খুলনায় ২৭ সুন্দি কাছিম উদ্ধার, যুবককে কারাদণ্ড
Published: 29th, June 2025 GMT
খুলনার ডুমুরিয়ায় ২৭টি সুন্দি কাছিম বিক্রির দায়ে এক যুবককে ২১ দিনের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। রোববার দুপুরে উপজেলার ভান্ডারপাড়া ইউনিয়নের ঘোনাবান্দা মধ্যপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই যুবককে আটক করা হয়। তাঁর বাড়ি থেকে এসব কাছিম উদ্ধার করা হয়।
বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ খুলনার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা নির্মল কুমার পাল প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, দু-এক দিন রেখে পরে এগুলো উপযুক্ত আবাসস্থলে অবমুক্ত করা হবে।
দণ্ড পাওয়া যুবকের নাম জয় ঢালী (২২)। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ডুমুরিয়া উপজেলা প্রশাসন ও বন অধিদপ্তর খুলনার বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের যৌথ অভিযানে কাছিমগুলো উদ্ধার হয়। এই কাছিম বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-২ অনুযায়ী সংরক্ষিত। এ ধরনের প্রাণী হত্যা, শিকার, খাঁচায় রাখা, পরিবহন, বিক্রয় ইত্যাদি আইনত নিষিদ্ধ।
বন বিভাগ ও স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, জয় ঢালী ও তাঁর বাবা নিতাই ঢালী দীর্ঘদিন ধরে কাছিমের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। তাঁরা দুজনই নিয়মিতভাবে কাছিম শিকার ও বিক্রি করতেন বলে অভিযোগ আছে।
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা নির্মল কুমার পাল বলেন, সুন্দি কাছিমের আরেক নাম চিতি কাছিম। নোনাপানিতে সুন্দি কাছিমের দেখা পাওয়া যায় না। এটি টেস্টুডিনিস বর্গের ট্রায়োনিকিডি পরিবারের সরীসৃপ। ইংরেজি নাম ‘Indian flapshelled turtle’, বৈজ্ঞানিক নাম ‘Lissemys punctata’। আগে দেশের সব জলাশয়ে সুন্দি কাছিম দেখা গেলেও এখন তেমন দেখা যায় না। শুকনো মৌসুমে মাছ ধরার জন্য খালবিল, হাওর-বাঁওড় সেচ করলেই দেখা মিলত। বর্তমানে আবাসস্থল ধ্বংস, অবৈধ শিকার ও জলাশয় দূষণের কারণে বিপন্ন হচ্ছে প্রাণীটি।
প্রাণী বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এদের খোলসে ছোপ ছোপ দাগ থাকে। বাংলাদেশ ছাড়াও নেপাল, পাকিস্তান, ভারত, মিয়ানমার ও শ্রীলঙ্কায় আছে সুন্দি কাছিম। মার্চ থেকে আগস্ট পর্যন্ত এদের প্রজনন মৌসুম। মিঠাপানির কাছিম হওয়ায় ডিম দিতে ওই সময়ে ডাঙায় ওঠে এরা। তাদের খাদ্যতালিকায় রয়েছে জলজ উদ্ভিদ ও ছোট ছোট প্রাণী।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মঙ্গলবার কুয়াকাটায় রাস উৎসব, গঙ্গা স্নান বুধবার
প্রায় ২০০ বছর ধরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মদনমোহন সেবাশ্রম মন্দির ও কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরে পৃথক আয়োজনে রাস উৎসব পালন করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এবছরও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে হবে এ উৎসব। রাস উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ায় বসছে ৫ দিনব্যাপী মেলা।
কলাপাড়ায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শেষ সময়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে মন্দিরের আঙ্গিনাসহ রাধা ও কৃষ্ণের ১৭ জোড়া প্রতিমা।
মঙ্গলবার পূর্ণিমা তিথিতে রাত ৯টা ২২ মিনিটে অধিবাসের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে রাস পূজার আনুষ্ঠানিকতা। পরের দিন বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৬ মিনিটে এ তিথি শেষ হবে। সেদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কুয়াকাটা সৈকতে গঙ্গা স্নান করবেন পুণ্যার্থীরা। এর পর মন্দিরের আঙ্গিনায় রাধা-কৃষ্ণের যুগল প্রতিমা দর্শন করবেন তারা। তাই, দুই মন্দিরেই ১৭ জোড়া প্রতিমা বানানো হয়েছে। প্যান্ডেল সাজানোর কাজ শেষ। চলছে লাইটিং ও সাজসজ্জার কাজ।
এ উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ার মন্দির প্রাঙ্গণ, কুয়াকাটার মন্দির প্রাঙ্গণ ও সৈকতে অস্থায়ীভাবে বসছে শতাধিক পোশাক, প্রসাধনী, খেলনা ও গৃহস্থালী সামগ্রীর দোকান। কুয়াকাটায় তিন দিনব্যাপী উৎসব হলেও কলাপাড়ায় এ উৎসব চলবে পাঁচ দিন। এসব দোকানে অন্তত ৩০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রির আশা করছেন আয়োজকরা।
কলাপাড়ার শ্রী শ্রী মদনমোহন সেবাশ্রমের রাস উদযাপন কমিটির সভাপতি দিলীপ কুমার হাওলাদার বলেছেন, আজকের মধ্যেই আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। হিন্দু ধর্মালম্বীদের এ উৎসব হলেও এখানে ৫ দিনব্যাপী মেলায় সব ধর্মের মানুষের আগমন ঘটে। আমাদের মন্দির প্রাঙ্গণে অন্তত ৭০টি দোকান বসেছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে রাস উৎসব সম্পন্ন হবে।
কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন মন্ডল বলেছেন, আগামীকাল রাতভর মন্দির প্রাঙ্গণে ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলবে। পরদিন সকালে গঙ্গা স্নান হবে। লাখো পুণ্যার্থীর আগমনের আশা করছি আমরা। বুধবারও গঙ্গা স্নান হবে। উৎসব উপলক্ষে আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউসার হামিদ বলেছেন, রাস উৎসব উপলক্ষে কুয়াকাটায় ১ লাখ পুণ্যার্থী সমাগমের আশা করছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে।
ঢাকা/ইমরান/রফিক