাজ
  • পর্যটন শিল্প বিকাশে আইকন গ্লোবাল ট্যুর অপারেটর আল মামুন
  • সুন্দরবনের নতুন পর্যটন স্পট ‘আলী বান্দা’
  • কক্সবাজার সৈকতে ঘোড়া, কুকুর ও গরু, স্বাস্থ্যঝুঁকি কতটুকু