বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে জাতীয় পুরস্কার পাচ্ছেন নাটোরের ফজলে রাব্বী
Published: 19th, June 2025 GMT
বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ‘বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে জাতীয় পুরস্কার ২০২৫’ পাচ্ছেন নাটোরের মো. ফজলে রাব্বী। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এ পুরস্কার দেবে।
বুধবার (১৮ জুন) পরিবেশ,বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের বন শাখা-২ থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার পূর্ব মাধনগরের মো.
বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে ২০১১ সাল থেকে নিরলসভাবে কাজ করছেন ফজলে রাব্বী। তিনি উপজেলা প্রশাসন, বন বিভাগ ও স্থানীয় জনগণের সহযোগিতায় তার মাধনগরসহ আশপাশের গ্রামগুলোকে পাখি শিকার থেকে মুক্ত করতে সক্ষম হয়েছেন। মাধনগরসহ আশেপাশের গ্রামগুলোকে জীববৈচিত্র্যে ভরপুর আদর্শ গ্রাম হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে এলাকার উদ্যোমী তরুণদেরকে নিয়ে গড়ে তুলেছেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘সবুজ বাংলা’। এ সংগঠন বিভিন্ন জনসচেতনতামূলক প্রচার (পোস্টারিং, লিফলেট বিতরণ, মাইকিং ইত্যাদি) চালাচ্ছে। বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য এবং পরিবেশ সংরক্ষণের বিষয়ে নিয়মিত আলোচনা ও তাগিদ, বন্যপ্রাণী উদ্ধার অভিযান পরিচালনা, বন্যপ্রাণী শিকারে ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি (জাল, ফাঁদ ইত্যাদি) উদ্ধার, বন্যপ্রাণী অপরাধ নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় সহযোগিতা, বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিসহ নানা কার্যক্রম পরিচালনা করছে সবুজ বাংলা। এছাড়াও বন, বন্যপ্রাণী, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ সংক্রান্ত বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস পালন করে সংগঠনটি।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় মনে করে, এই পুরস্কার বাংলাদেশে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ, গবেষণা ও পরিবেশ শিক্ষায় জনগণের সচেতনতা ও সম্পৃক্ততা বাড়াবে। পাশাপাশি, পরিবেশবান্ধব উদ্যোগকে অনুপ্রেরণা জোগাবে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এ কাজে উৎসাহিত করবে।
ঢাকা/আরিফুল/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ও জ বব চ ত র য প রস ক র পর ব শ
এছাড়াও পড়ুন:
ইসির প্রতিটি কাজে জবাবদিহি থাকতে হবে
সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত নির্বাচনের পথনকশা ঘোষণা না হলেও নির্বাচন কমিশন (ইসি) প্রস্তুতিমূলক কাজগুলো সম্পাদনে সচেষ্ট আছে। তারা ইতিমধ্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ চূড়ান্ত করেছে এবং ১০ আগস্ট খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য আসন বণ্টনের কাজটি খুবই জরুরি। প্রতিটি নির্বাচনের আগে কমিশন আসনের বিষয়ে জনগণের মতামত নিয়ে থাকে; এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। বিশেষায়িত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে ইসি গাজীপুরে একটি আসন বাড়ানো ও বাগেরহাটে একটি আসন কমানোর প্রস্তাব করেছে। বর্তমানে বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন ও গাজীপুরে পাঁচটি আসন রয়েছে। নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী বাগেরহাটে সংসদীয় আসন একটি কমে হবে তিনটি। আর গাজীপুরে একটি বেড়ে হবে ছয়টি সংসদীয় আসন। তবে কমিশনের এই প্রস্তাবই চূড়ান্ত নয়। সংসদীয় আসনগুলোর সীমানার খসড়া নিয়ে কোনো আপত্তি থাকলে ১০ আগস্ট পর্যন্ত আবেদন করা যাবে। আপত্তি কিংবা দাবির শুনানি শেষে চূড়ান্ত সীমানার গেজেট প্রকাশ করা হবে।
জনশুমারি-২০২২ অনুযায়ী কাজ করতে গিয়ে বিশেষ কারিগরি কমিটি শুমারিতে বেশ কিছু অসামঞ্জস্য পেয়েছে। নির্বাচন কমিশনের হালনাগাদ ভোটার তালিকা রয়েছে। ওই তালিকার মোট ভোটারের ভিত্তিতেই ২০ হাজার ৫০০ কমবেশি গড় ভিত্তিতে গ্রেডিং তৈরি করে কোন জেলায় বেশি ভোটার, কোথায় কম, তা পর্যালোচনা করা হয়। এক থেকে তিন আসনবিশিষ্ট জেলাগুলোকে আসন বাড়ানো-কমানোর ক্ষেত্রে বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। নির্বাচন কমিশন থেকে জানানো হয়, সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে এ পর্যন্ত দেড় হাজারের মতো আবেদন কমিশন পেয়েছে। এর মধ্যে ৪২টি আসনে ছোট-বড় সংশোধন, সমন্বয়ের প্রস্তাব কারিগরি কমিটি করেছে।
গত বুধবার নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেছেন, বিশেষায়িত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোনো জেলার মোট ভোটার ও জনসংখ্যা বিশ্লেষণ করে এ প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সারা দেশের ৩৯ থেকে ৪২টি আসনের সীমানায় ছোটখাটো পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আড়াই শতাধিক আসনের সীমানা বহাল থাকছে। সে ক্ষেত্রে আসনের সীমানা নির্ধারণের কাজটি চূড়ান্ত করতে ইসিকে খুব বেগ পেতে হবে না।
অন্যদিকে সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্রগুলোকেও প্রস্তুত করার জন্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে চিঠি দিয়ে বলা হয়েছে, কোনো কেন্দ্রের অবকাঠামো মেরামত বা সংস্কার করতে হলেও যেন তারা দ্রুততম সময়ে করে। সাধারণত সরকারি স্থাপনা মেরামতের কাজটি করে থাকে গণপূর্ত বিভাগ এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংস্কারের কাজ করে শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ।
এ ছাড়া নির্বাচন কমিশন প্রবাসীরা যাতে ভোট দিতে পারেন, সে জন্য উদ্যোগ নিয়েছে। প্রবাসীরা বহু বছর ধরে ভোটাধিকার প্রয়োগের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। এই প্রেক্ষাপটে নির্বাচন কমিশন তাঁদের সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশ মিশনগুলোতে নাম নিবন্ধনের অনুরোধ করেছে। দূরবর্তী স্থান থেকে সরাসরি নিবন্ধন করতে অনেকে আগ্রহী হবেন না। সে ক্ষেত্রে অনলাইনেও নিবন্ধনের সুযোগ রাখতে হবে। ইতিমধ্যে কিছু প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন করেছেন। নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষিত হলে তাঁদের আগ্রহ বাড়বে আশা করা যায়।
নির্বাচন কমিশনের এসব উদ্যোগ ইতিবাচক বলে আমরা মনে করি। কিন্তু তাদের মূল যে দায়িত্ব জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা, সেটা কতটা সুচারুভাবে করতে পারে, তার ওপরই সাফল্য–ব্যর্থতা নির্ভর করবে। ইসিকে মনে রাখতে হবে, নাগরিকেরা ভোট দেওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছেন, যাঁরা বিগত তিনটি নির্বাচনে ভোট দিতে পারেননি। নির্বাচন কমিশনের প্রতিটি কাজ ও পদক্ষেপে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি থাকবে, এটাই প্রত্যাশিত।