বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন শিরোনামে আন্দোলন হলেও সমাজে এখনো নানা বৈষম্য বিদ্যমান বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম। তিনি বলেছেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছেন দেশের ইসলামপন্থীরা। কিন্তু আগামী দিনে এমনটা হওয়ার সুযোগ আর দেওয়া হবে না। এ জন্য ছাত্র-জনতাসহ সবাইকে সর্বস্তরের অধিকার আদায়ের আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।

আজ সোমবার বিকেলে বরিশাল নগরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের বরিশাল জেলা শাখার সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করিম এসব কথা বলেন। ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগে ২০২৪-এর গণ–অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এ দেশ ফ্যাসিস্টমুক্ত হয়েছে উল্লেখ করে সম্মেলনে সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম আরও বলেন, আগামী দিনে এ দেশ হবে ইসলামপন্থীদের দেশ। দেশকে নেতৃত্ব দিতে হলে ইসলামপন্থীদের যোগ্য হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইউসুফ আহমদ মানসুর। তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন–পরবর্তী সময়ে এখনো দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য ক্ষেত্রে বৈষম্য পরিলক্ষিত হচ্ছে। ফ্যাসিস্ট সরকার হটানোর পরও এখনো লুটপাট, চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি। আন্দোলনে শহীদদের পরিবার ও আহতদের সঙ্গে বৈষম্য করা হচ্ছে।

ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের বরিশাল জেলা সভাপতি এম এম সালাউদ্দিনের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (বরিশাল বিভাগ) মাওলানা মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের তথ্য গবেষণা ও প্রযুক্তি সম্পাদক ফয়জুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলনের বরিশাল মহানগর সভাপতি লোকমান হাকিম, বরিশাল জেলা সহসভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইদ্রিস আলী, শেখ শামসুল আলম প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।

‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’

গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।

বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’

গণজমায়েতে র‌্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ