সাগরে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত, সপ্তাহজুড়ে থেমে থেমে বৃষ্টির পূর্বাভাস
Published: 3rd, July 2025 GMT
আগামী সপ্তাহজুড়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে থেমে থেমে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ আবহাওয়ার কারণে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে আবহাওয়া অধিদপ্তর দেশের চার বন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দিয়েছে। আর উপকূলের নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক দিয়েছে।
মৌসুমি বায়ু এখন সক্রিয়। এর প্রভাবেই বৃষ্টি বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক। তিনি আজ প্রথম আলোকে বলেন, সাগরে লঘুচাপের প্রভাব আছে। আর এর প্রভাবে বিশেষ করে উপকূলের বিভিন্ন স্থানে ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি বাড়তে পারে। এ জন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া খুলনা, বরিশাল, নোয়াখালীসহ উপকূলের নদীবন্দরকে ১ নম্বর সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
শুধু উপকূলীয় এলাকা নয়, মৌসুমি বায়ুর এ সক্রিয়তার কারণে আজ থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি এবং কোথাও কোথাও বজ্রপাত হতে পারে বলে জানান আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, জুলাই মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া চলতি মাসে এক থেকে তিনটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে একটি মৌসুমি নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের জুলাই মাসের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে। গতকাল বুধবার এ পূর্বাভাস দেওয়া হয়।
তবে সদ্য বিদায়ী জুন মাসে দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ১৯ দশমিক ৩ শতাংশ বৃষ্টি কম হয়েছে। সবচেয়ে কম বৃষ্টি হয়েছে সিলেট বিভাগে।
সিলেটে সাধারণত বৃষ্টি বেশি হয়। কিন্তু গত মাসে এই বিভাগে স্বাভাবিকের তুলনায় ৪৯ শতাংশ বৃষ্টি কম হয়েছে। আর ঢাকা বিভাগে স্বাভাবিকের তুলনায় বৃষ্টি কম হয়েছে ৩৩ শতাংশ।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, জুলাই মাসে দেশে এক থেকে দুটি মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দুই সপ্তাহের মধ্যে তেহরানে সুপেয় পানি ফুরিয়ে যেতে পারে
তীব্র খরার কবলে পড়েছে ইরানের রাজধানী তেহরান। সেখানে বাসিন্দাদের সুপেয় পানির প্রধান উৎসটি দুই সপ্তাহের মধ্যে শুকিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি দেখা দিয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আইআরএনএ গতকাল রোববার এ খবর জানিয়েছে।
তেহরানে পানি সরবরাহ কোম্পানির পরিচালক বেহজাদ পারসার বরাত দিয়ে আইআরএনএর খবরে বলা হয়, তেহরানে খাবার পানি সরবরাহের পাঁচটি উৎসের একটি আমির কবির বাঁধ। সেটিতে এখন মাত্র ১ কোটি ৪০ লাখ ঘনমিটার পানি আছে। এটি জলাধারটির মোট ধারণক্ষমতার মাত্র ৮ শতাংশ।
বেহজাদ পারসা সতর্ক করে দিয়ে বলেন, এই পরিমাণ পানি দিয়ে মাত্র দুই সপ্তাহ তেহরানের খাবার পানির চাহিদা মেটানো যাবে।
ইরানি সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, তেহরানে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩০ লাখ ঘনমিটার পানির প্রয়োজন পড়ে।কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র খরার মোকাবিলা করছে ইরান। গত মাসে স্থানীয় এক কর্মকর্তা বলেছিলেন, তেহরান প্রদেশে এবার বৃষ্টির যে মাত্রা, তেমনটা গত এক শতাব্দীতে খুব একটা দেখা যায়নি।
এক কোটির বেশি মানুষের নগর তেহরান তুষারাচ্ছন্ন আলবোর্জ পর্বতমালার দক্ষিণ ঢালে অবস্থিত। এই পর্বতমালার সর্বোচ্চ উচ্চতা ৫ হাজার ৬০০ মিটার (১৮ হাজার ৩৭০ ফুট) পর্যন্ত। এই পর্বতমালা থেকে উৎপন্ন নদীগুলো বহু জলাধারে পানির জোগান দেয়।
বেহজাদ পারসা বলেন, এক বছর আগেও আমির কবির বাঁধে ৮ কোটি ৬০ লাখ ঘনমিটার পানি ছিল। কিন্তু তেহরান অঞ্চলে বৃষ্টির পরিমাণ প্রায় শতভাগ হ্রাস পেয়েছে।
তেহরানে পানি সরবরাহ করা বাকি জলাধারগুলোর বিষয়ে কোনো তথ্য দেননি এই কর্মকর্তা।
ইরানি সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, তেহরানে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩০ লাখ ঘনমিটার পানির প্রয়োজন পড়ে।
এক বছর আগেও আমির কবির বাঁধে ৮ কোটি ৬০ লাখ ঘনমিটার পানি ছিল। কিন্তু তেহরান অঞ্চলে বৃষ্টির পরিমাণ প্রায় শতভাগ হ্রাস পেয়েছে।বেহজাদ পারসা, তেহরানে পানি সরবরাহ কোম্পানির পরিচালকপানি সাশ্রয়ের পদক্ষেপ হিসেবে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে তেহরানের বেশ কয়েকটি এলাকায় বারবার সরবরাহ বন্ধ রাখা হচ্ছে বলে জানা গেছে। আর চলতি গ্রীষ্মে ঘন ঘন পানি সরবরাহ বন্ধ রাখার ঘটনাও ঘটেছে।
জুলাই ও আগস্টে পানি ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য দুই দিন সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল। ইরানে সে সময় তাপপ্রবাহের মধ্যে প্রতিদিন একাধিকবার লোডশেডিং হয়েছে।
ওই দুই মাসে তেহরানে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট) ছাড়িয়ে গেছে, কোথাও কোথাও তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১২২ ডিগ্রি ফারেনহাইট) ছুঁয়ে গিয়েছিল।
জুলাই ও আগস্ট মাসে তেহরানে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০৪ ফারেনহাইট) ছাড়িয়ে গেছে, কোথাও কোথাও তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১২২ ফারেনহাইট) ছুঁয়ে ছিল।ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ‘আজ যেভাবে আলোচনা হয়েছে, পানিসংকট পরিস্থিতি তার চেয়েও গুরুতর।’
ইরানজুড়ে পানিসংকট একটি বড় সমস্যা, বিশেষ করে দেশের দক্ষিণের শুষ্ক প্রদেশগুলোতে। ভূগর্ভস্থ সম্পদ ব্যবহারে অব্যবস্থাপনা ও সম্পদের অতিরিক্ত ব্যবহারকে পানি ঘাটতির জন্য দায়ী করা হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব পরিস্থিতি আরও খারাপ করতে ভূমিকা রাখছে।
আরও পড়ুনপ্রচণ্ড গরমে পানির ঘাটতি বেড়ে যাওয়ায় ইরানিদের কম পানি ব্যবহারের আহ্বান২০ জুলাই ২০২৫