এনসিটিবি ভবনের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভে ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বামপন্থী শিক্ষার্থীদের মিছিলে পুলিশি হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। 

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বিকেল পৌনে ৫টায় ঢাবি শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাস এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে ভিসি চত্বর ঘুরে রাজু ভাস্কর্যের সামনে সমাবেশে মিলিত হয়। 

এ সময় তারা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস, উই ওয়ান্ট ডেমোক্রেসি’, ‘ক্যাম্পাসে পুলিশ কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘নৃগোষ্ঠীর উপর হামলা কেন? প্রশাসন জবাব চাই’, ‘আমার ভাই আহত কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘তুমি কে আমি কে, বাংলাদেশি বাংলাদেশি’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

সমাবেশে ঢাবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন বলেন, “আজ শিক্ষার্থীরা তাদের যৌক্তিক দাবি নিয়ে যখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দিকে যাচ্ছিল, তখন পুলিশ দিয়ে এ প্রশাসন তাদের ওপর নির্মম হামলা চালিয়েছে। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমার ভাই-বোনেরা আহত হয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ও জাতীয়তাবাদী দল এর তীব্র প্রতিবাদ জানায়।”

সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, “৫ আগস্ট পূর্ববর্তী সময়ে সারাদেশে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা খুন, গুম, নির্যাতনের শিকার হয়েছে। কিন্তু ৫ আগস্টের পর ছাত্রদল এসব ভুলে গিয়ে কোন ক্রেডিট না নিয়ে একটি সুন্দর সাবলীল বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিল। কিন্তু গতকাল একদল গণতন্ত্রকামী শিক্ষার্থীদের উপর আরেক দল যখন সন্ত্রাসী হামলা করল, তখন পুলিশ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিল। অন্যদিকে আজ যখন ঢাবি শিক্ষার্থীরা গতকালের হামলার প্রতিবাদে মিছিল বের করল, ঠিক তখনই পুলিশ তাদের লাঠিচার্জ করল, সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল, জলকামান নিক্ষেপ করল।” 

তিনি বলেন, “এ পুলিশ প্রশাসন কি সে-ই ফ্যাসিবাদের দোসর, যারা শেখ হাসিনার এজেন্ডা বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়? সেটা অবশ্যই আমাদের খতিয়ে দেখতে হবে। ছাত্রদল অনতিবিলম্বে ঢাবিসহ এনসিটিবি ভবনের সামনে হামলায় জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে বিচারের দাবি জানায়। তাছাড়া আমরা ঢাবি ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনায় ঢাবির প্রশাসনকে এসব ব্যর্থতার দায় স্বীকারের দাবি জানাই।”

বিক্ষোভ সমাবেশে ঢাবি ছাত্রদলের সিনিয়র সহ সভাপতি মাসুম বিল্লাহ, সহ সভাপতি আনিসুর রহমান খন্দকার অনিক, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসিরুদ্দিন শাওন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম আক্তার শুভ, সাংগঠনিক সম্পাদক নূর আলম ভূঁইয়া ইমন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল র র উপর

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ