মানুষকে শাস্তি দিতে চাইলে সন্দ্বীপে পাঠান: উপদেষ্টা ফাওজুল
Published: 19th, January 2025 GMT
সন্দ্বীপে যাতায়াত করা শাস্তি দেওয়ার মতো বলে মন্তব্য করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেন, ‘মানুষকে শাস্তি দিতে চাইলে বলতে পারেন, তুমি একবারের জন্য হলেও সন্দ্বীপে যাও। কারণ সন্দ্বীপে যেতে নারীদের কোমড় পানিতে পর্যন্ত নামতে হয়। মাথার ওপরে মালপত্র নিয়ে অনেক কষ্টে নৌযানে উঠতে হয়। তাছাড়াও ঘাটে রয়েছে নানা অব্যবস্থাপনাও।’
রোববার বাঁশবাড়িয়া-গুপ্তছড়া ফেরিঘাটের কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘ সন্দ্বীপ একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ। তবে এখানে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। সন্দ্বীপের মানুষকে জিম্মি করে রাখা হয়েছে। মানুষ বাড়িতে যাওয়া বা আত্মীয়-স্বজনদের সাথে দেখা করতে যাওয়া তো অপরাধ না। আমার বাড়িও সন্দ্বীপ, কিন্তু সেটা মূল বিষয় না। এটি উন্নয়নের ইস্যু। উন্নয়ন সব ঢাকা কিংবা বড় শহরে হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ অনুযায়ী, যেসব জায়গায় উন্নয়নের ছোঁয়া পৌঁছেনি সেসব জায়গায় পৌঁছাতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অন্যান্য যেসব বিচ্ছিন্ন জেলা যেমন ভোলাতে আমরা ব্রিজের চিন্তা করছি। সন্দ্বীপের ব্যাপারেও ফেরিটা কতটুকু সফল হয় সেটা দেখে পরবর্তীতে আমরা সড়ক যোগাযোগের দিকে ভাববো। তবে মনে রাখতে হবে সড়ক নির্মাণ খুবই ব্যয়বহুল। এজন্য ওখানে যদি কোনো অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড না হয় তবে সড়কের বিনিয়োগ ঠিক হবে না। ভোলাতে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যাওয়ায় ব্রিজ করার চিন্তা করা হচ্ছে। কারণ ওখানে মানুষের যাতায়াতের প্রয়োজনীয়তা বেড়েছে। আপনি চিতল পিঠা খেতে সন্দ্বীপ যাবেন এর জন্য তো ১০ থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকা দিয়ে ব্রিজ করবে না। করলে অন্যায় হবে। কারণ সরকারের সম্পদ কিন্তু সীমিত।’
ফেরি চলাচল করা প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘দুইপাশে এপ্রোচ সড়ক যেটি রয়েছে সেই কাজটি এখন করছি। আমরা টার্গেট নিয়েছি মার্চের ১০ তারিখের মধ্যে এটি অপারেশনের জন্য প্রস্তুত হবে। প্রধান উপদেষ্টা প্রতিনিয়ত এ ব্যাপারে খোঁজ নেন। আমরা সেইভাবে কাজটি আগাচ্ছি এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ইনশাআল্লাহ এটির কাজ শেষ করবো।’ এসময় বিআইডব্লিউটিএ’র প্রধান প্রকৌশলী (ড্রেজিং) রকিবুল ইসলাম তালুকদারসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পরে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান চট্টগ্রাম কলেজ অডিটোরিয়ামে অধ্যাপক আসিফুল হক খান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হন। সেখানে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে ফাওজুল কবির বলেন, ‘বর্তমান প্রজন্মকে প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত করতে যে শিক্ষা প্রয়োজন তা শুধু শ্রেণিকক্ষের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। তোমাদের মধ্যে যারা আজকে বৃত্তি পেয়েছো, ভালো রেজাল্ট করেছো সে জন্য অতিরিক্ত খুশি কিংবা অপেক্ষাকৃত কম সিজিপিএ’র জন্য ব্যথিত হওয়ার কোনও কারণ নাই। কারণ, তোমার কাছে কি ডিগ্রি বা সিজিপিএ আছে তার চেয়েও দেশের জন্য তুমি কি করতে পারবে সেটাই বড় কথা।’
তিনি বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে যারা পঙ্গুত্ব বরণ করেছে তাদের কাছে গিয়ে জানতে চেষ্টা করো- কেন হাজার হাজার শিক্ষার্থী জীবন দিয়েছে, পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। দেশপ্রেম কি, সেটা তাদের কাছে প্রকৃতভাবে শিখতে পারবে।’
চট্টগ্রাম কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ মোজাহেদুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সোনালী ব্যাংক পিএলসি এর চেয়ারম্যান, সাবেক কম্পট্রোলার অডিটর জেনারেল ও সাবেক অর্থ সচিব মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারের ভেতরে একটা অংশ নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে: এনসিপি
সরকারের ভেতরের একটি পক্ষ ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশের বাইরে গিয়ে নিজেরাই ঐকমত্য কমিশন হওয়ার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেন, এই চেষ্টার কারণে নির্বাচন ঝুঁকিতে পড়বে।
আজ সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আখতার হোসেন এ কথা বলেন।
আখতার হোসেন বলেন, তাঁদের কাছে স্পষ্টতই প্রতীয়মান যে সরকারের ভেতরের কোনো একটা অংশ সংস্কারকে ভন্ডুল করে নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ–আলোচনার ভিত্তিতেই কমিশন সুপারিশ উপস্থাপন করেছে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, সেই সুপারিশের ভিত্তিতেই সরকার আদেশ জারি করবে, সেটাই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যখন সরকারের তরফ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে আরও এক সপ্তাহ রাজনৈতিক দলগুলোকে আলাপ–আলোচনার কথা বলা হয়, তখন মনে হয় যে সরকার আসলে এই সংস্কারের বিষয়গুলো নিয়ে সাপ-লুডো খেলছে। তিনি বলেন, ‘আমরা ৯৬-তে পৌঁছে গিয়েছিলাম, সেটাকে আবার তিনে নিয়ে আসা হয়েছে সাপ কেটে। এ অবস্থায় বাংলাদেশের বর্তমান যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি, তাতে সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে।’
অতি দ্রুত সরকারকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানিয়ে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, সরকারকে নিজেকেই দায়িত্ব নিয়ে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করতে হবে। সামনের সংসদকে গাঠনিক ক্ষমতা প্রদান করার মধ্য দিয়ে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। গণভোটের মাধ্যমে অর্জিত জনগণের অভিপ্রায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে যেন বাস্তবায়িত হয়, সেই সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হবে।