বান্ধবীকে জন্মদিনের উপহার দিতে পিস্তল নিয়ে জুতা চুরিতে শিক্ষার্থী
Published: 29th, January 2025 GMT
প্রিয় বান্ধবীর জন্মদিনে ভালো কোনো উপহার দেওয়া দরকার, তবে হাতে কোনো টাকা নেই ১৮ বছরের তরুণ ইবতেশাম রহমান আলফির কাছে। মা–বাবার কাছে টাকা চেয়ে ব্যর্থ হয়েছেন। এরপর তার মাথায় আসে এক অদ্ভুত পরিকল্পনা। তিনি বিভিন্ন স্থান থেকে জুতা চুরি করতে শুরু করেন। ইচ্ছে ছিল, এসব জুতা বিক্রির টাকা দিয়ে কিনবেন উপহার। তবে তার আগেই গতকাল বুধবার দুপুরে রাজধানীর পান্থপথে জুতা চুরির পর তিনি ধরা পড়েন। এ সময় সঙ্গে থাকা খেলনা পিস্তল বের করে সবাইকে ভয় দেখিয়ে পালানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন তিনি। পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানান চুরির নেপথ্যের কারণ।
কলাবাগান থানার ওসি মো.
ওসি জানান, আলফির বাসা মোহাম্মদপুরে। গতকাল তিনি কোচিং সেন্টারে ভর্তি হওয়ার উদ্দেশে তাঁর মায়ের সঙ্গে পান্থপথ এলাকায় আসেন। কোচিং সেন্টারে ভর্তি সংক্রান্ত আলোচনা শেষে তাঁর মা এক আত্মীয়ের বাসায় যান। এরপর আলফি তাঁর চুরির মিশনে নামেন। তিনি তিন দিন ধরে জুতা চুরি করছিলেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন। তাঁর বাবা একজন ব্যবসায়ী।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা যায়, দুপুরে পান্থপথের এসআইবিএল ফাউন্ডেশন হাসপাতালের ভেতরের মসজিদে জোহরের নামাজ পড়ে বের হন মুসল্লীরা। এ সময় দেখা যায়, একজনের জুতা নেই। তিনিসহ অন্যরা হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে চুরিতে জড়িত সন্দেহে একজনকে শনাক্ত করেন। পরে বাইরে বেরিয়ে তারা সিসিটিভিতে দেখা যুবকের মতো একজনকে পান। তাকে এ নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে একটি পিস্তল বের করেন। তিনি গুলি করার ভয় দেখালে সবাই সরে আসেন। এই সুযোগে তিনি পালানোর জন্য দৌড় দেন। এর মধ্যে এক রিকশাচালক ‘ছিনতাইকারী, ছিনতাইকারী’ বলে চিৎকার করে ওঠেন। তখন কিছু লোকজন তাকে ধাওয়া করেন। যুবক পান্থপথ ট্রাফিক পুলিশ বক্সের দিকে পালানোর সময় তাকে আটক করেন ট্রাফিক পুলিশের এসআই খবির হোসেন।
এসআই খবির হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ট্রাফিক আইন অমান্য করা কিছু গাড়িকে জরিমানা করার সময় ওই যুবককে পালিয়ে যেত দেখি। লোকজন তাকে আটকের চেষ্টা করছিল। তখন আমিও গিয়ে তাকে আটকানোর চেষ্টা করি। তবে তিনিও পালানোর চেষ্টা চালানোয় ধস্তাধস্তি হয়। এতে আমিসহ কয়েকজন পথচারী আহত হই। পরে পিস্তলসহ ওই যুবককে আটক করে কলাবাগান থানায় হস্তান্তর করা হয়।
কলাবাগান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে তরুণের বক্তব্য অসংলগ্ন মনে হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, তিনি মাদকাসক্ত। মাদকের টাকা জোগাতে তিনি চুরি করেন। প্রকৃতপক্ষে কী কারণে তিনি পিস্তল নিয়ে জুতা চুরি করতে গিয়েছিলেন তা তদন্তে বেরিয়ে আসবে। এ ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে একটি চুরির মামলা হয়েছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
গোপালগঞ্জে সুদের টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ২৫
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় সুদের টাকা লেনদেনের বিরোধকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের মধ্যে ২ ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে ৪ পুলিশসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনা বাহিনী ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশ ২৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে উভয়পক্ষের ৪৫ জনকে আটক করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
আহতরা হলেন- পারভেজ শেখ (২০), মানিক শেখ (৪১), সাদ্দাম শেখ (৩৫), শাকিল খান (২৫), ফয়সাল শেখ (২০), আবু সাঈদ শেখ (৪০), সজীব শেখ (১৯), রনি শেখ (৪০), সোহেল সুলতান (২৫), আফ্রিদি শেখ (১৯), মোস্তফা শেখ (৪০), নুরুন্নবী (১৮), আমানুল্লাহসহ (২৫) আরও অনেকে।
গুরুতর আহতদের গোপালগঞ্জ ও কোটালীপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া কোটালীপাড়া থানার আহত এসআই সেলিম মাহমুদ কোটালীপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। ওই এসআইসহ কোটালীপাড়া থানার আরও ৩ কনস্টেবল আহত হয়েছেন বলে কোটালীপাড়া থানার এসআই মামুনুর রশীদ জানিয়েছেন।
মাঝবাড়ি গ্রামের কালাম দাড়িয়া ও বংকুরা গ্রামের হাসেম মুন্সি জানিয়েছেন, কোটালীপাড়া উপজেলার বংকুরা গ্রামের রিয়াজুলের কাছ থেকে মাঝবাড়ি গ্রামের ফারুক দাড়িয়া সুদে টাকা নেন । সেই টাকা সময়মত ফারুক সুদে আসলে পরিশোধ করতে গড়িমসি শুরু করেন। এতে পাওনাদার রিয়াজুল ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। সুদের টাকা লেনদেন নিয়ে দু’জনের মধ্যে আজ শুক্রবার সকালে বাকবিতণ্ডা হয়। এদিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মসজিদের মাইক থেকে গ্রামবাসীকে সংঘর্ষে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। এ আহ্বানের পর দুই গ্রামের লোকজন ঢাল-সড়কিসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। দফায়-দফায় উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ চলে। পুলিশ প্রথমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়। দুই ঘণ্টা পর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করে।
উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করায় ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
কোটালীপাড়া পাড়া থানার ওসি মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ২৫ রাউন্ড গুলি বর্ষণ ও উভয়পক্ষের ৪৫ জনকে আটক করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে জানিয়ে ওসি আরও বলেন, এলাকার পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কোন পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়নি। অভিযোগ পাওয়ামাত্র আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অভিযুক্ত রিয়াজুল ও ফারুক দাড়িয়ার ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে। এ কারণে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।