ফেসবুকে আপত্তিকর পোস্ট কমেন্ট-শেয়ারে আইনি শাস্তি
Published: 16th, January 2025 GMT
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে সতর্ক করে নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফেসবুকে আপত্তিকর পোস্ট, কমেন্ট, শেয়ার বা অশ্লীল মন্তব্য করলে আইন অনুযায়ী শাস্তির আওতায় আনা হবে।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা হয়।
নির্দেশিকায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে সরকারি প্রতিষ্ঠান ও কর্মচারীদের করণীয় ও বর্জনীয় নির্ধারণ করা এবং এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা নিশ্চিত করার বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপব্যবহারের জন্য নিজেদের দায়ী থাকতে হবে জানিয়ে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অপব্যবহারকারী সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর বিরুদ্ধে ২০০৩ এর ৪৪ (১) ধারা মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
পরিপত্রে বলা হয়েছে, সম্প্রতি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু কিছু কর্মকর্তা/কর্মচারী ইচ্ছা ও অনিচ্ছাকৃতভাবে বাংলাদেশ ব্যাংক সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রকাশ করেছে। এমনকি সহকর্মীদের বিরুদ্ধে অশ্লীল মন্তব্যও করা হয়েছে। এতে করে ব্যাংকের স্বাভাবিক কর্মপরিবেশ ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলে দাবি করে উক্ত বিভাগ।
সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক, সরকার বা রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় এমন কোনো পোস্ট, ছবি, অডিও বা ভিডিও আপলোড, কমেন্ট, লাইক, শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। জাতীয় ঐক্য ও চেতনার পরিপন্থি কোনো তথ্য-উপাত্ত, প্রকাশ করা হতে বিরত থাকতে হবে। কোনো সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগতে পারে এমন বা ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি পরিপন্থি কোনো তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ করা যাবে না।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট বা আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটতে পারে এরূপ কোনো পোস্ট, ছবি, অডিও বা ভিডিও আপলোড, কমেন্ট, লাইক, শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা অন্য কোনো সার্ভিস বা পেশাকে হেয় প্রতিপন্ন করে এমন কোনো পোস্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
এ ছাড়া লিঙ্গ বৈষম্য বা এ সংক্রান্ত বিতর্কমূলক কোনো তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ করা যাবে না। যেমন- জনমনে অসন্তোষ বা অপ্রীতিকর মনোভাব সৃষ্টি করতে পারে এমন কোনো বিষয়ে লেখা, অডিও বা ভিডিও ইত্যাদি প্রকাশ বা শেয়ার করা। ভিত্তিহীন, অসত্য ও অশ্লীল তথ্য প্রচার হতে বিরত থাকা। অন্য কোনো রাষ্ট্র বা রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য সম্বলিত কোনো পোস্ট, ছবি, অডিও বা ভিডিও আপলোড, কমেন্ট, লাইক, শেয়ার করা থেকে বিরত থাকা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকে কর্মরত সহকর্মীদের সম্পর্কে অশালীন/বিরূপ, বিষোদ্গার বা উত্তেজনামূলক মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে হবে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কন্টেন্ট ও ফ্রেন্ড সিলেকশনে সবাইকে সতর্কতা অবলম্বন এবং অপ্রয়োজনীয় ট্যাগ, রেফারেন্স বা শেয়ার করা পরিহার করতে হবে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপব্যবহার বা নিজ অ্যাকাউন্টের ক্ষতিকারক কন্টেন্টের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মচারী ব্যক্তিগতভাবে দায়ী হবেন এবং সেজন্য প্রচলিত আইন ও বিধি বিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে পরিপত্রে বলা হয়েছে।
নির্দেশনা না মানলে ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহার বা নিজ অ্যাকাউন্টের ক্ষতিকারক কন্টেন্টের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা/কর্মচারী ব্যক্তিগতভাবে দায়ী হবেন’। কর্মকর্তা/কর্মচারীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন পোস্ট, কমেন্ট শেয়ার ইত্যাদি হিউম্যান রিসোর্সেস ডিপার্টমেন্ট-২ কর্তৃক নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে।
ঢাকা/এনএফ/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অপব যবহ র শ য় র কর ব যবহ র ব যবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি বরাবর অভিযোগ করেন।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।