প্রিয় বান্ধবীর জন্মদিনে ভালো কোনো উপহার দেওয়া দরকার, তবে হাতে কোনো টাকা নেই ১৮ বছরের তরুণ ইবতেশাম রহমান আলফির কাছে। মা–বাবার কাছে টাকা চেয়ে ব্যর্থ হয়েছেন। এরপর তার মাথায় আসে এক অদ্ভুত পরিকল্পনা। তিনি বিভিন্ন স্থান থেকে জুতা চুরি করতে শুরু করেন। ইচ্ছে ছিল, এসব জুতা বিক্রির টাকা দিয়ে কিনবেন উপহার। তবে তার আগেই গতকাল বুধবার দুপুরে রাজধানীর পান্থপথে জুতা চুরির পর তিনি ধরা পড়েন। এ সময় সঙ্গে থাকা খেলনা পিস্তল বের করে সবাইকে ভয় দেখিয়ে পালানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন তিনি। পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানান চুরির নেপথ্যের কারণ।

কলাবাগান থানার ওসি মো.

মোক্তারুজ্জামান সমকালকে বলেন, আটক তরুণ নিজেকে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বলে দাবি করেছেন। তাঁর কাছে পাওয়া পিস্তলটি দেখতে আসলের মতো। ৫৪ হাজার টাকা দিয়ে তিনি বসুন্ধরা সিটি শপিং মল থেকে এটি কিনেছেন বলে জানান। সেটি নিয়েই তিনি জুতা চুরি করেন। ধরা পড়লে গুলি করার ভয় দেখান। তবে বাস্তবে ওই পিস্তলে গুলি ভরার কোনো সুযোগ নেই।

ওসি জানান, আলফির বাসা মোহাম্মদপুরে। গতকাল তিনি কোচিং সেন্টারে ভর্তি হওয়ার উদ্দেশে তাঁর মায়ের সঙ্গে পান্থপথ এলাকায় আসেন। কোচিং সেন্টারে ভর্তি সংক্রান্ত আলোচনা শেষে তাঁর মা এক আত্মীয়ের বাসায় যান। এরপর আলফি তাঁর চুরির মিশনে নামেন। তিনি তিন দিন ধরে জুতা চুরি করছিলেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন। তাঁর বাবা একজন ব্যবসায়ী। 

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা যায়, দুপুরে পান্থপথের এসআইবিএল ফাউন্ডেশন হাসপাতালের ভেতরের মসজিদে জোহরের নামাজ পড়ে বের হন মুসল্লীরা। এ সময় দেখা যায়, একজনের জুতা নেই। তিনিসহ অন্যরা হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে চুরিতে জড়িত সন্দেহে একজনকে শনাক্ত করেন। পরে বাইরে বেরিয়ে তারা সিসিটিভিতে দেখা যুবকের মতো একজনকে পান। তাকে এ নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে একটি পিস্তল বের করেন। তিনি গুলি করার ভয় দেখালে সবাই সরে আসেন। এই সুযোগে তিনি পালানোর জন্য দৌড় দেন। এর মধ্যে এক রিকশাচালক ‘ছিনতাইকারী, ছিনতাইকারী’ বলে চিৎকার করে ওঠেন। তখন কিছু লোকজন তাকে ধাওয়া করেন। যুবক পান্থপথ ট্রাফিক পুলিশ বক্সের দিকে পালানোর সময় তাকে আটক করেন ট্রাফিক পুলিশের এসআই খবির হোসেন। 

এসআই খবির হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ট্রাফিক আইন অমান্য করা কিছু গাড়িকে জরিমানা করার সময় ওই যুবককে পালিয়ে যেত দেখি। লোকজন তাকে আটকের চেষ্টা করছিল। তখন আমিও গিয়ে তাকে আটকানোর চেষ্টা করি। তবে তিনিও পালানোর চেষ্টা চালানোয় ধস্তাধস্তি হয়। এতে আমিসহ কয়েকজন পথচারী আহত হই। পরে পিস্তলসহ ওই যুবককে আটক করে কলাবাগান থানায় হস্তান্তর করা হয়।

কলাবাগান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে তরুণের বক্তব্য অসংলগ্ন মনে হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, তিনি মাদকাসক্ত। মাদকের টাকা জোগাতে তিনি চুরি করেন। প্রকৃতপক্ষে কী কারণে তিনি পিস্তল নিয়ে জুতা চুরি করতে গিয়েছিলেন তা তদন্তে বেরিয়ে আসবে। এ ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে একটি চুরির মামলা হয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: মসজ দ প ন থপথ

এছাড়াও পড়ুন:

পুলিশের ওপর হামলা করে আটক ব্যক্তিকে ছিনিয়ে নিল জনতা, গ্রেপ্তার ৩

ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলায় পুলিশের ওপর হামলা করে আটক এক ব্যক্তিকে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। গ্রেপ্তার করা হয়েছে দুই নারীসহ তিনজনকে। গতকাল সোমবার রাতে উপজেলার মহামায়া ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

আহত ব্যক্তিরা হলেন ডিবির উপপরিদর্শক (এসআই) তানভীর মেহেদী, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) খোকন হোসেন ও রিংকু বড়ুয়া, কনস্টেবল জাহাঙ্গীর হোসেন ও মুজিবুর রহমান। তাঁদের ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। গ্রেপ্তার তিনজন হলেন জয়নাল আবদীন (২০), রুজিনা আক্তার (৩২) ও মোসাম্মৎ রূপধন (৪৮)। তাঁরা জয়নগর গ্রামেরই বাসিন্দা।

পুলিশ জানায়, রাতে ওই এলাকায় মোহাম্মদ আলমগীর নামের এক মাদক কারবারিকে ধরতে তারা অভিযান চালায়। আলমগীরকে আটক করা হলে স্থানীয় প্রায় অর্ধশত বাসিন্দা জড়ো হয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালান। একপর্যায়ে তাঁকে ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেন।

জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মর্ম সিংহ ত্রিপুরা বলেন, এ ঘটনায় আহত এসআই তানভীর মেহেদী বাদী হয়ে ছাগলনাইয়া থানায় মামলা করেছেন। সেই মামলায় গ্রেপ্তার তিনজনকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শান্তিনগরে বাসের ধাক্কায় নারীর মৃত্যু
  • এক লাখ টাকা ঘুষ দাবির অভিযোগ, ওসি ও এসআইয়ের বিরুদ্ধে নালিশি
  • গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ আরও এক নারীর মৃত্যু
  • গৌরনদী থানার ওসি-এসআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা
  • পুলিশের ওপর হামলা করে আটক ব্যক্তিকে ছিনিয়ে নিল জনতা, গ্রেপ্তার ৩
  • শিক্ষক রায়হান অভিযুক্ত হলেও নাম নেই অস্ত্র ব্যবসায়ীর
  • দুই দিনের রিমান্ডে সাবেক প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত