পাটগ্রাম থানায় হামলা ও আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় আরও তিনজন গ্রেপ্তার
Published: 5th, July 2025 GMT
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম থানায় হামলা, ভাঙচুর এবং সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় হওয়া মামলায় আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার ভোরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন পাটগ্রাম পৌরসভার মির্জারকোর্ট এলাকার বাসিন্দা এবং ভ্রাম্যমাণ আদালতে এক মাসের সাজাপ্রাপ্ত আসামি সোহেল রানা (২৮), পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সহসভাপতি মাসুদ রানা (২৬) এবং উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের নবীনগর গ্রামের বাসিন্দা ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম (৩৪)।
গত বুধবার রাতে পাটগ্রাম থানায় হামলা চালানো হয়। ওই সময় একটি ভ্রাম্যমাণ আদালতে এক মাসের সাজাপ্রাপ্ত দুই আসামিকে থানা থেকে জোর করে ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এ ঘটনায় পাটগ্রাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হামিদুর রহমান বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। মামলায় ২৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। মামলায় সরকারি কাজে বাধা, হত্যার উদ্দেশ্যে সরকারি কর্মচারীকে মারধর, সরকারি সম্পদ ধ্বংস ও চুরি এবং ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
ওই রাতেই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে র্যাবের সহযোগিতায় পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করে। তাঁদের মধ্যে তিনজন অজ্ঞাতনামা এবং একজন এজাহারভুক্ত আসামি। তাঁরা হলেন উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান, পাটগ্রাম ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিদুল ইসলাম মানিক, পাটগ্রাম পৌরসভার ধরলা মোড় এলাকার স্থানীয় বাজারের নৈশপ্রহরী আবুল কালাম এবং পৌরসভার ভেতরবাজারের একটি রেস্তোরাঁর কর্মচারী আবদুর রশিদ।
পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, থানায় হামলা ও আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় করা মামলায় গত দুই দিনে সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের লালমনিরহাট জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এই মামলার প্রধান আসামি পাটগ্রাম উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি ও পাথরমিশ্রিত বালুমহালের ইজারাদার বাদশা জাহাঙ্গীর মোস্তাজির। মামলার দ্বিতীয় আসামি পাটগ্রাম পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও পাথরমিশ্রিত বালুমহালের অপর ইজারাদার মাহমুদ হোসেন। তাঁদের গতকাল বিএনপি ও যুবদল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর উপজ ল র ব প রসভ র ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
ছুটি না পেয়ে অসুস্থ শ্রমিকের মৃত্যু, মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
নারায়ণগঞ্জের বন্দরের মদনপুর এলাকায় লারিজ ফ্যাশনের পোশাক কারখানায় অসুস্থ হয়ে রিনা আক্তার (৩২) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা।
সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে তারা মদনপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও শ্রমিকরা জানিয়েছেন, রিনা আক্তার অসুস্থ অবস্থায় কারখানায় কাজ করছিলেন। রোববার তিনি বেশি অসুস্থতা অনুভব করলে ছুটি চেয়ে আবেদন করেন। তবে, কর্তৃপক্ষ ওই শ্রমিকের আবেদনে সাড়া না দিয়ে কাজ করতে বাধ্য করেন। ওই নারী গুরুতর অসুস্থ হয়ে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে সহকর্মীরা স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অবরোধকারী শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য মালিকপক্ষ দায়ী। রিনা অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও তাকে ছুটি দেওয়া হয়নি। চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন তিনি।
লারিজ ফ্যাশনের মালিকপক্ষ ও কর্মকর্তাদেরকে গ্রেপ্তার করার দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকরা।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে লারিজ ফ্যাশন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শিমুল বলেছেন, আমাদের একজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে মৃত্যু হয়। এতে আমাদের কোনো গাফিলতি নেই। আমরা আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেছেন, সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য গার্মেন্টস মালিকপক্ষ দায়ী, এমন অভিযোগ করে শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমেছেন। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি। ঘটনাস্থলে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশও আছে। শ্রমিকরা রাস্তা থেকে সরে গেছেন। যানচলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
ঢাকা/অনিক/রফিক