সময় তখন ভোর চারটা। অন্য দিনের মতোই স্বাভাবিক কাজ করছিলেন গ্যারেজকর্মী মো. ফাহাদ (২০)। যন্ত্রের সাহায্য লরির চাকায় দিচ্ছিলেন হাওয়া। তবে মুহূর্তেই ঘটে বিপত্তি। চাকা থেকে যন্ত্রের পাইপ খোলার সঙ্গে সঙ্গে বিকট বিস্ফোরণে কেঁপে উঠে আশপাশ। বিস্ফোরণে মুহূর্তেই ফাহাদ উড়ে গিয়ে কয়েক হাত দূরে পড়েন।

ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কুমিরা ইউনিয়নের নিমতলা এলাকায়। বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলে নিহত হন মো.

ফাহাদ। গতকাল মঙ্গলবার রাতে এই বিস্ফোরণের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৪ জুলাই নিমতলা এলাকার ‘পারভেজ মোটর ওয়ার্কশপ’ নামের এক গ্যারেজে ঘটে এই ঘটনা। নিহত ফাহাদ নোয়াখালী জেলার সুধারাম থানাধীন কাশীপুর গ্রামের বেলাল হোসেনের ছেলে।

১ মিনিট ২৩ সেকেন্ডের এই ভিডিওতে দেখা যায়, গ্যারেজের পাশেই একটি লরি দাঁড়ানো রয়েছে। এক পাশে যন্ত্র দিয়ে লরির খোলা চাকায় হাওয়া দেওয়া হচ্ছে। লরি ও গ্যারেজের শ্রমিক মিলে ছয়জন সেখানে ছিলেন। একপর্যায়ে ফাহাদ চাকা থেকে হাওয়ার সংযোগ-পাইপ খুলতে যান। টান দিতেই বিকট শব্দে চাকাটি বিস্ফোরিত হয়। এতে চাকাসহ ফাহাদ অন্তত পাঁচ ফুট উঁচুতে উঠে কিছুদূরে গিয়ে পড়েন।

ফাহাদ যে গ্যারেজটিতে কাজ করতেন, এটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে নিচু জমিতে অবস্থিত। এই গ্যারেজ থেকে সিঁড়ি দিয়ে মহাসড়কে উঠতে হয়। ওই মহাসড়কের এক পাশে চাকায় হাওয়া দিচ্ছিলেন ফাহাদ। বিস্ফোরণে সড়ক থেকে উড়ে গ্যারেজের সিঁড়ির কাছে পড়েন তিনি। আতঙ্কে অন্য কর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে দূরে সরে যান। এর এক মিনিট পর এক যুবক এসে ফাহাদকে খুঁজতে থাকেন। পরে অন্য চারজন এসে ফাহাদের নিথর দেহ খুঁজে পান।

এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বারআউলিয়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মোমিন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাটি তাঁর কাছে খুবই মর্মান্তিক লেগেছে। টগবগে ওই যুবক বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থলে মুহূর্তের মধ্যেই মারা যান।

সীতাকুণ্ড থানার ওসি মো. মজিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, দুর্ঘটনার পর ওই যুবককে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল, তবে চিকিৎসক জানিয়েছেন হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় সীতাকুণ্ড থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বরিশালে মাদকবিরোধী অভিযানে যুবদল নেতা গ্রেপ্তার

মাদকবিরোধী অভিযানে বরিশালের গৌরনদী পৌর যুবদলের সদস্য সচিব গোলাম মাহতাবকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

গৌরনদী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. তরিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রবিবার (২ নভেম্বর) দিবাগত রাতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. মেহেদী হাসানের নেতৃত্বে উপজেলার টরকী বাসস্ট্যান্ডের ঈগল কাউন্টারের পেছনে অভিযান চালানো হয়। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে তিন পিস ইয়াবা, মাদক সেবনের বিভিন্ন সরঞ্জাম এবং পৌর যুবদলের সদস্য সচিব গোলাম মাহতাবকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

ওসি জানান, গোলাম মাহতাবের কাছে ইয়াবা পাওয়া না গেলেও মাদক ক্রয়-বিক্রয়ের সঙ্গে তার জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় থানার এসআই মো. জুয়েল বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

এ ব্যাপারে গৌরনদী উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মো. মনির হোসেন বলেছেন, আমি শুনেছি, মাদক সেবনকালে গোলাম মাহতাবকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। দল মাদক সেবন, বিক্রি বা সেল্টার কোনোটাতেই প্রশ্রয় দেয় না। কেউ যদি দলের নাম ব্যবহার করে অপকর্মে জড়িত থাকে এবং তা প্রমাণিত হয়, তাহলে তার বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকা/পলাশ/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ