অর্থ পাচারকে বিচারিক সুরক্ষা দেওয়া হয়েছিল
Published: 9th, February 2025 GMT
গত সাড়ে ১৫ বছরে দেশে একটি চৌর্যবৃত্তির অর্থনীতি দাঁড় করানো হয়েছিল। রাষ্ট্রের এমন কোনো অঙ্গ ছিল না, যা শেখ হাসিনা এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করেননি। আর্থিক খাত থেকে শুরু করে বিচারালয় পর্যন্ত তিনি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে রাষ্ট্রকে এক ব্যক্তির তালুকে পরিণত করেছিলেন। ‘প্রাইভেটাইজেশন অব স্টেট’– এ ধারণা বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করা হয়েছে।
শনিবার রাজধানীর এফডিসিতে আওয়ামী শাসনামলে ব্যাপক অর্থ পাচার নিয়ে আয়োজিত ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড.
ড. মাহবুব উল্লাহ বলেন, যুবলীগ-ছাত্রলীগকে বিচারক নিয়োগ দিয়ে পুরো বিচার ব্যবস্থাকে দলীয়করণ করা হয়েছিল। রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগপ্রাপ্ত বিচারপতি এস আলম গ্রুপের অর্থ পাচারকে অনৈতিকভাবে বিচারিক সুরক্ষা দিয়েছিল। শেখ রেহানার মেয়ে ব্রিটিশ সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ পাচারের যে অভিযোগ এসেছে, তা বাংলাদেশ ও ব্রিটিশ সরকারকে যথাযথ গুরুত্বসহকারে তদন্ত করতে হবে।
‘রাজনীতিবিদদের জন্যই আওয়ামী শাসনামলে ব্যাপক অর্থ পাচার সম্ভব হয়েছে’ শীর্ষক ছায়া সংসদে ঢাকার বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের বিতার্কিকদের পরাজিত করে ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজের বিতার্কিকরা বিজয়ী হন।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, গত দেড় দশকে পতিত আওয়ামী সরকারের আমলে টাকা পাচারের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছিল বাংলাদেশ। দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ, আমলা, ব্যবসায়ীসহ সরকারের সুবিধাভোগীরা অর্থ পাচার করেছেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত ও নিপীড়ন বন্ধের দাবি সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের
গণতান্ত্রিক শ্রম আইন, শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষা, ন্যায্য মজুরি, অবাধ ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার নিশ্চিত ও শ্রমিক নিপীড়ন বন্ধের দাবিতে সমাবেশ ও মিছিল করেছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট। একই সঙ্গে তারা বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেপ্তারকৃত শ্রমিকনেতাদের মুক্তির দাবিও জানায়।
মে দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়।
সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন দলটির সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জুলফিকার আলী, আইনবিষয়ক সম্পাদক বিমল চন্দ্র সাহা, নির্বাহী সদস্য আফজাল হোসেন, নির্বাহী সদস্য ও বোম্বে সুইটস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রতন মিয়া প্রমুখ।
সমাবেশে নেতারা বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন করার চেষ্টার অপরাধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দিয়ে গার্মেন্টস উইংয়ের সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, রবিনটেক্স শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সীমা আক্তারসহ ৭ জনকে নারায়ণগঞ্জ কারাগারে এবং রিকশা শ্রমিকদের রুটি–রুজির আন্দোলনে সংহতি জানানোর অপরাধে চট্টগ্রামে রিকশা সংগ্রাম পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি আল কাদেরি জয়, মিরাজ উদ্দিন ও রোকন উদ্দিনকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। অথচ সরকার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, তারা শ্রমক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক শ্রমমান বাস্তবায়ন করবে।
এ সময় নেতারা শ্রম সম্পর্ক উন্নয়নে সরকারের প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত হচ্ছে কি না, তা জানতে চান। তাঁরা বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করার অধিকার চর্চায় বাধা দেওয়া বন্ধ না হলে, শ্রমিকের ওপর নিপীড়ন বন্ধ না হলে অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র পরিচালনা বা বৈষম্য নিরসনের প্রতিশ্রুতি শ্রমজীবী মানুষের কাছে প্রতারণা হিসেবে পরিগণিত হবে।
মে দিবসের ইতিহাস তুলে ধরে নেতারা আরও বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও দেশের শ্রমজীবী মানুষের ৮৫ শতাংশ শ্রম আইনের সুরক্ষার বাইরে। শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের শ্রম খাতের দুর্দশার যে ভয়ানক চিত্র ফুটে উঠেছে, তা প্রমাণ করে স্বাধীনতা–পরবতী প্রতিটি সরকার শ্রম শোষণকে তীব্র থেকে তীব্রতর করার ক্ষেত্র তৈরি করেছে।
এ সময় গ্রেপ্তার সব শ্রমিকের মুক্তি, শ্রমিক নিপীড়ন বন্ধ এবং মে দিবসের প্রকৃত চেতনায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের নেতারা।