যৌতুকের মামলার আগে মধ্যস্থতা বাধ্যতামূলক করা নিয়ে মহিলা পরিষদের উদ্বেগ
Published: 7th, July 2025 GMT
যৌতুক দাবি, যৌতুকের কারণে সাধারণ জখমের শিকার নারীদের মামলা করার আগে বাধ্যতামূলক মামলাপূর্ব মধ্যস্থতার বিধান করার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। আজ সোমবার এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করে বিধানটি পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু এ বিবৃতি দেন। যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ১ জুলাই ‘আইনগত সহায়তা প্রদান (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫’ জারির মাধ্যমে আইনগত সহায়তা প্রদান আইন, ২০০০–এর ২১ ধারায় নতুন বিধান যুক্ত করে যৌতুক দাবি, যৌতুকের কারণে সাধারণ জখমের শিকার নারীদের মামলার আগে বাধ্যতামূলক মামলাপূর্ব মধ্যস্থতার বিধান যুক্ত করা হয়েছে। নতুন যুক্ত বিধান অনুসারে যৌতুক দাবি, যৌতুকের কারণে সাধারণ জখমের শিকার ভুক্তভোগী নারীকে লিগ্যাল এইড অফিসে মধ্যস্থতার মাধ্যমে নিষ্পত্তির উদ্দেশ্যে আবেদন করতে হবে এবং মধ্যস্থতা–প্রক্রিয়ায় ব্যর্থ হলে বিরোধের কোনো পক্ষ প্রয়োজনে উপযুক্ত আদালতে মামলা করতে পারবেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, যৌতুক দাবি, যৌতুকের কারণে সাধারণ জখমের শিকার নারীদের বাধ্যতামূলক মামলাপূর্ব মধ্যস্থতার বিধান যুক্ত করার মাধ্যমে নারীর ন্যায়বিচারের অভিগম্যতা বাধাগ্রস্ত হতে পারে। বিচারপ্রার্থী ভুক্তভোগী নারীকে বাধ্যতামূলক মধ্যস্থতার দিকে ঠেলে দেওয়ার মানে হচ্ছে তাঁকে আইনি অধিকার থেকে বঞ্চিত করা। মধ্যস্থতায় কোনো একটি পক্ষ আপসে রাজি না হলে নির্যাতনের শিকার নারী পরে মামলা করে তা প্রমাণে বাধাগ্রস্ত হতে পারেন। এতে ভুক্তভোগীর হয়রানি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, যৌতুক প্রতিরোধের জন্য দীর্ঘদিন আন্দোলন হয়েছে। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যৌতুক প্রতিরোধে আইন হয়েছে। আইনে যৌতুককে দণ্ডণীয় অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাই এমন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা ঠিক হবে না, যাতে যৌতুকের মতো অপরাধ সমাজে প্রশ্রয় পায়। আইনে বাধ্যতামূলক মামলাপূর্ব মধ্যস্থতার বিধান যুক্ত করার মাধ্যমে যৌতুক, যৌতুকের কারণে সাধারণ জখমের মতো অপরাধকে কম গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। বাধ্যতামূলক বিচারপূর্ব মধ্যস্থতা নারীর ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে। যৌতুক দাবি, যৌতুকের কারণে সাধারণ জখমের শিকার নারীদের সরাসরি আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চাওয়ার ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে, যা নারীর মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল।
সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে যৌতুক দাবি, যৌতুকের কারণে সাধারণ জখমের শিকার নারীদের মামলার আগে বাধ্যতামূলক মামলাপূর্ব মধ্যস্থতার বিধানটি পুনর্বিবেচনার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানায় মহিলা পরিষদ। পাশাপাশি যৌতুকের মতো বিষয়টিকে সমাজ থেকে নির্মূলের লক্ষ্যে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আহ্বান জানাচ্ছে। বিবৃতিতে যৌতুকের বিরুদ্ধে গণসচেতনতা বাড়ানোসহ সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলারও আহ্বান করা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব ধ ন য ক ত কর
এছাড়াও পড়ুন:
শ্রীবরদীতে ভারতীয় জিরা নিয়ে তুলকালাম
শেরপুরের শ্রীবরদী সীমান্তে ১৬ বস্তা ভারতীয় চোরাই জিরা ও কাপড় আটক করেছেন স্থানীয়রা। পরে স্থানীয় স্বার্থান্বেষী একটি মহল আত্মসাতের উদ্দেশ্যে সেসব জিরা সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। পরে অন্য একটি পক্ষ আবার সেই জিরা আটক করে। এ নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড ঘটে।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে উপজেলার ভায়াডাঙ্গা বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
পরবর্তীতে হাসধরা এলাকায় দ্বিতীয়বার আটক হয়। এসময় স্থানীয়রা বেশকিছু বস্তা জিরা লুট করে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা পুলিশ ও বিজিবিকে খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে মালামাল উদ্ধার করে তাওয়াকুচা বিজিবি ক্যাম্পে নিয়ে যায়।
স্থানীয়রা জানান, রাত ৯টার দিকে ভারতীয় চোরাই জিরা ও কাপড় বোঝাই একটি ট্রলি ঝিনাইগাতী থেকে ভায়াডাঙ্গা বাজার দিয়ে শ্রীবরদী হয়ে শেরপুরের দিকে যাচ্ছিলো। স্থানীয়রা বিষয়টি টের পেয়ে ট্রলিটি আটক করে। এসময় ট্রলি চালক কৌশলে পালিয়ে যায়।
সেসময় স্থানীয় অপর একটি পক্ষ সুকৌশলে আরেক চালককে দিয়ে ট্রলিটি সরিয়ে নিয়ে যায়। ঘটনা জানাজানি হওয়ার সাথে সাথে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে হাসধরা এলাকায় ট্রলিটি আবার আটক হয়। এসময় প্রায় অর্ধেক মালামাল লুট করে এক পক্ষ।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. ইমন আকন্দ বলেন, “আমরা ভায়াডাঙ্গা বাজারে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। পরবর্তীতে স্থানীয় কয়েকজন নেতা নতুন করে অন্য ড্রাইভার দিয়ে ট্রলি সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। আমরা অবৈধ পাচার হওয়া মালামাল জব্দ হোক এটাই চাই। এছাড়াও যারা মালামাল লুট করেছে এবং এই পাচারের সাথে যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি করছি।”
এ ব্যাপারে শ্রীবরদী তাওয়াকুচা বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার নায়েব সুবেদার আতিয়ার রহমান বলেন, “আমরা স্থানীয়দের তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে গিয়ে ১৬ বস্তা অবৈধ মালামাল জব্দ করেছি। এই ব্যাপারে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা চলমান আছে।”
শ্রীবরদী থানার উপ-পরিদর্শক সুলতান আহমেদ বলেন, “আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছার পূর্বেই বিজিবি মালামাল জব্দ করেছে। এই ব্যাপারে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।”
ঢাকা/তারিকুল/এস