চাঁদপুরে আবাসিক গ্যাস সরবরাহ বন্ধ, ভোগান্তিতে ২০ হাজার গ্রাহক
Published: 19th, June 2025 GMT
বৈরী আবহাওয়ার কারণে কক্সবাজারের মহেশখালীর গভীর সমুদ্রে অবস্থিত ভাসমান টার্মিনালে আমদানি করা তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) জাহাজ থেকে সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এতে চাঁদপুর জেলায় ২০ হাজার আবাসিক গ্রাহকের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা। তবে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সন্ধ্যা পর এটি স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
বৃহস্পতিবার বাখারাবাগ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড কুমিল্লা কার্যালয় থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলায় গ্যাস সরবরাহ হ্রাস পেয়েছে।
এদিকে চাঁদপুর জেলা শহরে বুধবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ কমে যায়। কিছু সময় আবার পুরোপুরি বন্ধ থাকে। বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় আবাসিক গ্যাস সরবরাহ।
চাঁদপুর ব্যাংক কলোনীর বাসিন্দা সাবরিনা রহমান বলেন, পুরো এলাকাতে গ্যাস না থাকায় মানুষ ভোগান্তিতে রয়েছে। এছাড়া বর্ষা এবং বেশি শীত পড়লে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকে। বন্ধ হওয়ার আগে জানানো দরকার ছিল। আমরা জানতাম না। কোম্পানির পক্ষ থেকে গ্রাহকদের সতর্ক করা এবং মাইকিং করে জানানো প্রয়োজন। তাহলে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
শহরের মমিনপাড়া এলাকার গৃহিণী লাবনী বলেন, আজ সকালে চুলায় আগুন দিতে গিয়ে দেখি খুবই কম গ্যাস উঠছে। সকাল ৯ টার দিকে পুরোপুরি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। যার ফলে নাস্তা তৈরি করা সম্ভব হয়নি।
বাখারাবাগ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির চাঁদপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক (বিক্রয়) প্রকৌশলী মীর ফজলে রাব্বী সমকালকে বলেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে জাহাজ থেকে গ্যাস সরবরাহ করা যাচ্ছে না। এতে জাতীয় গ্রিডে এলএনজি সরবরাহ ব্যাপকভাবে কমে গেছে। চাঁদপুর এলাকার গ্যাসের একমাত্র সোর্স সাগরের এলএনজি। এটি মহেশখালী টার্মিনাল হয়ে কুমিল্লার লাকসামের বিজরা এলাকা থেকে চাঁদপুরে আসে।
তিনি বলেন, সাগর উত্তাল কিংবা প্রাকৃতিক বৈরীভাব দেখা দিলে টার্মিনাল ও জাহাজের নিরাপত্তার স্বার্থে জাহাজ থেকে এলএনজি টার্মিনালে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হয়। আবহাওয়ার বৈরীভাব চলে গেলে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে যাবে। আজ সন্ধ্যার পরপরই গ্যাস স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ইরান–ইসরায়েল যুদ্ধ পর্যবেক্ষণ করছি, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি এখনই নয়: অর্থ উপদেষ্টা
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিতে আরও অপেক্ষা করা হবে, এখন মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে না—এমন কথা বলেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধটা আপাতত পর্যবেক্ষণ করছি। যুদ্ধটা বেশি দিন চললে আমাদের ওপর একটা প্রভাব পড়বে।’
আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়–সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা এ কথা বলেন। ইরান-ইসরায়েলের যুদ্ধের কারণে জ্বালানি তেলের দামের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে কি না, এটা ছিল অর্থ উপদেষ্টার কাছে প্রশ্ন।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, যেসব ক্রয় আদেশ (অর্ডার) করা হয়েছে, সেগুলোতে কোনো প্রভাব পড়েনি। সব পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। আজ যে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, তা পুরোনো দামেই। ভাগ্য ভালো যে এটা আগের দামেই পাওয়া গেছে। ভবিষ্যতে হয়তো কিছুটা প্রভাব পড়বে।
যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হলে বিকল্প চিন্তা কী—এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বিকল্প চিন্তা অবশ্যই বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় করছে। কারণ, যুদ্ধের কারণে জ্বালানি তেলের পাশাপাশি সার, জাহাজ চলাচলেও প্রভাব পড়তে পারে। হরমুজ প্রণালি দিয়ে যে জাহাজ আসে, তাতে প্রভাব পড়তে পারে। তবে মনে হয় যুদ্ধটা বেশি দিন চলবে না।
এদিকে ক্রয় কমিটিতে যুক্তরাজ্যের কোম্পানি টোটাল এনার্জিস গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার থেকে এক কার্গো এলএনজি আমদানির প্রস্তাব ক্রয় কমিটিতে অনুমোদিত হয়েছে। একটি কার্গো সমান ৩৩ লাখ ৬০ হাজার মিলিয়ন মেট্রিক ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিট (এমএমবিটিইউ)। এতে মোট ব্যয় হবে ৬২১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। প্রতি এমএমবিটিইউর দাম পড়ছে ১৫ দশমিক ১৭ মার্কিন ডলার।
বৈঠকে একটি প্রকল্পের পূর্ত কাজের প্রস্তাব বাতিল করা হয়েছে। এটি হলো ‘২০২২ সালের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জ সড়ক বিভাগাধীন বিভিন্ন সড়ক, সেতু ও কালভার্টসমূহের জরুরি পুনর্বাসন ও পুনর্নির্মাণ’ প্রকল্প।
এ ছাড়া বৈঠকে ১৪০ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো) বাংলাদেশ থেকে ৩০ হাজার টন ইউরিয়া সার কেনার প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। প্রতি টনের দাম পড়ছে ৩৮৩ দশমিক ২৫ মার্কিন ডলার। মোট ব্যয় ১ কোটি ১৪ লাখ ৯৭ হাজার ৫০০ ডলার।
‘বিসিক কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক, মুন্সিগঞ্জ (দ্বিতীয় সংশোধিত)’ প্রকল্পের একটি প্যাকেজের আওতায় ড্রেন, গেট, গার্ড শেড ও অন্যান্য নির্মাণের পূর্ত কাজের ক্রয় প্রস্তাবও অনুমোদিত হয় বৈঠকে। ১১১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা ব্যয়ের এ কাজ পেয়েছে যৌথভাবে বিডিই লিমিটেড এবং কোহিনুর এন্টারপ্রাইজ।