কুড়িগ্রামের চর রাজিবপুর থানায় জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়ে অভিযোগ করতে গিয়ে রেজাউল করিম নামে এক ব্যক্তি হেনস্তার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বুধবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার থানা মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। রেজাউল করিম উপজেলার কোদালকাটি ইউনিয়নের চাইর উদ্দিন মেম্বার পাড়া গ্রামের বাসিন্দা।

ভুক্তভোগীর ভাষ্য, থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আসাদুজ্জামান বাদী রেফাজউদ্দিনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে বিবাদী রেজাউল করিমকে টেনেহিঁচড়ে থানায় নিয়ে ভয়-ভীতি দেখিয়েছেন।

এ ঘটনার একটি ভিডিও সমকালের কাছে এসেছে। ভিডিওতে দেখা যায়, চর রাজিবপুর থানার এসআই আসাদুজ্জামান ও আরেক পুলিশ সদস্য সাধারণ পোশাক পরা অবস্থায় থানার গেটের সামনে থেকে  রেজাউল করিমের কোমরের বেল্ট ধরে টেনেহিঁচড়ে থানার ভেতরে নিয়ে যাচ্ছে।

রেজাউল করিম বলেন, জমিজমা নিয়ে রেফাজউদ্দিনের সঙ্গে আমার দীর্ঘদিন ধরে ঝামেলা চলছে। দুই দিন আগে এসিল্যান্ড স্যার বিষয়টা তদন্ত করেন। তারপর পরামর্শ দেন থানায় অভিযোগ করতে। আমি সকালে থানায় অভিযোগ দিতে গেলে এসআই আসাদুজ্জামান আমাকে টেনেহিঁচড়ে থানায় নিয়ে মারধর করে এবং জেলের ভেতরে আটকে রাখে। এ সময় হুমকি দেয়- আমাকে হত্যা মামলার আসামি করবে। পরে আমি ভয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত এসআই আসাদুজ্জামান বলেন, ঘটনা সত্য না। জমিজমা বিষয়ে কোর্টে একটা মামলা আছে। এসিল্যান্ড স্যার তদন্ত করছেন। থানায় বিষয়টি জানানোর পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রেজাউল করিমকে থানায় নেওয়া হয়। তাকে টানাহেঁচড়া করা হয়নি।

আপনি কি মামলার তদন্তের দায়িত্বে আছেন, এমন প্রশ্নে এসআই বলেন, আমি দায়িত্বে নেই। অন্য একটা মামলার তদন্তে আমি তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি।

চর রাজিবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তসলিম উদ্দিন বলেন, ২০১৩ সালে জামায়াতের অফিস ভাঙচুরের একটি মামলায় রেজাউলের বাবা তাহের আলীকে আসামি করা হয়েছে। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি। তার বিষয়ে জানতে ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হইছে। কোনো হুমকি দেওয়া হয়নি।

মামলার বিষয়ে রেজাউল করিমের বাবা তাহের আলী বলেন, আমার নামে কোনো মামলা নেই। পুলিশ মিথ্যা বলছে। আমি আমার এলাকায় চলাফেরা করছি। আমার ছেলে জমিজমার বিষয়ে অভিযোগ করতে গেলে উল্টো তাকে হেনস্তা করে পুলিশ।

উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আবুল বাশার মোহাম্মদ আব্দুল লতিফ বলেন, আমরা অফিস ভাঙচুরে বিষয়ে গতকাল রাতে থানায় একটি মামলা করেছি। কোদালকাটির আওয়ামী লীগ নেতা রেজাউল করিমকে আমি চিনি না। মামলার আসামি কিনা জানি না।

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মো.

মাহফুজুর রহমান বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

গোপালগঞ্জে সুদের টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ২৫

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় সুদের টাকা লেনদেনের বিরোধকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের মধ্যে ২ ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে ৪ পুলিশসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনা বাহিনী ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশ ২৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে উভয়পক্ষের ৪৫ জনকে আটক করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

আহতরা হলেন- পারভেজ শেখ (২০), মানিক শেখ (৪১), সাদ্দাম শেখ (৩৫), শাকিল খান (২৫), ফয়সাল শেখ (২০), আবু সাঈদ শেখ (৪০), সজীব শেখ (১৯), রনি শেখ (৪০), সোহেল সুলতান (২৫), আফ্রিদি শেখ (১৯), মোস্তফা শেখ (৪০), নুরুন্নবী (১৮), আমানুল্লাহসহ (২৫) আরও অনেকে।

গুরুতর আহতদের গোপালগঞ্জ ও কোটালীপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া কোটালীপাড়া থানার আহত এসআই সেলিম মাহমুদ কোটালীপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। ওই এসআইসহ কোটালীপাড়া থানার আরও ৩ কনস্টেবল আহত হয়েছেন বলে কোটালীপাড়া থানার এসআই মামুনুর রশীদ জানিয়েছেন।

মাঝবাড়ি গ্রামের কালাম দাড়িয়া ও বংকুরা গ্রামের হাসেম মুন্সি জানিয়েছেন, কোটালীপাড়া উপজেলার বংকুরা গ্রামের রিয়াজুলের কাছ থেকে মাঝবাড়ি গ্রামের ফারুক দাড়িয়া সুদে টাকা নেন । সেই টাকা সময়মত ফারুক সুদে আসলে পরিশোধ করতে গড়িমসি শুরু করেন। এতে পাওনাদার রিয়াজুল ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। সুদের টাকা লেনদেন নিয়ে দু’জনের মধ্যে আজ শুক্রবার সকালে বাকবিতণ্ডা হয়। এদিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মসজিদের মাইক থেকে গ্রামবাসীকে সংঘর্ষে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। এ আহ্বানের পর দুই গ্রামের লোকজন ঢাল-সড়কিসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। দফায়-দফায় উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ চলে। পুলিশ প্রথমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়। দুই ঘণ্টা পর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করে।

উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করায় ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

কোটালীপাড়া পাড়া থানার ওসি মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ২৫ রাউন্ড গুলি বর্ষণ ও উভয়পক্ষের ৪৫ জনকে আটক করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে জানিয়ে ওসি আরও বলেন, এলাকার পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কোন পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়নি। অভিযোগ পাওয়ামাত্র আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অভিযুক্ত রিয়াজুল ও ফারুক দাড়িয়ার ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে। এ কারণে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গোপালগঞ্জে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে ৩ বাসের ধাক্কা, পুলিশ কর্মকর্তাসহ নিহত ২
  • গোপালগঞ্জে ৬ যানবাহনের সংঘর্ষ, পুলিশ সদস্যসহ নিহত ২
  • রেললাইনে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন মুঠোফোনে, ট্রেনে কাটা পড়ে চা–শ্রমিকের মৃত্যু
  • গোপালগঞ্জে সুদের টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ২৫