সরকারি সংস্থা টিসিবির সাশ্রয়ী দামের পণ্য পেতে ভোক্তা সাধারণকে স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড সংক্রান্ত সব বিষয়ে নিজ নিজ ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয় এবং থানা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়েছে টিসিবি। গতকাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি।
এতে বলা হয়েছে, দেশব্যাপী নিম্ন আয়ের পরিবারের মাঝে স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড প্রদান, সচলকরণ ও পণ্য বিক্রি কার্যক্রম মনিটরিং চলছে। ইতোমধ্যে ৫৭ লাখ স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড তৈরি করে জেলা প্রশাসক ও সিটি করপোরেশন কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া ৬ লাখ কার্ড প্রিন্টিংয়ের শেষ পর্যায়ে রয়েছে; যা চলতি মাসেই পাঠানো হবে।  কার্ড তৈরির জন্য ইতোমধ্যে ১৫ লাখ ডেটা এনআইডি ইন্টিগ্রেশন হয়েছে। সরকারের তরফ থেকে এসব কার্ড বিনামূল্যে ভোক্তাদের দেওয়া হচ্ছে। 

টিসিবি জানিয়েছে, কার্ড তৈরির জন্য উপকারভোগী বাছাই, ডেটা প্রদান, ভোক্তার কাছে কার্ড পৌঁছানো, কার্ড সচল করা এবং পণ্য বিক্রি মনিটরিংয়ের দায়িত্ব স্থানীয় প্রশাসন ও সিটি করপোরেশনের। টিসিবির দায়িত্ব আমদানি ও স্থানীয় ক্রয়ের মাধ্যমে পণ্য সংগ্রহ করে ডিলারদের মাধ্যমে  পৌঁছে দেওয়া। ইতোমধ্যে স্মার্ট কার্ডধারীদের জন্য ডিলারদের পণ্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে টিসিবির মুখপাত্র হুমায়ুন কবির সমকালকে বলেন, অনেকেই টিসিবিতে আসছেন কার্ডের জন্য। কিন্তু কার্ড বিতরণের দায়িত্ব ওয়ার্ড কার্যালয় বা ইউএনও অফিসের। ক্রেতাদের এসব অফিসেই যোগাযোগ করে কার্ড নিতে হবে। 

টিসিবি সূত্রে জানা গেছে, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং এর বাইরে  গ্রাম পর্যায়ে ইউএনও অফিস থেকে স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড বিতরণ করা হয়। কিন্তু ভোক্তারা পণ্য কেনার কার্ড নেওয়ার জন্য প্রতিনিয়ত টিসিবিতে যোগাযোগ করছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভোক্তাদের এ পরামর্শ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। 

গত সরকারের আমলে দেশব্যাপী এক কোটি নিম্ন আয়ের পরিবারের মাঝে স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড বিতরণ করা হয়। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন জানিয়েছেন, এসব কার্ডের মধ্যে ৪৩ লাখই ভুয়া। বাকি ৫৭ লাখ কার্ড যাচাই-বাছাই করলে আরও অন্তত ২৪ থেকে ২৫ লাখ ভুয়া কার্ড পাওয়া যাবে। 
টিসিবির কর্মকর্তারা জানান, যারা সচ্ছল; কিন্তু টিসিবির কার্ডের তালিকায় ছিলেন, তাদের কার্ড বাতিল করা হয়েছে। একই পরিবারে একাধিক কার্ডধারী থাকলে, তাদেরও বাদ দেওয়া হয়েছে। আবার কার্ডে যাদের নাম-ঠিকানায় ভুল ছিল, নতুন স্মার্ট কার্ডের তালিকা থেকে তারাও বাদ পড়েছেন। পুরোনো কাগুজে  কার্ডগুলোও বাতিল করা হয়েছে। নতুন স্মার্ট কার্ডেই টিসিবির বিপণন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

আ.লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করে ইউএনওকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভার হরিতলা মোড়ে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে ইউএনওর অপসারণের দাবি জানানো হয়।

এলাকার সচেতন নাগরিক, ব্যবসায়ী মহল, অভিভাবক, ছাত্রছাত্রী, কর্মচারী-শিক্ষকমণ্ডলীর ব্যানারে এ মানববন্ধন করা হয়। এতে এলাকাবাসী ছাড়া তাহেরপুর কলেজের অধিকাংশ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধন থেকে কলেজের সম্পত্তি অন্যত্র ইজারা দেওয়ার চেষ্টার প্রতিবাদ জানানো হয়।

তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে মানববন্ধন করা হয়। পৌরসভার নির্মিত দোকানঘর থেকে তাহেরপুর কলেজ কর্তৃপক্ষের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেওয়ায় এ কর্মসূচি পালন করা হয় বলে অভিযোগ। আওয়ামী লীগের নেতার দাবি, তিনি দলীয় পরিচয়ে নয়, কলেজশিক্ষক হিসেবে মানববন্ধনে যোগ দিয়েছেন। তবে ব্যানারে ফ্যাসিবাদ শব্দটি প্রথমে দেখেননি। পরে দেখেছেন।

মানববন্ধনে তাহেরপুর কলেজের শিক্ষক রইচ আহমেদ, সুরাইয়া আক্তার, তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ইসমাইল হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন। বক্তারা বাগমারার ইউএনওকে ফ্যাসিবাদের দোসর ও চব্বিশের চেতনাবিরোধী অভিযোগ তুলে তাঁদের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেওয়ার নিন্দা জানান।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তাহেরপুর কলেজ–সংলগ্ন স্থানে পৌর কর্তৃপক্ষ দোকানঘর নির্মাণ করেছে। পৌরসভার পক্ষে নিয়মিত ভাড়া আদায় করা হয় ওই প্রতিষ্ঠান থেকে। ৫ আগস্টের পর থেকে কলেজের পক্ষ থেকে ৪১টি দোকানঘর নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সেগুলো থেকে ভাড়া আদায় করা হয়।

পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে বাগমারার ইউএনও দোকানঘর থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেন। দোকানঘরগুলো পৌরসভার হওয়ায় তারাই সেখান থেকে ভাড়া আদায় করবে বলে জানানো হয়। সেখান থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ আর ভাডা আদায় করবে না জানিয়ে ২২ এপ্রিল পৌরসভার প্রশাসককে লিখিতভাবে জানান কলেজের অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম। এর পর থেকে কর্তৃপক্ষ ইউএনওর ওপর ক্ষুব্ধ হয়।

তাহেরপুর কলেজের সহকারী অধ্যাপক সুরাইয়া আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, কলেজের জায়গায় তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক মেয়ব ও সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ দোকানঘর নির্মাণ করে মোটা অঙ্কের টাকায় ভাড়া দেন। ৫ আগস্টের পর তাঁরা (কলেজ কর্তৃপক্ষ) সেগুলো নিয়ন্ত্রণে নেন। তবে ২২ এপ্রিল ইউএনও সাদা কাগজে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছ থেকে ভাড়া আদায় বিষয়ে একটি লিখিত নিয়েছেন। এর প্রতিবাদে মূলত তাঁদের এই কর্মসূচি।

পৌরসভার দোকানঘর থেকে কেন পৌরসভা ভাড়া আদায় করবে না জানতে চাইলে সুরাইয়া আক্তার বলেন, ‘জায়গাগুলো কলেজের ছিল।’ ব্যানারে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখা হলেও কেন আওয়ামী লীগের নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করলেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কলেজের স্বার্থে আমরা এক।’

জানতে চাইলে ইউএনও মাহাবুবুল ইসলাম বলেন, দোকানগুলো তাহেরপুর পৌরসভার। সেগুলো থেকে ভাড়া আদায় করে পৌরসভার কোষাগারে জমা করা হয়। তিনি প্রশাসক হিসেবে ভাড়া আদায়ের উদ্যোগ নিয়েছেন। কলেজের অধ্যক্ষ নিজেই জানিয়েছেন, এখন থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ ভাড়া আদায় করবে না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রাতে ‘টর্চলাইট জ্বালিয়ে’ দুই পক্ষের সংঘর্ষ, ইউএনও-ওসিসহ আহত ৩০
  • পড়াশোনায় ফিরছেন দিনাজপুরের ‘ইংলিশম্যান’ হৃদয়, শেখাবেন ইংরেজি
  • আ.লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করে ইউএনওকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা
  • নারায়ণগঞ্জে ৩০ স্কুলে চালু হলো ‌‘মিড ডে মিল’
  • গাজীপুরে ১০ মাটি খেকোকে কারাদণ্ড
  • পাঠাগার থেকে লুট হওয়া বই ফেরত পেলো কর্তৃপক্ষ
  • দমদমিয়া আলোর পাঠশালায় গিয়ে শিক্ষার্থীদের খোঁজখবর নিলেন ইউএনও
  • রাইজিংবিডিতে সংবাদ প্রকাশ, লুট হওয়া বই ফেরত পেল পাঠাগার কর্তৃপক্ষ