যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসি ও পেনসিলভানিয়ায় ভয়াবহ দুটি বিমান দুর্ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আবার দুর্ঘটনা ঘটল দেশটিতে। এবার হিউস্টনে টেকঅফের সময় একটি বিমানে আগুন ধরে গেছে। স্থানীয় সময় রবিবার (২ জানুয়ারি) সকালে এ ঘটনা ঘটেছে। 

সোমবার (৩ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এপি। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, জর্জ বুশ ইন্টারকন্টিনেন্টাল এয়ারপোর্ট থেকে উড্ডয়নের সময় ইউনাইটেড এয়ারলাইনসের ফ্লাইট ১৩৮২-এ আগুন ধরে যায়। নিউ ইয়র্কের উদ্দেশে রওনা দিচ্ছিল বিমানটি। রানওয়েতে টেকঅফের আগ মুহূর্তে বিমানের একটি উইংয়ে হঠাৎই আগুন ধরে যায়।

আরো পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ কানাডা-মেক্সিকোর, মামলা করবে চীন

আইএসকে কড়া হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) জানিয়েছে, এ ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। সকল যাত্রীকে বিমান থেকে নিরাপদে বের করে টার্মিনালে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।

ঘটনাটি তদন্ত করবে বলে জানিয়েছে এফএএ।

ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ফ্লাইটটিতে ১০৪ জন যাত্রী এবং পাঁচজন ক্রু সদস্য ছিলেন। এটি নিউ ইয়র্কের লাগার্ডিয়া বিমানবন্দরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিল।

আগুন লাগার ঘটনায় তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে যাত্রীদের মধ্যে। ঘটনার মুহূর্তের একটি ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, আতঙ্কে চিৎকার করছেন যাত্রীরা। উইংয়ে দেখা যাচ্ছে আগুনের ফুলকি। এক যাত্রীকে বলতে শোনা যাচ্ছে, “প্লিজ় প্লিজ় প্লিজ়, আমাদের এখান থেকে উদ্ধার করুন।”

গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে দুটি প্লেন দুর্ঘটনায় ৭৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত শুক্রবার পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের ফিলাডেলফিয়া শহরে একটি ছোট বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ছয় আরোহীর সবাই নিহত হয়েছেন।

তার আগে স্থানীয় সময় বুধবার ওয়াশিংটন ডিসির রিগ্যান ন্যাশনাল এয়ারপোর্টে সামরিক হেলিকপ্টার ও একটি যাত্রীবাহী বিমানের মধ্যে সংঘর্ষে ৬৭ জন আরোহীর সবাই নিহত হোন।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ র ঘটন ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।

‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’

গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।

বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’

গণজমায়েতে র‌্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ