খাগড়াছড়ির ভাই-বোন ছড়ায় ৮ম শ্রেণির ছাত্রী ধর্ষণের প্রতিবাদে এবং ধর্ষকদের ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে’ দ্রুত বিচার দাবিতে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেকে মিছিল এবং সমাবেশ করা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) হিল উইমেন্স ফেডারেশন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) বাঘাইছড়ি উপজেলা শাখাগুলো যৌথভাবে এই কর্মসূচির আয়োজন করে।

সাজেক পর্যটন সড়কের লাদুমনি বাজারের দ্বপদা হতে শিক্ষার্থী ও জনসাধারণের অংশগ্রহণে মিছিল শুরু করা হয়। মিছিলটি পর্যটন সড়ক হয়ে সাজেকের উজোবাজারে এসে সমাবেশে মিলিত হয়। এ সময় তারা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন এবং বিচারের দাবি জানিয়ে স্লোগান দেন। এতে বঙ্গলতলী, বাঘাইহাট ও মাচলং এলাকার শিক্ষার্থী, নানা শ্রেণিপেশার পাঁচ শতাধিক লোক অংশ নেয়। 

আরো পড়ুন:

৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র আদায় করা হবে : নাহিদ

ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপনের প্রতিবাদে নোবিপ্রবিতে বিক্ষোভ

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের বাঘাইছড়ি উপজেলা সভাপতি অমিতা চাকমা। হিল উইমেন্স ফেডারেশন বাঘাইছড়ি উপজেলা সাধারণ সম্পাদক পরানী চাকমার সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের বাঘাইছড়ি উপজেলা সভাপতি জ্যোতি চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার অর্থ সম্পাদক অনুপম চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের বাঘাইছড়ি উপজেলা সভাপতি সুখী চাকমা ও ছাত্র জনতা সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বাবু ধন চাকমা।

সমাবেশে বক্তারা খাগড়াছড়িতে স্কুলছাত্রী ধর্ষণে জড়িত সকলকে গ্রেপ্তার ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দ্রুত বিচার ও সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিত করার দাবি জানান।

গত ২৭ জুন রথযাত্রা পূজা উৎসব পালন করতে গিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয় ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ওই শিক্ষার্থী। তাকে আটকে রেখে ভিডিও ধারণের পাশাপাশি হুমকিধমকি দেয়া হয়। ১২ জুলাই ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আত্মহত্যার চেষ্টা করে।

পরে ১৬ জুলাই ধর্ষণের ঘটনা জানাজানি হলে শিক্ষার্থীর বাবা ছয়জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। মামলার ছয় আসামির মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও স্থানীয় বিএনপি নেতারা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

ঢাকা/শংকর/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ব ঘ ইছড় উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

আরপিওর বিধানের বৈধতার রায় রিভিউর জন্য হলফনামার অনুমতি

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসংবলিত স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নের সঙ্গে যুক্ত করাসংক্রান্ত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের বিধানের বৈধতা দিয়ে ১৪ বছর আগে রায় দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। এই রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদনের জন্য হলফনামার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছেন দুজন আইনজীবীসহ সাত ব্যক্তি। শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব আজ সোমবার হলফনামা করার অনুমতি দিয়েছেন।

আবেদনকারী সাত ব্যক্তি হলেন ব্যারিস্টার এম সারোয়ার হোসেন, মেজর (অব.) এস এম হারুনুর রশীদ, কাজী জাহেদুল ইসলাম, আইনজীবী এস এম আজমল হোসেন, মেজর (অব.) নিয়াজ আহমেদ জাবের, মেজর (অব.) মো. জিয়াউল আহসান ও সালাহ উদ্দিন।

আদালতে আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ওমর ফারুক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এ মামলায় আবেদনকারীরা পক্ষ ছিলেন না। যে কারণে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন দায়েরের জন্য হলফনামা করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন তাঁরা। চেম্বার আদালত হলফনামা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছেন। আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষে শিগগিরই রিভিউ আবেদন করা হবে।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) ১২(৩ক)(ক) বিধান অনুযায়ী নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসংবলিত স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নপত্রের সঙ্গে যুক্ত করে দিতে হবে। তবে শর্ত থাকে যে কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী ইতিপূর্বে জাতীয় সংসদের কোনো নির্বাচনে সদস্য নির্বাচিত হয়ে থাকলে ওই তালিকা প্রদানের প্রয়োজন হবে না।

আইনজীবীর তথ্য অনুসারে, ঢাকার একটি আসন থেকে ২০০৭ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাহবুব আহমেদ চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি মনোনয়নপত্র নেন। পরে নির্বাচনের ওই তারিখ পিছিয়ে যায়। অন্যদিকে ২০০৮ সালে আরপিও দফা ১২(৩ক)–তে সংশোধনী আনা হয়। এই বিধান সংবিধানের কয়েকটি অনুচ্ছেদ ও আরপিওর ১২(১) ধারার পরিপন্থী উল্লেখ করে মাহবুব আহমেদ চৌধুরী ২০১০ সালে হাইকোর্ট রিট করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট রুল ডিসচার্জ (খারিজ) করে রায় দেন। দফা (৩ক) সংবিধান পরিপন্থী নয় বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।

হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ২০১০ সালে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন রিট আবেদনকারী। শুনানি শেষে আপিল বিভাগ ২০১১ সালের ২৩ জানুয়ারি লিভ টু আপিল খারিজ করে রায় দেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসংবলিত স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নের সঙ্গে যুক্ত করাসংক্রান্ত আরপিওর ১২(৩ক)–তে বেআইনি কিছু পাননি বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।

ওই রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে দুই আইনজীবীসহ সাত ব্যক্তি আবেদন করতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তাঁদের আইনজীবী ওমর ফারুক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে ভোটারের গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে। ভোটার কোন প্রার্থীকে ভোট দেবেন বা দেবেন না, এটি একান্তই তাঁর চিন্তা ও মতপ্রকাশের অধিকার। সিক্রেট ব্যালটে হামলা হলে ভোট বাতিলও হয়। সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে প্রার্থীর যোগ্যতা নির্ধারণ করা আছে। রাজনৈতিক দল হলে ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থন লাগবে না, অথচ স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে গেলে লাগবে অর্থাৎ একই মনোনয়নপত্র ঘিরে দ্বৈত বিধান। ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থন থাকার ওই বিধানের মাধ্যমে স্বতন্ত্র প্রার্থীকে নির্বাচন থেকে বিরত রাখার সুযোগ তৈরি হয়েছে, যা সংবিধান সমর্থন করে না এবং ভোটারের গোপনীয়তারও লঙ্ঘন—এসব যুক্তি তুলে ধরে আবেদনটি করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ