ঢাকার থিয়েটার চর্চায় গতি আনতে, দর্শককে থিয়েটারমুখী করতে এবং নাট্যদল ও নাট্যকর্মীদের উজ্জীবিত করার লক্ষ্য নিয়ে এক প্ল্যাটফর্মে এসেছে ঢাকা মহানগরীর ৭১টি নাট্যসংগঠন। গেল মাসে গঠিত এ প্ল্যাটফর্মের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ঢাকা মহানগর নাট্য পরিষদ’। এ পর্ষদের উদ্যোগে ফেব্রুয়ারি থেকে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন নাট্যমঞ্চে নাট্যোৎসব আয়োজনের কথা জানানো হয় সংগঠনটির পক্ষ থেকে। সে পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রথম পর্যায়ে ১৪ দিনব্যাপী আয়োজন করা হচ্ছে ‘ঢাকা মহানগর নাট্য উৎসব’।

আসছে ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে বাংলাদেশ মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে শুরু হবে এ উৎসব। এতে অংশ নেবে আরণ্যক, থিয়েটার, নাট্যকেন্দ্র, অনুস্বর, ঢাকা থিয়েটার, প্রাচ্যনাট, আগন্তুকসহ ঢাকার মঞ্চের এক ডজনের বেশি নাট্যদল। জানা গেছে, ঢাকা মহানগর নাট্যোৎসবের উদ্বোধনী দিনে প্রদর্শিত হবে থিয়েটারের প্রশংসিত প্রযোজনা ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’। মুক্তিযুদ্ধের সময় এক রাতে একটি গ্রামের নারী-পুরুষেরা এসেছেন মাতবরের কাছে। তাদের চোখে-মুখে উৎকণ্ঠা। গত রাতেও পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন মাতবরের সঙ্গে দেখা করেছেন জানিয়ে সবাইকে আশ্বস্ত করেছেন তিনি।

পাকিস্তানি বাহিনীর ওপর ভরসা রাখতে বলছেন উপস্থিত লোকজনকে। গ্রামবাসী সহজে আশ্বস্ত হতে পারেন না। সৈয়দ শামসুল হকের লেখা কালজয়ী নাটক ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’-এর পটভূমি এটি। উৎসবে ১৬ ফেব্রুয়ারি থাকছে লোক নাট্যদলের (বনানী) ‘কঞ্জুস’, ১৭ ফেব্রুয়ারি থিয়েটার আর্ট ইউনিটের ‘বলয়’, ১৮ ফেব্রুয়ারি নাট্যকেন্দ্রের ‘পুণ্যাহ’, ১৯ ফেব্রুয়ারি অনুস্বরের ‘হার্মাসিস ক্লিওপেট্রা’, ২০ ফেব্রুয়ারি ঢাকা থিয়েটার মঞ্চের ‘ঘরজামাই’, ২১ ফেব্রুয়ারি দেখা যাবে প্রাচ্যনাটের ‘কিনু কাহারের থেটার’।

এ ছাড়া ২২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা থিয়েটারের ‘একটি লৌকিক অথবা অলৌকিক স্টিমার’, ২৩ ফেব্রুয়ারি শৌখিন থিয়েটারের ‘অন্তরালের আয়না’, ২৪ ফেব্রুয়ারি নাট্যপালার ‘বাঘ’, ২৫ ফেব্রুয়ারি আরণ্যক নাট্যদলের ‘ময়ূর সিংহাসন’, ২৬ ফেব্রুয়ারি আগন্তুকের ‘অন্ধকারে মিথেন’, ২৭ ফেব্রুয়ারি পদাতিক নাট্য সংসদ টিএসসির প্রযোজনা ‘গুণজান বিবির পালা’ এবং উৎসবের শেষ দিন ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রদর্শিত হবে প্রাঙ্গণেমোর নাট্যদলের ‘শেষের কবিতা’।

আয়োজকেরা জানিয়েছেন, এ উৎসবের লক্ষ্য শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার তিনটি মিলনায়তন, মহিলা সমিতি মিলনায়তন, জহির রায়হান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রসহ ঢাকার মঞ্চগুলোকে থিয়েটারবান্ধব করে তোলা এবং দর্শকদের উপস্থিতি বাড়ানো। ফেব্রুয়ারিতে প্রথম পর্যায়ের এ উৎসবের পর ৭১টি নাট্যদল তাদের ৭১টি নাটক নিয়ে পর্যায়ক্রমে আরও পাঁচটি মিলনায়তনে এ উৎসবের আয়োজন করবে।


 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এ উৎসব উৎসব র পর য য়

এছাড়াও পড়ুন:

তুলশীগঙ্গার তীরে সন্ন্যাসতলীর শতবর্ষী ঘুড়ির মেলা

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নের মহব্বতপুর গ্রাম ঘেঁষে তুলশীগঙ্গা নদীর অদূরে সন্ন্যাসতলীর বটতলা। জায়গাটিতে প্রায় একশ বছর আগে থেকে বাংলা জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ শুক্রবার আয়োজন হয় ঘুড়ির মেলা। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। অন্তত ৫০ গ্রামের হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে শুক্রবার সন্ন্যাসতলী ঘুড়ি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

মেলার দিনক্ষণ মনে রেখে সময়মতো দোকানিদের পাশাপাশি দর্শনার্থীরা ভিড় জমান নিভৃত পল্লীতে। আগে মেলার দিন বৃষ্টি হওয়া যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু এবার ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটেছে। প্রচণ্ড গরম ও তাপপ্রবাহের মধ্যেই চলে এ আয়োজন। বৈরী পরিবেশের কারণে উৎসবের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দারা বলছেন, সন্ন্যাসতলীর এ ঘুড়ি উৎসব শুরুর দিন বিকেলে বটতলায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় সন্ন্যাস পূজা পালন করেন। তাদের এ পূজা-অর্চনা ঘিরেই মূলত এ মেলার উৎপত্তি। তবে শুরুর কথা কেউ বলতে পারেননি। প্রবীণরা শুধু জানেন, একশ বছরের বেশি সময় ধরে তারা এ মেলার আয়োজন দেখে আসছেন।

মেলার নিজস্ব জায়গা না থাকলেও এর ব্যাপ্তি প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। প্রচণ্ড গরমের মধ্যেই এক দিনের এ মেলা ঘিরেই জেলার জামালগঞ্জ চারমাথা থেকে ঐতিহাসিক আছরাঙ্গাদীঘি পর্যন্ত রকমারি পণ্যের দোকান বসে। এখান থেকে সংসারের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন আসবাব থেকে শুরু করে ছোট মাছ ধরার বাঁশের তৈরি পণ্য খলসানি, টোপা, ডালা, চালুন কিনে নেন অনেকে।

সুতার তৈরি তৌরা জাল, গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত দ্রব্যাদি, বিভিন্ন ধরনের খেলনা, মিষ্টান্ন, প্রসাধনী, মাটির তৈজসপত্রসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি হয়। শিশুদের বিনোদনের জন্য ছিল নাগরদোলার ব্যবস্থাও। আর মেলার বড় আকর্ষণ ঘুড়ি ওড়ানো ও বিক্রি। পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা এসেছিলেন ঘুড়ি বিক্রি করতে।

প্রচণ্ড গরমের পাশাপাশি তেমন হাওয়া-বাতাস না থাকায় এবার ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা সেভাবে জমে ওঠেনি। তবে ঘুড়ি বেচাকেনা ও শিশু-কিশোরদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। এ উপলক্ষে আসা হাজার হাজার দর্শনার্থীর নিরাপত্তার জন্য মেলায় সার্বক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের টহল ছিল।

আদমদীঘির শিববাটি গ্রামের ঘুড়ি ব্যবসায়ী সালাম হোসেনের ভাষ্য, সন্ন্যাসতলীর মেলা বড় হওয়ায় তিনি এসেছেন ঘুড়ি বিক্রির জন্য। মেলায় প্রত্যাশা অনুযায়ী ঘুড়ি বিক্রি করতে পেরে তিনি খুশি। জয়পুরহাটের পার্বতীপুর এলাকার ঘুড়ি ব্যবসায়ী মফিজ উদ্দিন ও মজনু সরদার বলেন, পূর্বপুরুষের আমল থেকে এ মেলার কথা শুনে আসছেন তারা।

মেলা উদযাপন ও পূজা কমিটির সদস্য মহব্বতপুর গ্রামের মন্টু মণ্ডল বলেন, মেলাটি হিন্দু সম্প্রদায়ের হলেও এটি আসলে সব ধর্মালম্বীর মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। 

মামুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মিলন হোসেনের ভাষ্য, এক দিনের আয়োজনে যে এত লোকের সমাগম হতে পারে, তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। মেলায় যেন অনৈতিক কর্মকাণ্ড না হয়, সে ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ক্ষেতলাল থানার ওসি মোহাম্মদ ফরিদ হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং মেলায় আসা দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ প্রশাসন সতর্ক আছে। মেলায় অনৈতিক আচরণ লক্ষ্য করা গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বকুলতলায় বৃষ্টির সুর
  • কলকাতায় নতুন সিনেমার শুটিং শুরু করলেন জয়া
  • বর্ষা উৎসবে বন ও পরিবেশ ধ্বংসের প্রতিবাদ, পান্থকুঞ্জ পার্ক রক্ষাসহ কয়েকটি দাবি
  • নাচ-গান-আবৃত্তিতে চারুকলায় বর্ষাবরণ
  • মেঘ-রোদের লুকোচুরির সকালে নাচে-গানে বর্ষাবরণ 
  • মেঘ-রোদের লুকোচুরি সকালে নাচে-গানে বর্ষাবরণ 
  • আষাঢ়ের প্রথম দিন আজ
  • কলিজা ঠান্ডা করে দেওয়া ছবি ‘উৎসব’
  • তুলশীগঙ্গার তীরে সন্ন্যাসতলীর শতবর্ষী ঘুড়ির মেলা
  • ভালোবাসার ফ্রেমে মেহজাবীন-রাজীব, পেছনে আইফেল টাওয়ার