মহিলা সমিতিতে ১৪ নাটক নিয়ে উৎসব শুরু
Published: 7th, February 2025 GMT
ঢাকার থিয়েটার চর্চায় গতি আনতে, দর্শককে থিয়েটারমুখী করতে এবং নাট্যদল ও নাট্যকর্মীদের উজ্জীবিত করার লক্ষ্য নিয়ে এক প্ল্যাটফর্মে এসেছে ঢাকা মহানগরীর ৭১টি নাট্যসংগঠন। গেল মাসে গঠিত এ প্ল্যাটফর্মের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ঢাকা মহানগর নাট্য পরিষদ’। এ পর্ষদের উদ্যোগে ফেব্রুয়ারি থেকে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন নাট্যমঞ্চে নাট্যোৎসব আয়োজনের কথা জানানো হয় সংগঠনটির পক্ষ থেকে। সে পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রথম পর্যায়ে ১৪ দিনব্যাপী আয়োজন করা হচ্ছে ‘ঢাকা মহানগর নাট্য উৎসব’।
আসছে ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে বাংলাদেশ মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে শুরু হবে এ উৎসব। এতে অংশ নেবে আরণ্যক, থিয়েটার, নাট্যকেন্দ্র, অনুস্বর, ঢাকা থিয়েটার, প্রাচ্যনাট, আগন্তুকসহ ঢাকার মঞ্চের এক ডজনের বেশি নাট্যদল। জানা গেছে, ঢাকা মহানগর নাট্যোৎসবের উদ্বোধনী দিনে প্রদর্শিত হবে থিয়েটারের প্রশংসিত প্রযোজনা ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’। মুক্তিযুদ্ধের সময় এক রাতে একটি গ্রামের নারী-পুরুষেরা এসেছেন মাতবরের কাছে। তাদের চোখে-মুখে উৎকণ্ঠা। গত রাতেও পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন মাতবরের সঙ্গে দেখা করেছেন জানিয়ে সবাইকে আশ্বস্ত করেছেন তিনি।
পাকিস্তানি বাহিনীর ওপর ভরসা রাখতে বলছেন উপস্থিত লোকজনকে। গ্রামবাসী সহজে আশ্বস্ত হতে পারেন না। সৈয়দ শামসুল হকের লেখা কালজয়ী নাটক ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’-এর পটভূমি এটি। উৎসবে ১৬ ফেব্রুয়ারি থাকছে লোক নাট্যদলের (বনানী) ‘কঞ্জুস’, ১৭ ফেব্রুয়ারি থিয়েটার আর্ট ইউনিটের ‘বলয়’, ১৮ ফেব্রুয়ারি নাট্যকেন্দ্রের ‘পুণ্যাহ’, ১৯ ফেব্রুয়ারি অনুস্বরের ‘হার্মাসিস ক্লিওপেট্রা’, ২০ ফেব্রুয়ারি ঢাকা থিয়েটার মঞ্চের ‘ঘরজামাই’, ২১ ফেব্রুয়ারি দেখা যাবে প্রাচ্যনাটের ‘কিনু কাহারের থেটার’।
এ ছাড়া ২২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা থিয়েটারের ‘একটি লৌকিক অথবা অলৌকিক স্টিমার’, ২৩ ফেব্রুয়ারি শৌখিন থিয়েটারের ‘অন্তরালের আয়না’, ২৪ ফেব্রুয়ারি নাট্যপালার ‘বাঘ’, ২৫ ফেব্রুয়ারি আরণ্যক নাট্যদলের ‘ময়ূর সিংহাসন’, ২৬ ফেব্রুয়ারি আগন্তুকের ‘অন্ধকারে মিথেন’, ২৭ ফেব্রুয়ারি পদাতিক নাট্য সংসদ টিএসসির প্রযোজনা ‘গুণজান বিবির পালা’ এবং উৎসবের শেষ দিন ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রদর্শিত হবে প্রাঙ্গণেমোর নাট্যদলের ‘শেষের কবিতা’।
আয়োজকেরা জানিয়েছেন, এ উৎসবের লক্ষ্য শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার তিনটি মিলনায়তন, মহিলা সমিতি মিলনায়তন, জহির রায়হান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রসহ ঢাকার মঞ্চগুলোকে থিয়েটারবান্ধব করে তোলা এবং দর্শকদের উপস্থিতি বাড়ানো। ফেব্রুয়ারিতে প্রথম পর্যায়ের এ উৎসবের পর ৭১টি নাট্যদল তাদের ৭১টি নাটক নিয়ে পর্যায়ক্রমে আরও পাঁচটি মিলনায়তনে এ উৎসবের আয়োজন করবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এ উৎসব উৎসব র পর য য়
এছাড়াও পড়ুন:
ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা
চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাহাড়ি প্রদেশ গুইঝৌতে প্রাচীনকাল থেকে ‘গেলাও’ জনগোষ্ঠীর বসবাস। ভিয়েতনামেও এই জনগোষ্ঠীর মানুষ বাস করেন। চীনে তাঁদের সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ ৭৭ হাজার।
কৃষিনির্ভর গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা আজও প্রাচীনকালের পুরোনো এক ঐতিহ্য আগলে রেখেছেন। বছরের নির্দিষ্ট দিনে তাঁরা গাছকে খাওয়ান, যা চীনা ভাষায় ‘ওয়েই শু’ রীতি নামে পরিচিত।
এই প্রাচীন রীতি মূলত একধরনের প্রার্থনা। স্থানীয় অধিবাসীদের বিশ্বাস, এতে প্রকৃতি তুষ্ট হয়, ফসল ভালো হয়, পরিবারে শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে। প্রতিবছর দুটি উৎসবের সময় এই অনুষ্ঠান পালন করা হয়—চীনা নববর্ষে, যা বসন্ত উৎসব নামে পরিচিত। আর গেলাও নববর্ষে, যা চান্দ্র পঞ্জিকার তৃতীয় মাসের তৃতীয় দিনে পালিত হয়।
অনুষ্ঠানের দিন সকালে আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসী পাহাড়ের ঢালে জড়ো হন। তাঁরা সঙ্গে করে চাল থেকে তৈরি মদ, শূকরের মাংস, মাছ ও লাল আঠালো চাল নিয়ে আসেন। পাহাড়ে পৌঁছে প্রথমে আতশবাজি পোড়ানো হয়। এতে করে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
এর মধ্যেই একটি পুরোনো ও শক্তিশালী গাছ বাছাই করা হয়। এরপর সবাই ধূপ জ্বালিয়ে নতজানু হয়ে প্রার্থনা করেন। সবশেষে মূল পর্ব ‘গাছকে খাওয়ানো’ শুরু হয়।
একজন কুঠার বা ছুরি দিয়ে গাছে তিনটি জায়গায় ছোট করে কেটে দেন। সেই ক্ষতস্থানে চাল, মাংস ও মদ ঢেলে দেওয়া হয়, যাতে গাছ তাঁদের দেওয়া ভোগ গ্রহণ করতে পারে। পরে ওই জায়গা লাল কাগজে মুড়ে দেওয়া হয়।
এ ছাড়া গাছের গোড়া ঘিরে আগাছা পরিষ্কার করা হয়, মাটি আলগা করে দেওয়া হয়। এতে নতুন জীবনের বার্তা মেলে বলে মনে করেন গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা।
যে গাছকে খাওয়ানো হয়, সেটি যদি ফলদ হয়, তাহলে ভোগ দানকারীরা একটি আশাব্যঞ্জক শ্লোক উচ্চারণ করেন। বলেন, ‘তোমায় চাল খাওয়াই, ফল দিয়ো গুচ্ছ গুচ্ছ; তোমায় মাংস খাওয়াই, ফল দিয়ো দলা দলা।’