ফরিদপুরে আ’লীগ-বিএনপির সংঘর্ষ, ৩০ বাড়িতে ভাঙচুর
Published: 3rd, February 2025 GMT
ফরিদপুরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় সংঘর্ষে নেতৃত্ব দেওয়া দুই নেতার বাড়িসহ অন্তত ৩০টি বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। আহত হয়েছে অন্তত আটজন। এর মধ্যে তিনজনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের ফুসরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ফুসরা গ্রামটি কানাইপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে। এ গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে একটি পক্ষের নেতৃত্ব দেন আক্কাস মাতুব্বর। তিনি ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। অপরপক্ষের নেতৃত্ব দেন হাশেম খান। তিনি একই ওয়ার্ডের বিএনপির সভাপতি। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত রোববার বিকেলে এলাকার একটি পুকুরে মাছ ধরা নিয়ে দু’পক্ষের দুই সমর্থকের মধ্যে ঝগড়া হয়। এর জেরে দেখা দেয় উত্তেজনা।
এ খবর পেয়ে ওইদিন রাতেই কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জাফর ইকবাল ঘটনাস্থলে গিয়ে দু’পক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। এ নিয়ে কোনো সংঘর্ষে জড়াবেন না বলে দু’পক্ষের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি নিয়েছিলেন তিনি। এলাকার অনেকেই জানান, ওই প্রতিশ্রুতি আক্কাস মাতুব্বর মেনে নিলেও হাশেম খান গোপনে প্রস্তুতি নেন।
গতকাল সকালে হাশেম খানের সমর্থকরা আক্কাস ও তার সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর এবং গরু-ছাগল লুটপাট করে। পরে আক্কাস সমর্থকরা সংগঠিত হয়ে হাশেমের বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। এ সময় অন্তত ৩০ বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পরে কোতোয়ালি থানার পুলিশ, সেনাবাহিনীর সদস্য এবং র্যাব গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
কানাইপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন জানান, আক্কাস মাতুব্বর এবং হাশেম খানের মধ্যে এলাকার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আগে থেকেই বিরোধ চলছিল।
আক্কাস মাতুব্বর বলেন, পুলিশকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি আমি মেনে নিলেও হাশেম খান তা মানেনি। তার সমর্থকরা অতর্কিতভাবে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। অভিযোগ অস্বীকার করে হাশেম খান বলেন, আক্কাসের সমর্থকরা আমার বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করেছে। কোতোয়ালি থানার ওসি মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ঘর ষ সমর থকর স ঘর ষ র সমর
এছাড়াও পড়ুন:
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি বরাবর অভিযোগ করেন।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।